শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

নিজ বাড়িতে অন্তিম শয়ানে এরশাদ

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম:

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদকে তার নিজ বাড়ি পল্লী নিবাসের পাশেই লিচু বাগানে সমাহিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় তার দাফন কাজ শেষ হয়। দলের নেতাকর্মীদের দাবি অনুযায়ী এবং তাদের খনন করা কবরেই এরশাদকে সমাহিত করা হলো।

এর আগে এরশাদকে কোথায় দাফন করা হবে তা নিয়ে মতবিরোধ ছিল। পরিবার থেকে তাকে ঢাকায় সেনানিবাসের কবরস্থানে দাফন করার কথা বলা হয়েছিল। তবে রংপুরের নেতাকর্মীরা তাকে রংপুরেই দাফনের দাবি তোলেন। অবশেষে আজ চতুর্থ জানাজার পর তাকে রংপুরে দাফনে সম্মত হন এরশাদের স্বজনরা।

এরশাদের ছোট ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই চাচ্ছিলাম এরশাদকে রংপুরে সমাহিত করবো। তবে ভাবি (রওশন এরশাদ) বিভিন্ন কারণে চাচ্ছিলেন তাকে ঢাকায় দাফন করতে। তবে রংপুরের মানুষের আবেগ ও ভালোবাসার কারণে সর্বসম্মতভাবে আমরা তাকে এখানেই সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নিই। ভাবিও এতে রাজি হন।’

এর আগে মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে রংপুর কালেক্টরেট মাঠে এরশাদের চতুর্থ ও সর্বশেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে জানাজা শেষে লাশবাহী গাড়ি মাঠ ছেড়ে যেতে চাইলে নেতাকর্মীরা বাধা দেন। তারা এরশাদকে রংপুরে দাফনের দাবিতে সেখানেই অবস্থান নেন। তবে বাধা ঠেলেই লাশ এরশাদের বাসভবন পল্লী নিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। জানাজার আগে আজ বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার রংপুর সেনানিবাসে অবতরণ করে। ঢাকা থেকে তার লাশ রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এরশাদ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন থাকার সময় থেকেই রংপুর জাতীয় পার্টির নেতারা তাকে রংপুরে দাফনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের যুক্তি, এরশাদ বলে গেছেন রংপুরে মৃত্যু হলে তাকে যেন পল্লী নিবাসে দাফন করা হয়। সোমবার সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় এরশাদের বাসভবন পল্লী নিবাসের পাশে তার বাবা মরহুম মকবুল হোসেন মেমোরিয়াল হাসপাতাল এলাকায় লিচু বাগান চত্বরে তার জন্য কবরও খনন করা হয়। রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর জাপা সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কবরের জায়গা নির্ধারণ এবং নিজেই মাটি কেটে কবর খননের কাজ শুরু করেন।

মহানগর জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে জাতীয় পার্টি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকশ’ নেতা রংপুরে এসেছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগ থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ জানাজায় শরিক হন। এরশাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রংপুর জেলা দোকান মালিক সমিতি নগরীর সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট দুপুর ২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গত রবিবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। গত ২৬ জুন থেকে এরশাদ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

রবিবার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনে এরশাদের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই জানাজায় অংশ নেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। স্পিকারের পক্ষে সংসদের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সোমবার বাদ আসর বায়তুল মোকাররমে তৃতীয় জানাজা পড়ান ওই মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: