বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
গাদ্দাফির আমলই ভালো ছিল

গাদ্দাফির আমলই ভালো ছিল

gaddafiআমার সুরমা ডটকম ডেক্সলিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি নিহত হওয়ার পর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। সংঘাত-নৈরাজ্যে দেশটির মানুষ ক্লান্ত-শ্রান্ত। তাদের জীবনে হতাশা বাড়ছে। তারা অনেকটা উপহাস করে বলছে, এখনকার চেয়ে বরং শাসক গাদ্দাফির আমলই ভালো ছিল। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির মানুষ তাদের এই কষ্টের অনুভূতির কথা জানিয়েছে। লিবিয়ার লোকজন বলছে, তেলসমৃদ্ধ দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিপক্ষগুলো পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত। বিদ্যুৎ নেই, টাকা নেই, নিত্যপণ্যের অভাব। গাদ্দাফির চার দশকের বেশি সময়কার শাসনকালের কথা উল্লেখ করে ফার্মাসিস্ট ফায়জা আল-নাস বলেন, বলতে ঘেন্না হচ্ছে তবু বলি, আগের আমলেই আমাদের জীবন অনেক ভালো ছিল। ৪২ বছর বয়সী এই ফার্মাসিস্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিজের অর্থও এখন ঠিকমতো ব্যাংক থেকে তোলা যায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সবকিছুর দাম প্রায় তিন গুণ বেড়ে গেছে। লিবিয়ায় জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি ঐক্যের সরকার আছে। কিন্তু পুরো দেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। নিয়ন্ত্রণ প্রতিায় তারা চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে তা হালে পানি পাচ্ছে বলে মনে হয় না। ঐক্যের সরকারকে মানতে নারাজ দেশটির পূর্বাঞ্চলে গঠিত স্বশাসিত সরকার। এই সরকারকে জাতিসংঘ-সমর্থিত ঐক্যের সরকারের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০১১ সালে গাদ্দাফির পতনের পর এক চরম অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে লিবিয়া। জাতি-গোীগত বিরোধ ও সংঘর্ষ মারাত্মক আকার ধারণ করে। এই সুযোগে সেখানে আস্তানা গাড়ে জেহাদিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। জাতি-গোষ্ঠীগত বিরোধ মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকার কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। আইএসকে হটাতেও ঐক্যের সরকারকে লড়তে হচ্ছে। দেশটির সর্বত্র বিশৃঙ্খলা-অরাজকতা। বিভক্ত লিবিয়ায় নেই মানুষের জীবনের নিরাপত্তা। ২০১১ সাল থেকে নানামুখী সংঘাত-সংঘর্ষ, যুদ্ধ-বিগ্রহে লিবিয়ায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। অনেকে হয়েছে বাস্তুচ্যুত। বাঁচার আশায় লিবীয়রা শরণার্থীর জীবন বেছে নিচ্ছে। লিবিয়ার তেল উৎপাদন নেমে এসেছে। একসময়কার সমৃদ্ধ অর্থনীতি এখন নড়বড়ে। লিবীয়দের জীবনে এখন টানাটানি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লিবিয়া মানব পাচারের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। লিবিয়া থেকে ইউরোপে ব্যাপকভাবে মানব পাচার করা হচ্ছে। মানব পাচারের শিকার অনেক মানুষ সাগরে ডুবে প্রাণ হারিয়েছে। রফিক হারিরি সেন্টার ফর দ্য মিডল ইস্টের লিবীয় বিশ্লেষক মোহাম্মেদ আলজারের ভাষ্য, লিবিয়ার অধিবাসীরা মহাসংকটে আছে। তাদের সামনে কোনো ভালো সুযোগ নেই। লিবীয় বিশেষজ্ঞ মতিয়া তোয়ালদোর মতে, দেশটিতে যে শিগগির স্থিতিশীলতা আসবে এমন প্রত্যাশা না করাই ভালো। লিবিয়ার বর্তমান অরাজক পরিস্থিতিতে অতি হয়ে দেশটির অনেকে বলছেন, গাদ্দাফি যুগের জীবনই তো ভালো ছিল। তবে লিবিয়ার চলমান অস্থিতিশীলতা নিয়ে ভিন্নমতও আছে। এই ঘরানার লোকেরা বলছেন, স্বৈরশাসক গাদ্দাফির অধীনে চার দশকের বেশি সময় ধরে চলা অপশাসনের পরিণামই আজকের লিবিয়ার মানুষের সংগ্রাম। এএফপি, রয়টার্স।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: