বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

গ্রন্থ পর্যালোচনা: আফতাব চৌধুরীর স্বাস্থ্য সমাচার

নাজমুল ইসলাম মকবুল
বয়স তিন কুড়ি পৌনে এক ডজন। চলাফেরায় হাসিখুশিতে রঙ্গরসের ঝিলিক। মনে হয় যেন চিরতরুনই। আবারও ধাধা লাগিয়ে দিলেন টেলিফোনে। জানালেন চমক আছে। আবারও সেরা অর্জন। পাঠিয়ে দিয়েছি কুরিয়ারে। কালই পেয়ে যাবেন। বুঝতে বাকী রইলনা যে, সর্বশেষটাই সেরা হয়। সিলেটের প্রবীণ সাংবাদিক ও কলামিস্টের বইয়ের সংখ্যা এবার দেড় ডজন পূর্ণ করলো। বললাম আপনাকে নিয়ে একটি গান লিখেছিলাম যাতে ১৭টি বইয়ের জনক উল্লেখ করেছি। এখনতো সংশোধন করে ১৮ লিখতে হবে। জানতে চাইলাম বইয়ের নামটা কী। চিরায়ত ভঙ্গিমায় হেসে হেসে বললেন ‘স্বাস্থ্য সমাচার’। জানালেন বইটা হাতে পেলে ভালোই লাগবে। সত্যিই বইটা হাতে পাবার সাথে সাথে শক্ত খামের ভেতর থেকে খুলে উল্টে পাল্টে দেখতে লাগলাম। পড়া শুরু করলাম নগদ। আনন্দে ভরে উঠলো মনটা। শিয়রের পার্শ্বে রাখার মতো এ ধরনের চমৎকার একটি গ্রন্থ খুজছিলাম দীর্ঘদিন যাবত। সত্যিই পেয়ে গেলাম জীবন চলার পাথেয় হিসেবে দরকারী একটি পারিবারিক প্রেসক্রিপশন।
সেই প্রেসক্রিপশনের প্রবীণ বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ডাক্তার হলেন, পরিবেশ ও সমাজ উন্নয়নে চির-সংগ্রামী, চির যৌবনা সুপুরুষ ‘বৃক্ষপ্রেমিক’ আফতাব চৌধুরী। হাল আমলে তাঁর কলম থেকে গবেষনাধর্মী চমৎকার লেখার ঝর্নাধারা প্রবাহিত হতে শুরু করায় অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকের খ্যাতিও। ‘রাষ্ট্র ও সমাজ চিন্তক’ বললেও বাড়িয়ে বলা হবেনা প্রবীণ এ খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বকে। সিলেট লেখক ফোরামের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সিলেট বিভাগের পাঁচজন গুণী লেখককে সম্মাননা দিয়েছিলাম আমরা। এই পাঁচজন গুণীদের অন্যতম ছিলেন লেখক।
প্রতিদিনই যার কোন না কোন লেখা জাতিয় স্থানিয় দেশি বিদেশি পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে পাঠকের মনের খোরাক যুগিয়ে যাচ্ছে এমন ব্যস্ততম লেখকের এ পর্যন্ত ১। ইদানিং, ২। সত্যের মুখোমুখী, ৩। আলোর সন্ধানে, ৪। ইতিকথা, ৫। জীবন ও জগৎ, ৬। কৌতুক, ৭। নির্বাচিত কলাম, ৮। নজরুল প্রতিভার নানা দিগন্ত, ৯। প্রত্যাশার দিগন্তে কালো মেঘ, ১০। হাসতে নেই মানা, ১১। আলো-যৌথ সম্পাদনা, ১২। একের ভিতর একুশ, ১৩। প্রকৃতি ও জীবন, ১৪। হাসি যখন ভালোবাসি, ১৫। চেতনায় আলো অনির্বাণ, ১৬। অবদানে অমলিন, ১৭। কালের সাক্ষী নামক সতেরটি মুল্যবান গ্রন্থ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে তাঁরই জীবনের সর্বশেষ অর্জন ১৮তম গ্রন্থ ‘স্বাস্থ্য সমাচার’।
তারুন্যের ঝলকানি যার আপাদমস্তকে, চাল চলনে সেই প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব আফতাব চৌধুরী সম্পর্কে দেশ বিদেশের শ্রেষ্ঠ গুণীজনেরা অনেক লিখেছেন, অনেক মন্তব্য করেছেন যা আলোকপাত করতে হলে বিশাল একটি পুস্তক রচনা ছাড়া উপায় নেই।
বইটির ভুমিকায় কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক কৃষিবিদ ডক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম লিখেছেন, বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী সাংবাদিক ও সব্যসাচী লেখক আফতাব চৌধুরী বর্তমান সময়ে দেশের সাংবাদিকতা ও সাহিত্যাঙ্গনে এক আলোকিত নাম। তিনি একাধারে সাংবাদিক কলামিস্ট সমাজসেবী ও বৃক্ষপ্রেমী। ………….সৃজনশীল ও কর্মমুখি কাজের জন্য এ পর্যন্ত তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অনেকগুলো পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এবং সম্মাননা লাভ করেছেন…………..।
সময়ের সেরা প্রেসক্রিপশন ‘স্বাস্থ্য সমাচার’ প্রত্যেকের জীবন সঙ্গী হওয়ার এক্কেবারে উপযুক্ত এ পাথেয়তে খাদ্যে বিষক্রিয়া : একটি জরুরি আলোচনা থেকে শুরু করে প্রথম অধ্যায়ে আছে ‘পেঁয়াজ আদা ও রসুনের গুণাগুণ’ পর্যন্ত পঞ্চাশটি ‘খাদ্যের গুণাগুণ ও উপকারিতা’ সম্পর্কে চমৎকার লেখা। দ্বিতীয় অধ্যায়ে ‘স্বাস্থ্য পরিচর্যা’ সম্পর্কিত বাষট্টিটি বিষয়ের উপর মুল্যবান লেখা।
লেখাগুলো গবেষনা ও দিকনির্দেশনাধর্মী। দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যেকের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় পথ্য হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করি। লেখকের সিমাহীন পরিশ্রম ও গবেষনা ছাড়া এসব মুল্যবান মনি মুক্তা দেশ ও জাতিকে উপহার দেয়া সম্ভব নয়।
পরিবেশ তারকা আফতাব চৌধুরীর এ গবেষনা গ্রন্থটির গর্বিত প্রকাশক হামনা খানম চৌধুরী। স্বত্ব মাহবুব, মারুফ ও মাসুদ। প্রকাশকাল নভেম্বর ২০১৭। নান্দনিক প্রচ্ছদ এঁকেছেন বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল। বইটির শুরুতে লেখকের আব্বা মরহুম আব্দুস সুবহান চৌধুরী সম্পর্কে বাবা, ‘তোমার কবর হোক বেহেশতের বাগান’ শিরোনামে লিখেছেন হৃদয়গ্রাহী কিছু কথা।
চার রঙা শক্ত মলাটে বাঁধাই, ঝকঝকে অফসেট পেপারে ছাঁপা ২৫৬ পৃষ্টার গ্রন্থটির মুল্য রাখা হয়েছে ২০০ টাকা, ১০ মার্কিন ডলার, ৫ পাউন্ড যা পাঠকদের নাগালের বাইরে বলা যাবেনা। বইয়ের ফ্ল্যাপ এর একদিকে রয়েছে ‘অমর বাণী’ এবং অপরদিকে রয়েছে লেখকের সংক্ষিপ্ত পরিচয়। গ্রন্থটির মাধ্যমে সমাজ রাষ্ট্র তথা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ভান্ডারে অমর ও অক্ষয় হয়ে থাকবেন লেখক আফতাব চৌধুরী। গ্রন্থটি রাষ্ট্র সমাজ সর্বোপরী মানুষের সার্বিক জীবনে এক কল্যাণকামী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীণ দাওয়াই বলে মনে করি আমি। বিগত কিছুদিন পুর্বে সিলেটে একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে লেখক তাঁর জীবনে অন্তত বিশটি বই পূর্ণ করার আকাঙ্খা ব্যক্ত করেন। বিশ ছূঁই ছূঁই হয়ে গেলেও আমি আশা এবং দোয়া করি যেন শততম বই লিখে যেতে পারেন লেখক আফতাব চৌধুরী।
লেখকের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনার পাশাপাশি গ্রন্থটির বহুল প্রচার কামনা করছি।।

নাজমুল ইসলাম মকবুল
সভাপতি, সিলেট লেখক ফোরাম
প্রতিনিধি, চ্যানেল আই (ইউরোপ)

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: