বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৫ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

ফসল ফললো চাঁদে

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম ডেক্স:

চাঁদে প্রাণের বিকাশ হল। এই প্রথম। তুলো ফলল পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে। তুলোর বীজ ফেটে বেরিয়ে এল রাশি রাশি তুলো। চাঁদেরই তাপমাত্রায়। চিন্তা মিটল বিজ্ঞানীদের। চাঁদে, মঙ্গলে মহাকাশচারীদের জন্য আর পুষ্টিকর শাকপাতা পৃথিবী থেকে নিয়ে যেতে হবে না। সেই সব নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঠাতে হবে না ‘রিসাপ্লাই মিশন’। মঙ্গলবার এই সুখবর দিয়েছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেলি। খবর সিনহুয়া।
অস্ট্রেলিয়ান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরির অ্যাস্ট্রোনমার-অ্যাট-লার্জ ফ্রেড ওয়াটসন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘অত্যন্ত সুখবর। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে, চাঁদে বা মঙ্গলে মহাকাশচারীদের খাওয়ার জন্য শাক, আনাজপাতি ফলিয়ে নিতে আর বোধহয় অসুবিধা হবে না।’
একই কথা বলেছেন চাঁদের মাটিতে নামা চীনা ল্যান্ডারে ওই সফল পরীক্ষার মূল ‘কারিগর’ চিফ ডিজাইনার অধ্যাপক শি গেঙশিন। তার কথায়, ‘যেখানে মাধ্যাকর্ষণ বল প্রায় নেই বললেই চলে, সেখানেও কী ভাবে গাছপালা বেড়ে ওঠে, বেড়ে উঠতে পারে এই প্রথম আমরা তা বুঝতে পারলাম। যা আগামী দিনে মহাকাশে সভ্যতার দ্বিতীয় উপনিবেশ গড়ে তোলার পথ দেখাবে।’
পিপলস ডেলি টুইট করে দিয়েছে চাঁদের মাটিতে নামা চীনা ল্যান্ডারে বীজ ফেটে বেরিয়ে আসা রাশি রাশি তুলোর ছবি। ক্যাপশন করেছে, ‘চাঁদে এই প্রথম মানবসভ্যতা জীববিজ্ঞানের পরীক্ষাটা সফল ভাবে শেষ করতে পারল।’ আর সেটা ঘটল চাঁদের সেই প্রান্তে, যে দিকটা কোনও দিনই দেখা যায় না পৃথিবী থেকে। যে দিকে দিনকয়েক আগে এই প্রথম ‘পা’ রেখেছে সভ্যতা। নেমেছে চীনা ল্যান্ডার ‘চাঙ্গে-৪’। গত ৩ জানুয়ারি। তার নতুন একটা নামও হয়েছে। ‘ইউতু-২’।
চীনা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ‘চাঙ্গে-৪’ ল্যান্ডারে চাপিয়ে চাঁদে পাঠানো হয়েছিল তুলো, আলু, ইস্টের বীজ। আর ফ্রুট ফ্লাইয়ের ডিম। চাঁদের তাপমাত্রায়, পরিবেশে উদ্ভিদ আর প্রাণীর বিকাশ হয় কি না, দেখতে। বিজ্ঞানীরা দেখতে চেয়েছিলেন, উদ্ভিদের বাড়বৃদ্ধির জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরি, সেই সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াটা চাঁদে হয় কি না। দেখতে চেয়েছিলেন, শ্বাস নিয়ে ফ্রুট ফ্লাইয়ের ডিম ফেটে বাচ্চা বেরিয়ে আসে কি না। ল্যান্ডারে রাখা ১৮ সেন্টিমিটার লম্বা আর তিন কিলোগ্রাম ওজনের একটি ক্যানিস্টারের মধ্যেই পরীক্ষাটা চালানো হয়।
উৎক্ষেপণের পর পৃথিবী থেকে চাঁদে পৌঁছতে ল্যান্ডারটির লেগেছিল ২০ দিন। ওই ২০ দিন সুপ্ত অবস্থায় রাখা হয়েছিল বীজগুলিকে। কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা পরিবেশে। চাঁদে পৌঁছতেই গ্রাউন্ড কন্ট্রোল থেকে কম্যান্ড পৌঁছয় চীনা ল্যান্ডারে- ‘পানি ছেটাতে শুরু কর।’ সঙ্গে সঙ্গে ঝরে পড়ল পানি, যতটা প্রয়োজন। দেওয়া হল বাতাস। বেড়ে ওঠার জন্য দরকার আর যা যা পুষ্টিকর উপাদান, সব কিছুই। তাতেই কেল্লা ফতে! তুলোর বীজ ফেটে বেরিয়ে এল রাশি রাশি তুলো।
একটাই চ্যালেঞ্জ ছিল বিজ্ঞানীদের সামনে। তা হল, চাঁদের এক জায়গার তাপমাত্রা শূন্যের ১৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে তো অন্য এক জায়গার তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ল্যান্ডারের গতির সঙ্গে সেই তাপমাত্রার রদবদল ঘটছে অতি দ্রুত হারে। এই পরিস্থিতিতে কী বেঁচে থাকবে বীজ, পারবে বেড়ে উঠতে গায়ে-গতরে, যথেষ্টই সংশয় ছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: