শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
বিশ্বম্ভরপুরে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর ভেঙ্গে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি

বিশ্বম্ভরপুরে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর ভেঙ্গে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি

amarsurma.com

সাইফ উল্লাহ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
হাওরের জনপদ সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সীমান্ত ধোপাজান নদীতে পানি বৃদ্ধি হয়ে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গ্রামে প্রবেশ করে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।
রোববার রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে নদীতে পানি বেড়ে গিয়ে ভাদেরটেক মনিপুরহাটি এলাকার প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কের উপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে দুটি আধাপাকা ও ১টি কাচা  ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরে প্রবেশ করে প্রায় দু’শ ফুট রাস্তা সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে হঠাৎ ফুলে উঠে ধোপাজান নদী এবং চার দিক শনশন শব্দ হতে থাকে, মুহুর্তেই রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি ভেঙ্গে যায়, খুলে দেওয়া হয় বোরো ফসলরক্ষাকারী গজারিয়া রাবার ড্যাম,  স্থানীয়দের তথ্য ও সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, রাস্তার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে রাস্তায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঢলের প্রবলবেগে ৩টি আধাপাকা ও কাচাঘর সম্র্পূন্ন নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। আশপাশ এলাকার ২০ একরের বেশি মৌসুমী সবজি ফসল বিনষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে রাবারড্যাম খুলে দেওয়ায় এবং রাস্তার একটি অংশে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার উপর দিয়ে ধোপাজান চলতি নদীর পানি প্রবাহিত হয়ে হাওরের উচু অংশ-চালবন গুলিকিত্তা, জগন্নাথপুর এলাকায় প্রবেশ করে সেচজমির বোরোধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে এক দিকে রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়া আর রাবারড্যাম খুলে দেওয়া নিয়ে অন্যদিকে নিচু এলাকার বোরোজাতের সেচজমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়া নিয়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সলুকাবাদ ইউপির সংরক্ষিত আসনের সদস্য মনোয়ারা বেগম বলেন গজারিয়া রাবারড্যাম ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সলুকাবাদ ইউপির সাধারণ সদস্য শাহপরান রাতে রাবার ড্যাম খুলে দেওয়ায় জগন্নাথপুর, চালবন, গুলিকিত্তাসহ আশপাশের ৪০ থেকে ৫০ একর জমিরি ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
অপরদিকে ভাদেরটেক এলাকার সাধারণ লোকজন বলছেন রাবারড্যাম খুলে না দিলে ঢলের আঘাতে রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বেরে যেতো এবং ইউপি সদস্যকে চাপের মুখে পড়তে হতো। আরেকটি পক্ষ বলছে ব্যক্তিসার্থের কারণে ইউপি সদস্য দেরি করে রাবারড্যাম খুলে দেওয়ায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া একই উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউপির যাদুকাটা নদীর উপর নির্মিত রাবারড্যাম উপচে পানি প্রবাহিত হয়ে আঙ্গারুলি হাওরের উচু অংশে সেচকৃত বেরোরকম ফসলের আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার দাস জানান, শক্তিয়ারখলা এলাকায় ৮ বিঘা জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে গজারিয়া রাবারড্যাম সংলগ্ন রাস্তা ভেঙ্গে ও নদীরপাড় বা রাস্তা উপচে গিয়ে খরচারহাওরে যে পানি প্রবেশ করেছে এতে করে ফসলের কোন ক্ষতি হবে না। কয়েক দিনের মধ্যে এ ধান কেটে উঠানো সম্ভব। এখানে খরচার হাওরের উচু অংশে সেচরকম ১শ বিঘার কম জমি রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন ঢলের কারণে সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদির বলেন, প্রতিবছর ঢলের কারণে ভাদেরটেক মনিপুরহাটি গ্রামের মানুষ আশঙ্কায় থাকেন। রোববার তাৎক্ষনিকভাবে রাবারড্যাম খুলে না দিলে ব্যপক্ষ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বাঘবেড় বাজার সংলগ্ন খালসহ ইউনিয়নের সব ক’টি খাল খনন করা হলে ঢলে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে এবং ফসলি জমিও রক্ষা পাবে।
এ ব্যাপারে গজারিয়া রাবার ড্যাম ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শাহপরান বলেন, ঢলের কারণে ক্ষতির আশঙ্কা দেখে রাবার ড্যাম পথে পানি প্রবাহের তাৎক্ষনাৎ সুযোগ করে দিয়েছি। এ ইউনিয়নের নিচু এলাকার কিছু বোরোকম জমির ধান কাটা শেষ না হওয়ায় আগে রাবার ড্যাম খুলে দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীর বিশ্বাস জানান, রোববার সরেজমিন পরিদর্শন করে এসেছি ঢলের কারণে রাস্তা ও ঘরবাড়ির বেশ ক্ষতি হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: