বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

জাতীয় সংসদ পুতুল নাচের নাট্যশালা

fileআমার সুরমা ডটকম : দশম জাতীয় সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্টশালা’র সঙ্গে তুলনা করে ‘নিয়ম রক্ষার্থে’ সংসদ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবি’র (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদের অধিবেশন যখন চলে আমার কাছে সংসদকে পুতুল নাচের নাট্যশালার মতো মনে হয়। বিতর্কিত বিরোধী দল অনুগত পুতুলের মতো আচরণ করছে। ক্ষমতাসীন দলের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ভুবনে পরিণত হয়েছে। সংসদীয় আচরণ থেকে এ সংসদের ব্যাপক বিচ্যুতি হয়েছে। একটি দল বা জোট যাদের সংসদে উপস্থিত নেই; তাদের নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা-বিতর্ক-গালিগালাজ হয়েছে। প্রতিপক্ষের সমালোচনা আগের সংসদের (নবম) চেয়ে বেড়েছে ৯ গুণ; আর তোয়াজ বেড়েছে ১২ গুণ। মূলত ক্ষমতাসীন দলের একচ্ছত্র ভুবন এই সংসদ নিয়ম রক্ষার্থেই চলছে। গতকাল দশম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশনের কার্যক্রম ওপর টিআইবি’র পর্যাবেক্ষণ ও বিশ্লেষণভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন ‘পার্লামেন্টওয়াচ’ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি দশম জাতীয় সংসদের কার্যক্রমের ওপর গবেষণায়প্রাপ্ত ফলাফল তুলে ধরতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংস্থার ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরে মূল প্রতিবেদনের সারাংশ উপস্থাপন করেন টিআইবি’র গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুলিয়েট রোজেটি, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফাতেমা আফরোজ এবং মোরশেদা আক্তার। এ সময় অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান। প্রতিবদনটি সংস্থার ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ ধারাবাহিকের ১২তম ও দশম জাতীয় সংসদের ওপর দ্বিতীয় প্রতিবেদন। ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে ২০১৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত সময়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বর্তমান সংসদে সংসদীয় আচরণ সার্বিকভাবে হতাশাব্যঞ্জক। দশম সংসদে আগের তুলনায় সরকার দলীয়দের মধ্যকার পারস্পরিক ‘প্রসংশার’ পরিমাণ বেড়েছে ১২ গুণ। সেইসঙ্গে রাজনৈতিক এক জোটের সমালোচনা বেড়েছে ৯ গুণ। অধিবেশন চলার সময় স্পিকারেরও দায়িত্বেও ঘাটতি দেখা গেছে। বিধি অনুসারে সংসদীয় কমিটিগুলোর মাসে একটি করে বৈঠক করার কথা থাকলেও গত এক বছরে সংসদীয় কমিটির বৈঠক হয়েছে মাত্র চারটি। এক প্রশ্নের জবাবে সংসদের বিরোধী দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের সংসদের বর্তমান ‘কথিত বিরোধী দল’ বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে না। তাদেরকে কথিত বিরোধী দল বলছি এ কারণে যে, তাদের দায়িত্ব ও অবস্থান এখনো স্পষ্ট নয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দশম সংসদ নির্বাচন আসলেই বিতর্কিত। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া কার্যত নির্বাচন হয় না। ফলে ওই (৫ জানুয়ারী ২০১৪) নির্বাচনকে বিতর্কিতই বলতে হবে। যখন তারা (সরকার) বিতর্কের ঊর্ধ্বে নির্বাচন দিতে পারবে তখন আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন বলবো। বিরোধী দলের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ এবং সরকারী দলের লেজুড়বৃত্তিই করছে এমন মন্তব্য তিনি বলেন, লেজুড়বৃত্তির কারণে বিরোধী দলের ভূমিকা মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, অধিবেশনে আইন প্রণয়নে মোট কার্যদিবসের মাত্র ৬ শতাংশ সময় ব্যয়িত হয়েছে; যেখানে মাত্র ২৮ জন সংসদ সদস্য আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। বর্তমান সংসদ সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রতিষ্ঠানিক ফোরামে পরিণত হয়েছে; অন্যদিকে কথিত বিরোধী দলের লেজুড়বৃত্তির সংস্কৃতি প্রকট আকার ধারণ করেছে।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে সংসদে অপ্রাসঙ্গিক সমালোচনা, অশালীন ভাষার প্রাধান্য; অসংসদীয় আচরণ ও ভাষার ব্যবহার বন্ধে স্পিকারের শক্তিশালী ভূমিকার অনুপস্থিতি; বিধান থাকলেও আন্তর্জাতিক চুক্তি বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত না হওয়া; আইন প্রণয়ন; প্রশ্নোত্তর ও জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের আলোচনায় সদস্যদের কম অংশগ্রহণ; কমিটির সদস্যদের ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতাসহ স্বার্থের দ্বন্দ্ব; সংসদীয় কার্যক্রমে তথ্যের উন্মুক্ততার ঘাটতি ইত্যাদি তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, গবেষণা এ প্রতিবেদনটিতে জুন ২০১৪ থেকে আগস্ট ২০১৫ পর্যন্ত (দশম সংসদের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশন) পরিমাণবাচক এবং গুণবাচক তথ্য সংগৃহীত হয়। প্রত্যক্ষ তথ্যের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে সংসদ টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি প্রচারিত সংসদ কার্যক্রম এবং টিআইবি’র গবেষণা দলের সদস্যদের অধিবেশন সরাসরি পর্যবেক্ষণ। এছাড়া পরোক্ষ তথ্যের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় সংসদ থেকে প্রকাশিত বুলেটিন, কমিটি প্রতিবেদন, সরকারি গেজেট, প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন, বই, প্রবন্ধ ও সংবাদপত্রের তথ্য।প্রতিবেদনে জানানা হয়, দশম সংসদের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশনে সংসদ নেতার উপস্থিতি ছিল মোট কার্যদিবসের ৮৩% এবং বিরোধী দলীয় নেতার উপস্থিতি ছিল ৫৭%। দশম সংসদে অধিবেশনের গড় বৈঠককাল, আইন পাসের ক্ষেত্রে বিল প্রতি ব্যয়িত গড় সময় ও প্রতি কার্যদিবসে সদস্যদের গড় উপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি এবং কার্যদিবসের গড় কোরাম সংকট তুলনামূলকভাবে হ্রাস পাওয়ার মতো কতিপয় ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। আবার সংসদের প্রত্যাশিত কার্যকারিতা অনেক ক্ষেত্রেই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর থেকে কথিত ‘প্রধান বিরোধী দল’ সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ভূমিকার ঘাটতি এবং অসংসদীয় আচরণ ও ভাষার ব্যবহার বন্ধে স্পিকারের কার্যকর ভূমিকার অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা য়ায়। সরকারের কার্যক্রমের প্রশংসা, বিভিন্ন কাজের পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান ও অনুরোধ ব্যতীত জোরালো সমালোচনা করে বিরোধী দলকে প্রত্যাশিত অবস্থান গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এছাড়া সংসদের বাইরের রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রধান বিরোধী দলকে (বিএনপিকে বোঝানো হয়েছে) অযাচিতভাবে সম্মিলিত সুরে আক্রমণাত্মক সমালোচনায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষদের স্তুতি করা হয়। শুধু তাই নয়, সংসদে যারা স্বতন্ত্র সদস্য তাদের ৬৩% জন সরকারি জোটের প্রধান দলের সাংগঠনিক পদে বহাল রয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়, দশম সংসদের প্রথম অধিবেশনেই ৫০টি সংসদীয় কমিটি গঠিত হলেও বিরোধী দলের মাত্র একজন সদস্যকে কমিটির সভাপতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ কমিটিগুলোতে সদস্যদের সার্বিক গড় উপস্থিতি ছিল ৫৬%। কমিটিতে অনেক সদস্যের কমিটি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। কমিটিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পদাধিকার বলে সদস্য হওয়ার কারণে এবং কোনো কোনো কমিটিতে পূর্বতন মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। অষ্টম, নবম ও দশম সংসদের দ্বিতীয়-ষষ্ঠ অধিবেশনের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিজ দল ও সরকার দলের প্রশংসা হয়েছে ৭ হাজার ৫শ’ বার। আর সংসদের বাইরের রাজনৈতিক জোটের (বিএনপি-জামায়াত) সমালোচনা হয়েছে ৭ হাজার ২শ’ ৬৮ বার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দশম সংসদের ২য় থেকে ৬ষ্ঠ অধিবেশনে দৈনিক গড়ে ২৬ মিনিট হিসেবে মোট কোরাম সংকট হয়েছে ৪৮ ঘণ্টা ৪১ মিনিট। এতে অর্থের অপচয় হয়েছে প্রায় ৩২ কোটি ৪২ লাখ ৩১ হাজার টাকা। অধিবেশনে আইন প্রণয়নে মোট অধিবেশনের সময়ের মাত্র ৬% ব্যয়িত হয়েছে। বিভিন্ন বিলে সংসদ সদস্যদের জনমত যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাব থাকলেও তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। ‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধনী) আইন, ২০১৪’ পাসের ক্ষেত্রে প্রধানবিরোধী দল এবং অন্যান্য বিরোধী সদস্যরা জনমত যাচাই-বাছাই এর নোটিশ দিলেও বিভক্তি ভোটের সময় নিজেদের নোটিসের বিপক্ষে ভোট দেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদ সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব ও জবাবদিহিতা কার্যক্রমের আওতায় কার্যপ্রণালী বিধি ৭১-ক বিধিতে ৪৩৯টি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিসের ওপর আলোচনা করা হয়। ৭১ বিধিতে ৮২টি নোটিশ গৃহীত হয় (৫৫টি সরকারী দলের, ১৮টি বিরোধী দলের এবং ৯টি অন্যান্য সদস্যের)।প্রতিবেদনে সংসদীয় গণতন্ত্র সুদৃঢ় করা, সংসদকে কার্যকর করা ও সর্বোপরি সংসদকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সদস্যদের উপস্থিতি, সংসদে সদস্যদের আচরণ ও অংশগ্রহণ, তথ্য প্রকাশ, সংসদীয় কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, সংসদীয় কমিটি কার্যকর করাসহ মোট ১২ দফা সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। এগুলো মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- অধিবেশনে অসংসদীয় আচরণ এবং ভাষার ব্যবহার বন্ধে স্পিকারকে অধিকতর শক্তিশালী ভূমিকা পালন করা; সরকার এবং বিরোধী উভয়পক্ষকে অসংসদীয় আচরণ ও ভাষা পরিহার করা; সংসদে কথিত বিরোধী দলকে (জাতীয় পার্টি) বিতর্কিত অবস্থান পরিহার করে প্রকৃত ভূমিকা পালন করা; আইন প্রণয়ন কার্যক্রমে সদস্যদের অধিকতর অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করা; প্রশ্নোত্তর ও জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশ পর্বে অধিক সময় বরাদ্দ এবং সদস্যদের অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি; অধিবেশনভিত্তিক সর্বোচ্চ উপস্থিতির জন্য স্বীকৃতি প্রদানের চর্চা পুনর্বহাল করতে হবে। এছাড়াও অধিবেশনে সর্বনিম্ন উপস্থিত সদস্যদের নাম প্রকাশ করা; আইন প্রণয়নের বিভিন্ন পর্যায়ে জনগণের অধিকতর অংশগ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ; জনমত যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাব বাতিল করার ধারাবাহিকতা থেকে বের হয়ে এসে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জনমত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রেরণ করা। এক্ষেত্রে সংসদের ওয়েবসাইট, সংসদ টিভি, বেসরকারী সংস্থা কিংবা সংবাদপত্রের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। এছাড়াও অপরাপর সুপারিশসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল জনগণের সাথে সংসদের সরাসরি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য পিটিশন কমিটিকে কার্যকর করা; আন্তর্জাতিক চুক্তিসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সকল বিষয়ে সংসদে আলোচনা করার বিধান কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া; কমিটির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বার্থের দ্বন্দ্ব সম্পর্কিত তথ্য পুরোপুরিভাবে যাচাই করা এবং কোনো সদস্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির পর কমিটি-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক স্বার্থ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া গেলে প্রমাণ সাপেক্ষে ওই সদস্যকে কমিটি থেকে বাদ দেয়ার বিধান প্রণয়ন এবং সংসদীয় কমিটির সুপারিশসহ কার্যবিবরণী জনগণ তথা সরকারী ও বেসরকারী রেডিও, টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রসহ সকল গণমাধ্যমে সহজলভ্য করা। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: