শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪১ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের: সুনামগঞ্জে রৌয়া, ফাটাকুড়ি, গোয়াচূড়া, হুরুয়া বিল জলমহাল লুটপাট

জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের: সুনামগঞ্জে রৌয়া, ফাটাকুড়ি, গোয়াচূড়া, হুরুয়া বিল জলমহাল লুটপাট

amarsurma.com

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, স্টাফ রিপোর্টার সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাাপাড়া ইউনিয়নের রৌয়া, ফাটাকুড়ি, গোয়াচূড়া, হুরুয়া বিল জলমহাল স্থানীয় প্রশাসন দখলনামা না দেয়ায় লুটপাট করেছে স্থানীয় কিছু দুস্কৃতিকারীরা। ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির পক্ষে ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে শাপলা বাদে সাদকপুর-ডুপিকোনা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি কুমুদ বিশ^াস। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন জলমহালের ইজারাদার। অভিযোগে উল্লেখ্য, রৌয়া, ফাটাকুড়ি, গোয়াচূড়া, হুরুয়া বিল জলমহাল প্রয়োজনীয় চুক্তিপত্র সম্পাদন ও দখলনামা প্রদান না করায় এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে তপশীল বর্ণিত জলমহালের তীরবর্তী দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক ইজারাদারের পাইল জলমহালের ফলেয়া মৎস্য লুণ্ঠিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থতার কারণে জলমহালের ইজারা মেয়াদ ১৪২৫ বাংলা হতে ১৪৩১ সন পর্যন্ত বর্ধিত করার নিমিত্তে জেলা প্রশাসক ও ভূমি মন্ত্রনালয় বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দরখাস্থকারী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর তপশীল বর্ণিত জলমহাল ১৪১৮ বাংলা হতে ১৪২৩ সন মেয়াদে ইজারা বন্দোবস্থপ্রাপ্ত হয়ে ভোগ দখলকার থাকাবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থতার কারণে মহামান্য হাইকোট আদালতে ১৩৫৯/১৭নং রীট পিটিশন মোকদ্দমায় বিগত ৩১/০১/২০১৭ইং তারিখের আদেশে ১৪২৪ বাংলা সন হতে ১৪২৭ বাংলা সন পর্যন্ত ইজারার মেয়াদ বর্ধিত হওয়ায় দরখাস্থকারী মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ ১৪২৫ বাংলা সন পর্যন্ত জলমহালের খাজনা ও অন্যান্য করাদি পরিশোধক্রমে তপশীল জলমহাল সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় চুক্তিপত্র ও দখলনামা প্রদানের আবেদন করেন। এতদ্ব্যতিত মহোদয়ের কার্যালয়ের বিগত ১১/১০/২০১৮ইং তারিখে ২৫২৮ (৪)নং স্মারকের মর্মানুযায়ী অভিযোগকারী ১৪২৪-২৫ বাংলা সনের (চার আনা) অংশের হারাহারি প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ইজারা মূল্যসহ পরিশোধ করেও দখলনামা পাননি। এদিকে দরখাস্থকারী কর্তৃক বিগত ২২/১০/২০১৮ইং তারিখে ইজারার মেয়াদ বর্ধিত করণের আবেদনটি জেলা প্রশাসক মহোদয় কর্তৃক বিগত ১৭/০১/২০১৯ইং তারিখ নামঞ্জুর হলে তদবিরুদ্ধে দরখাস্থকারী মহামান্য হাইকোট আদালতে ৮৭২/১৯ইং নং রীট পিটিশন মোকদ্দমা দায়ের করিলে মাহামান্য আদালত বিগত ২৮/০১/২০১৯ ইং তারিখ তপশীল জলমহাল সংক্রান্তে ১৪২৫ বাংলা সনের জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। তৎপ্রেক্ষিতে দরখাস্থকারী বিগত ০৩/০২/২০১৯ইং তারিখ উক্ত ৮৭২/১৯নং রীট পিটিশন মোকদ্দমায় নিষেধাজ্ঞাদেশ সম্বলিত দরখাস্থ দ্বারা মহামান্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রতিপালনসহ তপশীল জলমহালের চুক্তিপত্র সম্পাদন ও দখলনামা প্রদানের নিমিত্তে দরখাস্ত আনয়ন করেন। তপশীল জলমহাল একটি পাইল ফিসারী বটে। প্রতি ৩ বৎসর অন্তর অন্তর মৎস্য শাসন সংরক্ষন করে মৎস্য আহরণ করা হয়। ইতিপূর্বে দরখাস্থকারী মঃ সঃ মঃ লিঃ ১৪১৮-২৩ বাংলা সন পর্যন্ত ২টি পাইলে তপশীল জলমহাল হতে কোন মৎস্য আহরণ করতে পারেনি। বিষয়টি দরখাস্থকারী বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিত ভাবে অবগত করা স্বত্যেও দূর্ভাগ্যজনক ভাবে মহোদয় এতদবিষয়ে কোন কার্য্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ফলে তপশীল জলমহাল শাসন সংরক্ষণ এবং ইজারামূল্য বাবদ ইতিপূর্বেই প্রায় ৮২ লক্ষ টাকা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তথাপি দরখাস্তাকারী সমিতির কিস্তিতে ক্ষতি পূরণের আশায় তপশীল জলমহাল আগামী ১৪২৬ বাংলা সন মৎস্য আহরণের নিমিত্তে তথায় প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দল কাটা স্থাপন করিয়া ইজারা মুল্য পরিশোধ করিয়া মৎস্য শাসন সংরক্ষণ করিয়া আসিতেছে। কিন্তু মহোদয় কর্তৃক চুক্তিপত্র সম্পদান ও দখলনামা প্রদান না করায় সেই সুযোগে তপশীল জলমহালের তীরবর্তী দুষ্কৃতিকারীগণ কর্তৃক স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে দরখাস্তাকারীর ফলেয়া মৎস্য লুটপাট করিয়া নিয়া যায়। ইজারাদার নিরুপায় হয়ে স্থানীয় থানা কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিতভাবে একাদিক বার অভিযোগ করলেও রহস্যজনকভাবে থানা কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করে। দরখাস্থকারী মঃ সঃ মঃ লিঃ দরিদ্র মৎস্যজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত। তফশীল বর্ণিত জলমহাল ইজারা ও শাসন সংরক্ষণের নিমিেিত্ত মহাজনদের নিকট হতে ঋণ করে ব্যাপক ঋণগ্রস্থ হয়েছে। ফলে দরখাস্থকারী সমিতির অস্তিত্ব বিলুপ্তির সম্মূখীন হয়েছে। যা অর্থের দ্বারা অপূরনীয় ক্ষতির স্থল বটে। তপশীল জলমহাল সংক্রান্তে ক্ষতিপূরণের নিমিত্তে দরখাস্তকারী সর্বোচ্চ ইজারা মূল্যে ইজারা নিতে সম্মত আছেন। এতে করে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
এ ব্যাপারে ইজারাদার কুমুদ বিশ^াস জানান, চার আনা অংশের ১৩৫৯/১৭নং মামলার আদেশে ১৪২৪-২৫ বাংলা সন ইজারার মেয়াধ বর্ধিত করার পর সেই আদেশ প্রতিপালন করে ১৪২৪-২৫ বাংলার ইজারা মূল্য গ্রহণ করার পর বার বার আবেদন দিয়ে কোন প্রতিকার পাইনি। পরবর্তীতে আবার দরখাস্থকারী সমিতিকে পত্র দিয়ে হারাহারি চার আনা অংশের ২ বৎসরের খাজনা পরিশোধ করেও দখলনামা আমি পাইনি। এদিকে আবার স্থানীয় প্রশাসন খাস কালেকশনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। চার আনা অংশের বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমার খরচ ইজারাদার বহন করেন। এতে করে সীমাহীন ক্ষতিগ্রস্থ হন ইজারাদার।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো আব্দুল আহাদ জানান, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: