মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
দিরাইয়ের গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে প্রধান বাঁধা দুর্নীতি

দিরাইয়ের গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে প্রধান বাঁধা দুর্নীতি

সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগেও অর্জন হয়নি শতভাগ স্যানিটেশন

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার: স্বাধিনতার ৪৬ বছরেও অর্জিত হয়নি শতভাগ স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহারে ব্যবস্থা। এমনিভাবে নিরাপদ পানি ব্যবস্থাও শতভাগ হয়নি একন পর্যন্ত। এমনকি দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা পাওয়ার পরও দিরাই পৌরসভার একটি ওয়ার্ডও এমন সফলতা দেখাতে পারেনি। এমন হতাশাজনক তথ্য পাওয়া গেছে দিরাই উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভাগীয় তথ্য ভাণ্ডার থেকে। তবে অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম আশার কথা জানান, শীঘ্রই উপজেলার কোন একটি ওয়ার্ড বা গ্রাম শতভাগ স্যানিটেশনের আওতায় আনার কাজ শুরু হবে।
সূত্র মতে, ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক দেয়া তথ্যানুযায়ি উপজেলার মোট খানার (পরিবার) সংখ্যা ৪৬ হাজার ৫১০টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন আছে এমন পরিবারের সংখ্যা ২৭ হাজার ১৬৭টি, অস্বাস্থ্যকর ১১ হাজার ৩৪৩টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিনের শতকরা হার ৫৮ দশমিক ৪১ শতাংশ আর অস্বাস্থ্যকর ৪১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
সূত্র আরো জানায়, ২০১৩ সালে সর্বশেষ জরিপ হয়েছিল নলকুপ আর্সেনিক নিয়ে। সে হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি নলকুপের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৮৯টি, আর্সেনিকযুক্ত নলকুপের সংখ্যা (বেসরকারি) ১২২টি, আর্সেনিকমুক্ত নলকুপের সংখ্যা ৪ হাজার ৪৬৭টি, আর্সেনিকযুক্ত নলকুপের শতকরা হার ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ আর আর্সেনিকমুক্ত ৯৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তাছাড়া মোট নলকুপের সংখ্যা ২ হাজার ২৪টি, মোট চালু নলকুপের সংখ্যা ১ হাজার ৯৯৪টি, মোট স্থায়ী অকেজো ৩০টি, অগভীর নলকুপ ১ হাজার ৩৮৬টি, গভীর ৫৮৮টি, তারা ডিপসেট ২০টি নলকুপ রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক তৈরিকৃত এ বছরের ১০ জুলাইয়ের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, রফিনগর ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৭৩টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীল সংখ্যা ১ হাজার ৬৫৬টি, অস্বাস্থ্যকর ১ হাজার ৪৪৭টি, ঝুলন্ত/খোলা ১ হাজার ৪৭০টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৩৬ দশমিক ২১ শতাংশ। ভাটিপাড়া ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৫৫টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ হাজার ২৫১টি, অস্বাস্থ্যকর ৯৯৭টি, ঝুলন্ত/খোলা ১০৭টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশ। রাজানগর ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ২৪টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ হাজার ৪৬৫টি, অস্বাস্থ্যকর ১ হাজার ৩শতটি, ঝুলন্ত/খোলা ৪৩৯টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৬৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। চরনারচর ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ৩১৮টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ হাজার ৬৫৯টি, অস্বাস্থ্যকর ২ হাজার ১৮১টি, ঝুলন্ত/খোলা ৪৭৮টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৫০ শতাংশ। সরমঙ্গল ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৩ হাজার ২০৩টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২ হাজার ৪৯৩টি, অস্বাস্থ্যকর ৫শতটি, ঝুলন্ত/খোলা ২১০টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৭৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। করিমপুর ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৪ হাজার ৭৮৪টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ হাজার ৬৯টি, অস্বাস্থ্যকর ১ হাজার ২৯২টি, ঝুলন্ত/খোলা ২ হাজার ২৩টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ২২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। জগদল ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ৭৪৪টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ হাজার ৬৬৬টি, অস্বাস্থ্যকর ১ হাজার ৭০টি, ঝুলন্ত/খোলা ১ হাজার ৮টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৬৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। তাড়ল ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৬৪টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ হাজার ১২৮টি, অস্বাস্থ্যকর ২৩৪টি, ঝুলন্ত/খোলা ১০২টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৯০ দশমিক ৩০ শতাংশ। কুলঞ্জ ইউনিয়নে মোট পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৭২টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ হাজার ১৮০টি, অস্বাস্থ্যকর ১ হাজার ২৭২টি, ঝুলন্ত/খোলা ৫২০টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৬৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ। দিরাই পৌরসভায় মোট পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ৭৩টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ হাজার ৬শতটি, অস্বাস্থ্যকর ১ হাজার ৩২৩টি, ঝুলন্ত/খোলা ১৫০টি, স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর শতকরা হার ৭০ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
এদিকে অধিপ্তরের ২০১৭ সালের মার্চ মাসের অপর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রফিনগর ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২০৪টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ১৯৯টি, স্থায়ী অকেজো ৪টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৩২টি, এরমধ্যে চালু ১২৪টি ও স্থায়ী অকেজো ৪টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৭২টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ৩টি। ভাটিপাড়া ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২০৭টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ১৯৯টি, স্থায়ী অকেজো ৪টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৩২টি, এরমধ্যে চালু ১২৪টি ও স্থায়ী অকেজো ৪টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৭২টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ৩টি। রাজানগর ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২১৮টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ২১৭টি, স্থায়ী অকেজো ৩টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৪১টি, এরমধ্যে চালু ১৪০টি ও স্থায়ী অকেজো ৩টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৭৫টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ২টি। চরনারচর ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২০৬টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ১৯৬টি, স্থায়ী অকেজো ৪টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৪৩টি, এরমধ্যে চালু ১৩৩টি ও স্থায়ী অকেজো ৪টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৬১টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ২টি। সরমঙ্গল ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২৫৩টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ২৪৫টি, স্থায়ী অকেজো ৩টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ২০৭টি, এরমধ্যে চালু ১৯৯টি ও স্থায়ী অকেজো ৩টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৪৩টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ৩টি। করিমপুর ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২৩৮টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ২৩১টি, স্থায়ী অকেজো ২টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৬৬টি, এরমধ্যে চালু ১৫৯টি ও স্থায়ী অকেজো ২টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৭০টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ২টি। জগদল ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২৪৭টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ২৫৪টি, স্থায়ী অকেজো ২টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৭৫টি, এরমধ্যে চালু ১৮২টি ও স্থায়ী অকেজো ২টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৭০টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ২টি। তাড়ল ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২শতটি, চালু নলকুপের সংখ্যা ২০৭টি, স্থায়ী অকেজো ৪টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৪৬টি, এরমধ্যে চালু ১৫৩টি ও স্থায়ী অকেজো ৪টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৫২টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ২টি। কুলঞ্জ ইউনিয়নে মোট নলকুপের সংখ্যা ২৩৬টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ২৩২টি, স্থায়ী অকেজো ২টি, অগভীর নলকুপের সংখ্যা ১৬৪টি, এরমধ্যে চালু ১৬০টি ও স্থায়ী অকেজো ২টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ৭০টি, তারা গভীর ডিপসেট চালু ২টি। দিরাই পৌরসভায় মোট নলকুপের সংখ্যা ১০টি, চালু নলকুপের সংখ্যা ১০টি, ৬নং গভীর নলকুপ চালু ১০টি।
অন্যদিকে দিরাই জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকৌশল অফিসের লোকবল সংকটের কথা জানান উপ-সহকারি প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, সাব এসিস্ট্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার ১ জন থাকলেও মেকানিক ৪ জনের মধ্যে রয়েছে ৩ জন। তাছাড়া মেসন ২ জনের মধ্যে ১ জন, লেবার ২ জনের মধ্যে ১ জন, কম্পিউটার কাম টাইপিস্ট (সিসিটি) ১ জন শূণ্য এবং নিজস্ব আলাদা ভবন না থাকার কারণে নাইটগার্ড নেয়া যাচ্ছেনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: