শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

ধর্মপাশার ঐতহিাসকি সুখাইর জমদিার বাড়ী

সাইফ উল্লাহ:
সুনামগঞ্জরে ধর্মপাশা উপজলোর সুখাইর জমদিার বাড়ী। আনুমানিক ১৬৯১ সালে মোঘল শাসনামলে মহামানিক্য দত্ত রায় চৌধুরী হুগলী থেকে আসাম যাওয়ার পথে কালিদহ সাগরের স্থলভূমি ভাটির প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ হয়ে সুখাইড়ে জায়গির কেনেন।
ঐ সময় থেকেই সুখাইড়ে বাড়ি নির্মাণ পরিকল্পনা শুরু করেন মহামাণিক্য। পাশে পাহাড়ী নদী বৌলাই, হাওরের থৈ থৈ ঢেউ, বন ঝোপ আর সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশে সমৃদ্ধ থাকায় ১৬৯৫ সালে সুখাইড়ে ২৫ একর জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন জমিদার মোহনলাল। কয়েক পুরুষের চেষ্টায় শেষ হয়েছিল বাড়ির নির্মাণকাজ। জমিদারি যুগে সুনামগঞ্জ ছিল ৩২টি পরগনায় বিভক্ত। দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলীর কারণে সুখাইড় জমিদার বাড়ি হাওর রাজ্যের রাজমহল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল। এ জমিদারির বিস্তৃতি ছিল দক্ষিণে ঘাগলাজুর নদীর উত্তরপাড়, উত্তরে বংশীকুন্ডা, পশ্চিমে ধররমপাশা এবং পূর্বে জামালগঞ্জ। এক সময় এ বাড়ির মালিকানায় ছিল ধানকুনিয়া বিল, চারদা বিল, কাইমের দাইড়, সোনামোড়ল, পাশোয়া, ছাতিধরা, রাকলা, বৌলাই, নোয়ানদী, চেপ্টা এক্স হেলইন্নাসহ ২০টি জলমহল।
কথিত আছে, জমিদারা বাড়ি দেখতে আসেছিলেন ইংরেজ প্রশাসক বেলেন্টিয়ার। বাঘ শিকারের জন্য তিনি গিয়েছিলেন টাঙ্গুয়ার হাওরে। খবর এসেছে তিনটি বাঘ জিম্মি করে রেখেছে বেলেন্টিয়ারকে। পরে ঐ সময়ের জমিদার মইয়ুক চৌধুরী আইন লঙ্ঘন করে বাঘ তিনটিকে গুলি করে মেরে বেলেন্টিয়ারকে উদ্ধার করেন। এ জন্য মইয়ুক চৌধুরীকে একটি বন্দুক উপহার দেন ইংরেজ সাহেব।
মহামানিক্য দত্তের উত্তরাধিকারীরা “রায় চৌধুরী” উপাধিতে ভূষিত হওয়ার ইতিহাস জানাতে গিয়ে সুখাইড়ের জমিদারদের উত্তরাধিকারী মলয় রায় চৌধুরী জানান, তাদের পূর্বপুরুষের একজন সুখাইড়ে এসে সুন্দরী ও ধনাঢ্য এক দাস সম্প্রদায়ের মেয়েকে বিয়ে করে নিজের উপাধী পরিবর্তন করেন। এছাড়া মহামাণিক্যের চতুর্থ পুরুষ প্রতাপ রায় চৌধুরী সুখাইড় পার্শ্ববর্তী রাজাপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হয়ে রাজাসুরে চলে যান। তিনি ধর্মান্তরিত হলেও জমিদারির অর্ধেক পান তিনি। পরে রাজাসুরের জমিদার হন তিনি।
জমিদারি প্রথা বিলোপের পর জমিদারের উত্তরাধিকাররা অর্থ সংকটে পড়ে যান এবং অন্য পেশায় কোন রকমে চলছে তাদের জীবন। জমিদারি প্রথা বিলোপের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কিছু ধানের জমি এবং বাড়ির ২৫ একর জায়গা ব্যাতীত বাকী জায়গা-জমি চলে যায় সরকারের হাতে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: