শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৪৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে প্রভাবশালী কর্তৃক মৎস্য আহরণ ও এলাকার বোর ফসলের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে প্রভাবশালী কর্তৃক মৎস্য আহরণ ও এলাকার বোর ফসলের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ

amarsurma.com

কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, স্টাফ রির্পোটার সুনামগঞ্জ:
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে প্রভাবশালী কর্তৃক নারাইনজানী নদীর মাঝখানে বাঁধ দিয়ে ও বিষ প্রয়োগ করে মৎস্য আহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সোমবার ৪ মার্চ এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাঁক গ্রামের মৃত হাজী আব্দুস শহীদের ছেলে হাজী মো: দিন ইসলাম, দিরাই থানাধীন ঢোলপষী গ্রামের হাজী মো: ইনছান উল্লাহর ছেলে তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মৃত কিংকর মিয়ার ছেলে আব্দুল আলী, হান্নান মিয়া, একই গ্রামের মৃত মইন্দা মিয়ার ছেলে আব্দুর রউফ, মৃত ইছাক উল্লাহর ছেলে আব্দুল মালিক, জিলু মিয়া, রহমত আলীর ছেলে রাজন মিয়া, মৃত দিলদার মিয়ার ছেলে রব্বানী মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ জনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও দিরাই থানা এলাকার শিমুলবাঁক, তেহকিয়া, গোবিনপুর, লালুখালী, রঘুনাথপুর, ঢোলকর, ঢোলপষী, গনিগঞ্জ, গাজীনগর, পাথারিয়া, বাইবনা গ্রামের এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার জায়গা নিয়ে নারাইনজানী নদী রয়েছে। এই নদীটির পাশ দিয়ে উক্ত গ্রামগুলোর কয়েক হাজার হেক্টর বোর জমি অবস্থিত। এই জমিগুলোর পানি নিস্কাসনের একমাত্র রাস্তা হল এই নদীটি। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ উপরোক্ত প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা জলমহাল লিজ এর নাম করে অবৈধভাবে সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করে নদীটির কয়েক জায়গায় মাটির বাঁধ ও পলিথিন দিয়ে বাঁধ পয়ে পানি নিস্কাসনের রাস্তা বন্দ করে জলমহাল সেচ দিয়ে শুকিয়ে সার ও কীটনাশক বিষ ব্যবহার মৎস্য আহরণ করে মাছ বিক্রি করণসহ অত্র এলাকার বোর ফসলের পানি নিস্কাসনের পথ বন্দ করে দিয়েছে।

এই নদীতে যখন বিষ প্রয়োগ করে তখন এই নদীর পানি খেয়ে ইতিমধ্যে কয়েকটি গরু ও হাঁস মারা গেছে। এই ব্যাপারে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিগত ১৫ দিন আগে জলমহাল সেচকারী ও নদীতে বাঁধ দাতাকারী প্রভাবশালীদের উপর চড়াও হলে এলাকার শান্তিশৃংখলা রক্ষার স্বার্থে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম, সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, হাজী তহুর আলী, প্রভাষক নুর হোসেন, গনিগঞ্জ গ্রামের প্রবীন মুরব্বী আব্দুর রউফ, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, আব্দুল আউয়াল, পাথারিয়া গ্রামের ছোয়াব আলী, তেহকিয়া গ্রামের আতাউর রহমান, ছাদিকুর রহমান, নুর আলম, গোবিনপুর গ্রামের নুরুজ্জামান, জীবদারার সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ মিয়া, তলেরবন্দ হতে গোলাম হায়দার, লালুখালী গ্রামের জয়নালসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শালিশের মাধ্যমে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয় তিন দিনের মধ্যে নদীতে অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধগুলো কেটে সম্পূর্ণ মাটি পরিস্কার করা ও বাঁশের খুটি দারা নির্মিত বেড়া উঠিয়ে দেওয়া এবং জলহাল সেচ বন্দ করে দেওয়ার জন্য।

কিন্তু এই সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রভাবশালীরা জোরপূর্বকভাবে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ মৎস্য আহরণ করাসহ বাঁধ না কেটে বরং উল্টো এলাকাবাসীকে হুমকি দামকি দিয়ে পানিতে বিষ প্রয়োগ করে মৎস্য আহরণ করিতেছে। এছাড়া তারা আর ও বলে বেড়াচ্ছে এলাকার কেউ এই নদীর পাশে গেলে খুন করে ফেলবে। এলাকাবাসী তাদের ভয়ে এই জায়গায় যেথে পারতেছে না। এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীর বোর ফসলের একমাত্র পানি নিস্কাসনের রাস্তা রক্ষা করা ও নদী রক্ষা এবং মাছের বংশ রক্ষা করার স্বার্থে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের পক্ষে আব্দুল আলী জানান, আমরা মুরাদপুর হুররা মৎস্যজীবি সমিতির নামে জাইকার কাছ থেকে লিজ এনে মৎস্য আহরন করতেছি। আমরা বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারি নাই। বাঁধ কাটার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা বাঁধ কেটে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সফি উল্লাহ অনুলিপির সত্যতা স্বীকার করে জানান, জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশক্রমে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: