শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
দরগাহ মাদরাসার উপর আরোপিত কথিত সাংবাদিকের অভিযোগের জবাব!

দরগাহ মাদরাসার উপর আরোপিত কথিত সাংবাদিকের অভিযোগের জবাব!

ওলিউল আহাদ মাগফুর: কিছুদিন আগে একজন সাংবাদিক নামধারী ব্যক্তি সিলেটের বিখ্যাত, সর্বজন স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠান জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগাহ মাদ্রাসা সিলেট-এর আল কাসিম গবেষণা পরিষদ কর্তৃক প্রণীত ও উক্ত প্রতিষ্ঠানের দারুল ইফতা কর্তৃক সত্যায়িত সেহরী ইফতার ও নামাজের স্থায়ী সময়সুচী” সম্পর্কে সমালোচনার নামে একটি বিভ্রান্তি তৈরী ও নিজেকে আলোচিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। আমি দরগাহ মাদরাসার একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে তার এই বিভ্রান্তিকর অভিযোগের জবাবে এই লেখাটি লিখছি! প্রথমেই আমি বলতে চাই, তিনি দরগাহ মাদরাসার সর্বজন স্বীকৃত একটি খেদমতকে অবজ্ঞা করে এটিকে ছিড়ে ফেলার এবং এই মহান কাজকে “ফাইজলামী, আফেরতামি, সীমালঙ্ঘন” বলে উল্লেখ করে নিজের অজ্ঞতা আর ইসলামী জ্ঞান এমনকি সাংবাদিকতার ন্যূন্যতম জ্ঞানের স্বল্পতাকেই মানুষের সামনে প্রকাশ করেছেন। এই কথিত সাংবাদিক ও গবেষক! তার লেখায় দরগাহ মাদরাসা কর্তৃক প্রণীত ক্যালেন্ডারের কোন ত্রুটি উল্লেখ করতে পারেন নি, তিনি শুধু উল্লেখ করেছেন যে, যেহেতু দরগাহ মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কাছে সুবহে সাদিক সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত নিরূপণের জন্য কোন মেশিন নেই, সুতরাং তারা কোন ধরনের ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে পারবেন না! এ ব্যাপারে আমি তাকে প্রশ্ন করতে চাই, প্রথমত আপনার মত সবাই কি অন্ধ যে আল্লাহর দেয়া দৃষ্টিশক্তির মাধ্যমে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পারেনা? দ্বিতীয়ত রাসুল (সাঃ) এর যুগে এই মেশিন ছিল কি? ইসলামিক ফাউন্ডেশন ছিল কি? ছিল কি আবহাওয়া অধিদফতর? যদি এর উত্তর না হয় (অবশ্যই না সূচক হবে) তাহলে বলুন তো, আপনার থিওরী অনুযায়ী তাদের নামাজ রোজা কি হয়েছে? মেশিন ছাড়াও কি তারা ঠিক সময়ে ইফতার করেন নি? সেহরি খাওয়া বন্ধ করেন নি? আপনি কি জানেন যে হযরত বিলাল (রাঃ) সেহরী খাওয়ার জন্য আযান দিতেন? তার নিকট সেহরির সময় নির্ধারণের কয়টি মেশিন ছিল? বলতে পারবেন কি? আল্লাহর রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেন “যখন এদিক থেকে রাত আগমন করবে এবং ঐ দিক থেকে দিন অতিবাহিত হবে এবং সূর্য ডুবে যাবে তখন রোজাদার ইফতার করবেন” (বোখারী, মুসলিম) এই হাদিসে কোন মেশিন বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগের বাধ্যবাধকতা কোথায়? যারা সত্যিকার অর্থে কোরআন ও হাদিস পড়েছেন ও ইসলামী জ্ঞান অর্জন করেছেন তাদের জানা আছে যে ইসলামের কোন আমল, ইবাদাত বা বিধি-বিধান বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির উপর নির্ভরশীল নয়। ঐ লেখায় কথিত সাংবাদিক আবার দরগাহ মাদরাসা কর্তৃক প্রকাশিত ক্যালেন্ডারকে “আল কাসিম ফুজালা পরিষদের বাণিজ্যিক আয়ের উৎস” বলে অভিহিত করেছেন, নামধারি সাংবাদিক হলে যা হয় আর কি। ঘটনা যাচাই না করেই রটনা! আপনার জানা থাকার কথা নয় যে দরগাহ মাদরাসা প্রতি বছর ৫০/৬০ হাজার টাকা ব্যয় করে রমজানের ক্যালন্ডার ছেপে বিনামূল্যে বিতরণ করে থাকে, আর আল কাসিম ফুযালা পরিষদ “সেহরী, ইফতার ও নামাজের স্থায়ী সময়সূচী” এর প্রতি কপিতে বার টাকা খরচ করে ছেপে অনেককে বিনামুল্যে আর বাকিদের কাছ থেকে দশ টাকায় বিক্রি করে থাকে, তাহলে এর থেকে কিভাবে বাণিজ্যিক আয় হয়, তা আপনারাই বিবেচনা করুন প্রিয় পাঠক! সেই লেখায় তিনি আল কাসিম ফুজালা পরিষদের এই খেদমতকে বলেছেন মনগড়া অথচ এটি তৈরী করা হয়েছে জ্যোতির্বিদ্যার নীতিমালা এবং পুরাতন সব ক্যালেন্ডারকে সামনে রেখে। এর সাথে আল কাসিম ফুজালা পরিষদের গবেষক দল অক্লান্ত পরিশ্রম করে যথাসম্ভব নিখুত সময়সুচী প্রনয়নের লক্ষ্যে হাওরে গিয়ে সচক্ষে সূর্যাস্ত, সূর্যোদয় ও সুবহে সাদিকের উদয় প্রত্যক্ষ করেছেন, আর এই আন্তরিকতার ফলেই এটি সিলেটের সর্বমহলে সমাদৃত হয়েছে। যদি মনগড়াই হত তাহলে এটি সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য হয় কি করে? উনি নাকি আবার দরগাহ মাদ্রাসায় ফোন করে ক্যালেন্ডার সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন, তিনি মাদরাসায় ফোন করে জিজ্ঞেস করেছেন “আপনাদের মাদ্রাসায় সময় নিরূপণের কোন মেশিন আছে কি না?” দেখুন এই হল উনার সাংবাদিকতার নমুনা! যে বিষয়ে তিনি তথ্য জানতে চান, সেই বিষয়ের দায়িত্বশীল ব্যাক্তির খোজ না করে মাদরাসার একজন সাধারন কর্মকর্তার কাছে গবেষণাধর্মী একটি বিষয়ে প্রশ্ন করে বসেন! তার উপর যেসব যন্ত্র আবহাওয়া অফিসে থাকে অইসব যন্ত্রের খোজ তিনি মাদরাসায় খোজেন! উনার প্রশ্নের ধরনেই বুঝা যায় তিনি সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চান আর কিছু নয়, সাথে আবার লক্বব লাগিয়েছেন সাংবাদিক, অথচ সাংবাদিকতার ব্যাসিক জ্ঞানই তার নেই! আমার জানা মতে, জামেয়া কাসিমুল উলুম দরগাহ মাদরাসা কর্তৃক প্রকাশিত ক্যালেন্ডার অনুসরন করে সিলেটের প্রায় প্রতিটি মাদরাসা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রমজানের ক্যালন্ডার প্রকাশ করে থাকে। এমনকি ঐ কথিত সাংবাদিক যাদের কাছ থেকে অল্প বিস্তর শিখেছেন বলে শুনেছি তারাও, তবে কি দরগাহ মাদরাসার সর্বজনগ্রাহ্য একটি খেদমত দেখে উনার ঈর্ষা হচ্ছে, অন্তত উনার সমালোচনার কুৎসিত ভাষাও তাই বলে, যিনি ঘটনমূলক সমালোচনা কাকে বলে সেটি জানেন না, জানেন না ইসলামের মৌলিক নীতিমালা, এমনকি যার নেই ন্যুন্যতম সাংবাদিকতার জ্ঞান! সেই তিনি নামের আগে গবেষক ও সাংবাদিক তকমা লাগিয়ে সামাজে ফিতনা আর ফ্যাসাদ তৈরী ছাড়া আর কিইবা করতে পারেন!

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: