বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

৯৯৯-এ কল: মধ্যরাতে দুই নারীর প্রতি পুলিশের মানবিকতা!

amarsurma.com

হাবিব সরোয়ার আজাদ:
সুনামগঞ্জ দ্বীনি সিনিয়র মাদরাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা মিসবাহ উদ্দিনের স্ত্রী ও তাঁর বাসার কাজের মেয়ে রাতের খাবার খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ‘৯৯৯’-এ কল করার পর মধ্যরাতে টহল পুািলশের গাড়ি অজ্ঞান নারী ও বাসার কাজের মেয়েকে মানবিক কারনে পৌছে দিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করায়। শুক্রবার দুপুরে শংকামুক্ত অবস্থায় অননেকটা সুস্থ্য হয়ে স্বামী ও দু’সন্তানের নিকট ফিরেছেন ওই নারী। সেই সাথে বাসায় ফিরেছে কাজের মেয়েটিও।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে প্রভাষকের স্ত্রী মুশফিকা ফেরদৌস (২৯) ও কাজের মেয়ের নুরী বেগম (১৮)-এর অসুস্থতায় বেগতিক অবস্থা দেখে রাস্তায় এসে গাড়ি খুঁজতে থাকেন অসুস্থ দু’জনকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য। কিন্তু মফস্বলের শহর রাত ১১টার পরেই রাস্তাাগুলো নিথর হয়ে থাকে। এতরাতে রিক্সা কিংবা গাড়ি পাওয়া অনেকটা দুস্কর হয়ে পড়ে।
রাস্তার এদিক ওদিক ঘুরতে ঘুরতে প্রায় আধা ঘন্টা পৌনে এক ঘন্টা সময় পেরিয়ে গেলেও স্ত্রী ও কাজের মেয়েকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য গাড়ির কোন ব্যবস্থা করতে পারছিলেন না। আশেপাশের প্রতিবেশিদের সাহায্য নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অসুস্থ্য রোগীদের হাসপাতাল নিতে অটো কিংবা রিকশার গ্যারেজও কাকুতি মিনতি করে কোন সাড়া পান নি। গাড়ী না পেয়ে প্রভাষকের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ছে। কোন রকম কূল কিনারা না পেয়ে অবশেষে শেষ আশ্রয়স্থল ভেবে কল দেন ‘৯৯৯’-এ।
প্রভাষক তাঁর সমস্যার কথা বিস্তাারিত খুলে বলেন। পুলিশ হেল্প লাইন ‘৯৯৯’ থেকে উনার সমস্যা সমাধানে শতভাগ আশ্বাস দেয়া হয় এবং পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে রাত ২টায় সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার রাতের টহল ডিউটিরত তিনটি গাড়ি এসে পৌরশহরের ষোলঘর, সুরমা-১৬১/৪ নম্বর বাসার সামনে হাজির হয়। পুলিশের গাড়ি দেখার পর প্রভাষক যেন নতুন জীবনই ফিরে পেয়েছেন।
শুধু তাই নয়, সুনামগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ওসি ডিবি কাজী মোক্তাদির হোসেন এবং এএসআই/নিজামসহ সকল ফোর্সগণ দ্রত বাসার ভিতরে থেকে অজ্ঞান দুই জনকে পুলিশের টহল গাড়িতে করে মধ্যরাতে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান এবং চিকিৎসার করান।
প্রভাষক মিসবাহ উদ্দিন বলেন, শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে আমার স্ত্রী ও কাজের মেয়েকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে এসেছি, কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে আরেকটু দেরিতে তাদেরকে হাসপাতালে নেয়া হতো, তাহলে তাদের দু’জনকেই চিরতরে হারাতাম। আমার দু’সন্তান হয়ত এতিম হয়ে যেতো। কাজের মেয়েটাও আমার মেয়ের মতো। পুলিশ মধ্যরাতে টহল গাড়িতে করে দু’জন অসুস্থকে হাসপাতাল পেছৈ দিয়ে এবং চিকিৎসা করিয়ে যে মানবিকতার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন তাতে একজন নাগরিক হিসাবে গোটা পুলিশ বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: