কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, স্টাফ রিপোর্টার (সুনামগঞ্জ):

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রামে দুই গ্রুপের ৩ দফা সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি। উভয়পক্ষের ৬ জন গ্রেফতার। শনিবার দুপুরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাওনা টাকা নিয়ে শনিবার সকালে বীরগাঁও বাজারে বীরগাঁও দক্ষিণ হাটির রিয়াজুল ইসলাম রাইজুল গ্র“পের আব্দুল হামিদ ও নয়াহাটির সাবেক চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক মিলনের গ্র“পের রিয়াদ আহমদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গণমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বিষয়টি সমাধান হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই রিয়াজুল ইসলাম রাইজুলের লোকজন বাজারে এ ঘটনার খবর পেলে তারা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এমদালুক হক মিলন গ্রুপের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এ সময় বাজারের রিয়াদ এন্ড সামাদ অটো রাইসমিলে তারা হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। পরে ইমদাদুল হক মিলনের গ্র“পের লোকজন হামলার খবর পেলে উভয়পক্ষের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে বীরগাঁও এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
খবর পেয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। সংঘর্ষে নারীসহ উভয় গ্রুপের প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন ইমদাদুল হক মিলনের গ্র“পের তৈবুল হক (৪০), আলী হোসেন (৪০), মাকবুর (৩৫), বদরুল (৪০), সুবেল (৩৬), জাহাঙ্গীর বাদশা (৪৫), সিএনজি চালক সুমন (২৮), রিয়াজ (৩০)।
রিয়াজুল ইসলাম রাইজুল গ্রুপের আহতরা হলেন, মাসুম (২৮), জুসেন (৩৫), কমর উদ্দিন (৫০), জঙ্গী নুর (২৫), রাহুল (২২), রাইমুদ্দিন (৩০), রূপায়েল (৩০), হৃদয় (১৮), সাকিব (১৮), সালেজা বেগম (৪৫), আনিছ (২৫), কুহিনুর (৪৫)। তাৎক্ষণিক অন্যান্য আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতদেরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আরো বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বিভিন্ন জায়গা থেকে উভয় পক্ষের ৭ জনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে বিকাল আড়াইটায় রিয়াকুল ইসলাম রাইজুলের গ্র“পের আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে ইমদাদুল হক মিলনের গ্রুপের সিএনজি চালক সুমনের উপর পাগলা বাজারে হামলা চালিয়ে সুমনের সিএনজি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এর জের ধরে বিকাল আড়াইটা থেকে সন্ধায় ৬টা পর্যন্ত পাগলা-বীরগাঁও সড়কে যানচলাচল বন্ধ রাখে সিএনজি অটো রিক্সা শ্রমিকরা। পরে স্থানীয় গণ্যমান্যদের সহযোগিতায় রাতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি মো. ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনুকুলে রয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।