শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
‘গরুর গোশত খাওয়া অপরাধ হলে বিচারপতি কাটজুরও সাজা চাই’

‘গরুর গোশত খাওয়া অপরাধ হলে বিচারপতি কাটজুরও সাজা চাই’

we264আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : ভারতের উত্তর প্রদেশের নগর উন্নয়ন ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী আজম খান অভিযোগ করে বলেছেন, ‘গরুর গোশতকে কেন্দ্র করে মুসলিমদের হত্যা করা হচ্ছে। আমরা কোথায় যাবো? কী করবো?’ মঙ্গলবার লখনৌতে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে আজম খান এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘মুসলমানদের বলা হচ্ছে- যারা গরুর গোশত খায় তারা যেন দেশ ছেড়ে চলে যায়। যদি গরুর গোশত খাওয়া অপরাধ হয় তাহলে দিল্লিতে কাশ্মিরের নির্দলীয় বিধায়ক রশিদকে যে সাজা দেয়া হয়েছে ওই সাজা বিচারপতি কাটজু, শোভা দেসহ অন্যদের দেয়া উচিত।’ দুদিন আগে প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করার আহ্বান জানিয়ে আজম খান বলেন, দেশ দ্রুত নৈরাজ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ‘গরুর নামে আরএসএস-এর মুখপত্রে যে নিবন্ধ লেখা হয়েছে তাতে আরএসএস-এর নীতি সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়ে গেছে। আরএসএস ভারতকে অঘোষিত হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এমনটি করে তারা সংবিধানকে সাসপেন্ড করে দিয়েছে। এমতাবস্থায় প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে আমার আবেদন দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে নতুন করে নির্বাচন করা হোক।’ মন্ত্রী আজম খান এর আগে উত্তর প্রদেশের দাদরিতে গরুর গোশত খাওয়া এবং তা বাসায় রাখার মিথ্যা গুজব রটিয়ে মুহাম্মদ আখলাক নামে এক বৃদ্ধকে হত্যা এবং মুসলিমদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে চিঠি লেখেন। ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার চক্রান্ত হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ নিয়ে মন্ত্রী আজম খানকে বিভিন্নমহল থেকে তীব্র সমালোচনা করা হয়। এমনকি তাকে হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ থেকে বরখাস্তের দাবিও করা হয়। যদিও উত্তর প্রদেশ সংখ্যালঘু কমিশন এ নিয়ে আজম খানের পাশেই দাঁড়িয়েছে। সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্য এবং মুখপাত্র শফি আজমী মঙ্গলবার বলেন, ‘এই বিষয়টি জাতিসংঘে নেয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত। এতে ভারতের মুসলমানদের যন্ত্রণার আওয়াজ রয়েছে।’ আজম খানের এই পদক্ষেপে আরএসএস ব্যাকফুটে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেন শফি আজমী। সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্য শফি আজমী মঙ্গলবার আগ্রা সফর করে গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, এর চেয়ে বড় বিষয় কী হতে পারে একটি সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হলেও প্রধানমন্ত্রী নিশ্চুপ হয়ে থাকেন! ধিকন্তু তার মন্ত্রী মহেশ শর্মা দাদরির ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, দেশে এরকম কয়েকবার হয়েছে যে প্রেসিডেন্টের হস্তক্ষেপের পরেই প্রধানমন্ত্রী নীরবতা ভেঙেছেন। এবারো প্রধানমন্ত্রী নীরবতা ভেঙেছেন প্রেসিডেন্ট এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করে হস্তক্ষেপ করার পরেই। তিনি আরো বলেন, ‘দেশে মুসলমানদের একের পর এক টার্গেট করা হচ্ছে। দাদরির ঘটনার ল্যাবরেটরি তদন্তে রিপোর্টে প্রকাশ, আখলাকের বাসায় খাশির গোশত ছিল। তা সত্ত্বেও বিজেপি নেতা সঙ্গীত সোম, সাক্ষী মহারাজ, সাধ্বী প্রাচীরা কূটতর্কের অবতারণা করেন। এভাবে সমস্ত বিকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই মুসলমানদের ইস্যুতে জাতিসংঘে চিঠি লেখা প্রয়োজন ছিল। যারা এতে আপত্তি জানাচ্ছেন, ওইসব লোক তখন কোথায় ছিলেন যখন নোবেল পুরস্কার পাওয়া কৈলাশ সত্যার্থী জাতিসংঘে শিশু শ্রমের খারাপ অবস্থার কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেন, যখন বেরেলিতে দুই বোনের ধর্ষণের প্রসঙ্গ এবং পূর্বাঞ্চলে দাঙ্গার ঘটনা জাতিসংঘে গিয়েছিল সেই সময় এ নিয়ে কোনো গোলমাল হয়নি। এখন উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য আজম খান দাদরির ঘটনা জাতিসংঘে নিয়ে যেতেই আপত্তি শুরু হয়েছে।’ জাতিসংঘে বিষয়টি তুলে ধরা অপরাধের কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শফি আজমী আরো বলেন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুধু উত্তর প্রদেশেই নয়, বরং জম্মু-কাশ্মির, হিমাচল প্রদেশ, মহারাষ্ট্রসহ দেশের বিভিন্ন অংশে একনাগাড়ে হচ্ছে। এজন্য এই বিষয়টি জাতিসংঘে তুলে ধরা জরুরি ছিল। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: