শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত প্রচুর কাঁচা চামড়া

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছে মজুত প্রচুর কাঁচা চামড়া

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম:

কাঁচা চামড়ার নজিরবিহীন দরপতনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মৌসুমি ব্যবসায়ী ও চামড়ার টাকার সুবিধাভোগীরা। সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা। চামড়া বিক্রি করতে না পারায় চট্টগ্রামে কয়েক শত মৌসুমি ব্যবসায়ীর অন্তত ৫ কোটি টাকা পানিতে গেছে। লোকসানেও আড়তদারদের কাছে সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রি করতে পারেনি তারা। ফলে এসব মূল্যবান চামড়া বাধ্য হয়ে ফেলে দিতে হয়েছে।

বাঁশখালীর চানপুর এলাকার সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল ইসলাম লাভের আশায় দুই শত পিস কোরবানির পশু চামড়া সংগ্রহ করে চাক্তাই চামড়ার গুদাম এলাকায় নিয়ে আসে। কিন্তু অনেক চেষ্টা করে ক্রয়মূল্যের চেয়ে ১০০ টাকা কমে বিক্রি করতে পারেনি তিনি। দীর্ঘক্ষণ লবণ না দেওয়ায় পরের দিন সকালে চামড়া পচন ধরে গেছে। পরে ফেলে দিতে হয়েছে তার সংগ্রহ করা চামড়া। আবার যেসব মৌসুমি ব্যবসায়ী লোকসানের কারণে চামড়া বিক্রি করেনি তারা লবণযুক্ত করে বিভিন্ন স্থানে মজুত করে রেখেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর পোস্তার পাড়া, ফরিদাপাড়া, অক্সিজেন, মোহরা, পাহাড়তলী, সিএনবি, শিকলবাহা, পটিয়া, আনোয়ারা এলাকায় তাঁবু টাঙিয়ে লবণযুক্ত করে রাখা হয়েছে কাঁচা চামড়া।

চট্টগ্রামে সমিতিভুক্ত ১১২ জন আড়তদার চামড়া ব্যবসায়ী রয়েছে। এর বাইরেও প্রায় ৫০/৬০ জন আড়তদার রয়েছে। আড়তদার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অর্থসংকটে তারা চাহিদা অনুপাতে চামড়া সংগ্রহ করতে পারেনি। ঢাকার ২০/২৫ জন ট্যানারি মালিক চট্টগ্রাম থেকে নিয়মিত চামড়া সংগ্রহ করেন। এসব ট্যানারির কাছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ৩ বছর আগের বকেয়াও রয়েছে। কথা ছিল কোরবানির আগে বকেয়া টাকার একটি অংশ ট্যানারিগুলো পরিশোধ করবে। কিন্তু ট্যানারিগুলো কোনো টাকা পরিশোধ না করায় অর্থসংকটে পড়ে আড়তদার ব্যবসায়ীরা। এতে তারা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করতে পারেনি।

মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের প্রস্তুতি থাকে না। তাদের কাছে কাঁচা চামড়া পরিষ্কার করে লবণযুক্ত করার দক্ষ শ্রমিক নেই। শুধুমাত্র স্থায়ী আড়তদারদের কাছে এ ধরনের দক্ষ শ্রমিক রয়েছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে সরাসরি আড়তদারদের কাছে বিক্রি করে থাকেন। ফলে সংরক্ষণের প্রস্তুতি না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা।

চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মুসলিম উদ্দিন বলেন, অর্থসংকটে আমরা সস্তায়ও চামড়া কিনতে পারেনি। মৌসুমি ব্যবসায়ী বাজার পরিস্থিতি না বুঝে চামড়া সংগ্রহ করেছে। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় চট্টগ্রামের আড়তদার ব্যবসায়ীরা চরম অর্থসংকটে পড়ে। আমি ৪ হাজার পিস চামড়া কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু অর্থসংকটে পারেনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, চট্টগ্রামের আড়তদার ব্যবসায়ীরা ঢাকার ২০/২৫টি ট্যানারির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ট্যানারির কাছে বাধ্য হয়ে বিক্রি করতে হয়। ফলে সরকারের কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানায়।

আড়তদার ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রামে মাত্র দুটি ট্যানারি রয়েছে। তারা নগদে চামড়া কিনে থাকেন। তাদের চামড়া সংগ্রহের সক্ষমতাও সীমিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: