বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার মারাত্মক অবনতি হচ্ছে: মার্কিন কমিশনের রিপোর্ট

ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার মারাত্মক অবনতি হচ্ছে: মার্কিন কমিশনের রিপোর্ট

আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:

ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার মারাত্মক অবনতি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এজেন্সির দ্য ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে ভারতকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের কালো তালিকায় রাখার প্রস্তাব করেছে কমিশন।

বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে খর্ব হচ্ছে। কেন্দ্রীয় এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহ্য করছে।’ সেখানে বলা হয়েছে, ‘বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার সিএএ চালু করেছে। এর মাধ্যমে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হচ্ছে।

এটি কয়েক লাখ মুসলিমের আটক হওয়ার শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ভারতে ক্রমাগত নিচের দিকে যাচ্ছে। দেশটিতে হিন্দুত্ববাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।’ গত বছর নয়াদিল্লিতে মারাত্মক দাঙ্গার সময় মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও পুলিশের নির্যাতনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার হিন্দু জাতীয়তাবাদী নীতিগুলি প্রচার করেছে যার ফলে নিয়মতান্ত্রিক, চলমান এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন হয়েছে। এ ছাড়াও মোদি সরকারের পরিচালিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিশ্লেষকদের মতে, এই আইনের ফলে ভারতের মুসলিমরা নাগরিকত্ব হারাতে পারেন। প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ভারতবর্ষের বৃহত্তম রাজ্য উত্তর প্রদেশসহ বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে আন্তঃধর্মীয় বিয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত সরকার ভিন্নমত দমনের চেষ্টা করছে।

তবে ভারতের বিষয়ে এই সুপারিশের বিরোধিতা করেছেন কমিশনের একজন সদস্য জনি মুর। তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক বিবৃতিতে মুর বলেন, ভারতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের অধিকারক্ষুণ্ন হয়েছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, ভারত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র, যেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে সাংবিধানিক গ্যারান্টি রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সমস্ত দেশগুলির মধ্যে ভারতের একটি বিশেষ উদ্বেগের দেশ হওয়া উচিত নয়। এটি একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ এবং এর ধর্মীয় অবস্থান ঐতিহাসিকভাবেই স্বীকৃত।’

ভারত ছাড়াও কমিশন স্টেট ডিপার্টমেন্টকে রাশিয়া, সিরিয়া এবং ভিয়েতনামকে কালো তালিকায় যুক্ত করার আহবান জানিয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদনে ১৪টি দেশকে ধর্মীয় স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণে ‘বিশেষ উদ্বেগের’ বলা হয়েছে। দেশগুলি হচ্ছে- মিয়ানমার, চীন, ইরিত্রিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তান, সউদী আরব, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, ভারত, রাশিয়া, সিরিয়া এবং ভিয়েতনাম। ইতিমধ্যে স্টেট ডিপার্টমেন্টের বø্যাক লিস্টে থাকা অন্যান্য দেশগুলি হচ্ছে- ইরিত্রিয়া, ইরান, মায়ানমার, নাইজেরিয়া, উত্তর কোরিয়া, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান। এই দেশগুলোতে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের রক্ষায় দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নিলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অবরোধের মুখোমুখি হবে অথবা দেশটির সহযোগিতা হারাবে।

গত বছরও ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্বের কালো তালিকায় রাখার প্রস্তাব করেছিল ওই কমিশন। সে সময় ওই প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবারও যে মার্কিন সরকার এই প্রতিবেদন আমলে নেবে এবং ভারতের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে, সেই সম্ভাবনা খুব কম। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: