শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৬ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
প্যারিসে আরেক মুসলিম তরুণের বীরত্বগাঁথা

প্যারিসে আরেক মুসলিম তরুণের বীরত্বগাঁথা

we187-300x169আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : শুক্রবার রাতে যখন গোলাগুলি শুরু হলো তখন সাফের প্যারিসের কাসা নস্ত্রা রেস্তোঁরার বারের পেছনে কাজ করছিলেন। যেখানে বসে তিনি প্রায় মরতে বসেছিলেন সেখানে দাঁড়িয়েই সেই বিভীষিকার কথা শান্তভাবে বলে চললেন। ‘আমি ছিলাম কাউন্টারে। আমরা বিস্ফোরণ শুনতে পেলাম-সত্যিই বিশাল আওয়াজ। সবাই হুড়োহুড়ি শুরু করল, গ্লাসগুলো আমাদের ওপর ভেঙে পড়তে শুরু করল। এটা ছিল ভীবৎস। সর্বত্র গ্লাস ছড়িয়ে পড়ে, আমাদের মুখে ওপর আঘাত করে। আমি দেখলাম ফুটপাতে দুজন নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন-একজন হাতে আর অন্যজন কাঁধে। সত্যিই তাদের ভীষণ রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।’ বিপদ আসন্ন জেনেও সেফার তাদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি গোলাগুলি থামার অপেক্ষায় ছিলেন। এরপর আহত দুই নারীকে ভেতরে নিয়ে এলেন। ‘আমি তাদের তুলে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নীচ তলায় দ্রুত নেমে পড়লাম। আমি তাদের নিয়ে বসে পড়লাম এবং রক্ত বন্ধের চেষ্টা করলাম।’ ‘সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামার সময়ও আমরা শুনতে পেলাম যে উপরে গোলাগুলি চলছে। এটা ছিল ভীতিকর অবস্থা।’ তবে আতঙ্কিত হলেও তারা আরো অনেক খারাপ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পান। ‘আমরা যখন বেরিয়ে এলাম তখন দেখলাম রাস্তায় বহু লাশ পড়ে আছে। অনেকে আহত হয়েছেন।’ কাসা নস্ত্রা এলাকাটিতে মিশ্র বর্ণের মানুষের বাস। এখানে বহু মুসলিম থাকেন যাদের অনেকে আরব বংশোদ্ভূত। প্যারিসের প্রধান মুসলিম অধ্যুষিত এই এলাকাটির বহু মুসলমানই শুক্রবারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ। ‘আমরা তাদের মত নই,’ হামলাকারীদের সম্পর্কে বলছিলেন ৪৪ বছর বয়সী জামাল। ‘তাদের ব্যাপারে আমাদের তো করার কিছু নেই। আমরা বিরক্ত।’ তবে এই হামলা যে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে জামালও বিচলিত। ‘ফরাসিরা আমাদের গ্রহণ করে না’ বলছিলেন তিনি। এসব লোক কেন আল্লাহর নামে অনিষ্ট করতে চায়? তাদের জীবনে ভুলটা কোথায়? ফ্রান্সে বিশেষ কোনো সমস্যা রয়েছে কি? এসব প্রশ্নের জবাব নেই আলজেরীয় বংশোদ্ভূত সেফারের কাছেও। সেফারের এ ঘটনা আমাদের গত জানুয়ারিতে প্যারিসে হামলায় সময় একইভাবে কোসার সুপারমার্কেটে বহু লোকের জীবন বাঁচাতে সহায়তাকারী মালির তরুণ অভিবাসী লাসানা বাথিলির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তারা উভয়েই মুসলিম। তারা উভয়ই নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যের জীবন বাঁচিয়েছেন- যেখানে ইসলামের নামে বহু লোক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। ফ্রান্সের মুসলিম সমাজে সম্ভবত এটাই বৈপরীত্য। সেফারকে জিজ্ঞাসা করা হলো- ইসলামের নামে হত্যা করার দাবি সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া কী? ‘এর সাথে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। সত্যিকার মুসলিমরা মানুষ হত্যা করতে পারে না। এরা ক্রিমিনাল।’ সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: