শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
রওশনকে এরশাদ: ‘আপনার প্রস্তাব বিবেচনা করতে না পারায় দুঃখিত’

রওশনকে এরশাদ: ‘আপনার প্রস্তাব বিবেচনা করতে না পারায় দুঃখিত’


as1245 copyআমার সুরমা ডটকম : 
দলের কো-চেয়ারম্যান পদে জিএম কাদেরকে দায়িত্ব প্রদান ও মহাসচিব পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার সুযোগ নেই জানিয়ে জাতীয়পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদকে চিঠি দিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
এরশাদের সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানিয়ে রওশন এরশাদের বিবৃতির প্রেক্ষিতে পাল্টা বিবৃতিতে এরশাদ জানান, তার নেয়া সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। এরশাদ বলেন, গঠনতান্ত্রিকভাবেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয়পার্টিতে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দলের মধ্যে কোনো বিবেধ বা অনৈক্য নেই। পার্টি আগামীতে সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী হবে বলে বেগম রওশন এরশাদকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। আজ রোববার এই বিষয়টি তিনি রওশন এরশাদকে পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। রওশন এরশাদকে লেখা এরশাদের চিঠিটি পাঠকদের জন্য হুবহু প্রকাশ করা হলো।
প্রিয় সহকর্মী-
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। “২৩ জানুয়ারি শনিবার মিডিয়ায় প্রেরিত আপনার একটি বিবৃতির প্রতি আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। সেখানে আপনি দু’টি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন। প্রথমতঃ সম্প্রতি পার্টিতে জিএম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদান এবং মহাসচিব পদে রদবদলের বিষয়টি পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। দ্বিতীয়তঃ বিগত মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু যে, আপনাকে “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন” হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন-তা আপনি নাকোচ করেছেন।
দ্বিতীয় বিষয়ের “ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান”-বিভ্রান্তি দূর করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। প্রথম প্রসঙ্গের বিষয়টি আপনাকে স্পষ্ট করতে চাই। জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান করার ব্যাপারে আপনারও সম্মতি ছিল।
কো-চেয়ারম্যান জাতীয়পার্টির কোন গঠনতান্ত্রিক পদ নয়। পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে সংগঠনের প্রয়োজনে আমি কোন পদ সৃষ্টি বা কাউকে কোনো বিশেষ দায়িত্ব প্রদান করতে পারি। আমি গঠনতন্ত্রের বহির্ভূত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি নাই। জাতীয়পার্টির গঠনতন্ত্রে যা রয়েছে-সেটাই আমাদের পার্টির গঠণতন্ত্র। ৩৯ ধারাটি তারই অংশ। এই ধারাটি আমার সৃষ্টি করা নয়। গঠনতন্ত্র আমি নিজে প্রণয়ন করি নাই। এটি একটি কমিটি দ্বারা প্রণীত এবং পার্টির জাতীয় কাউন্সিল দ্বারা অনুমোদিত। ৩৯ ধারা যদি সংশোধন বা বাতিল করতে হয় তা শুধু পরবর্তী কাউন্সিলেই হতে পারে। তার আগে গঠনতন্ত্রের কোনো ধারা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হবে-গঠনতন্ত্রের অবমাননা, পার্টি শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং দলীয় গণতন্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা।
মহাসচিব পদে রদবদল প্রসঙ্গে আপনাকে অবগত করতে চাই যে, জিয়াউদ্দিন বাবলুকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছি। তিনি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে মিডিয়ার কাছে আপনাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। এটা ছিল দলকে বিভক্ত করার একটি ঘৃন্য ষড়যন্ত্র। সে কারণে, জনাব বাবলুকে যে ধারামতে তাকে মহাসচিব করা হয়েছিল-সেই ৩৯ ধারাতেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আপনার নিশ্চয়ই জানা আছে যে, জাতীয়পার্টি প্রতিষ্ঠার পরবর্তীতে যে ক’জন মহাসচিবের দায়িত্ব লাভ করেছেন-তারা প্রথমে এই ধারা মতেই নিয়োগ লাভ করেছেন। পরবর্তীতে কাউন্সিলের মাধ্যমে তারা মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথমে এই ধারার বিষয়বস্তু ৪৬ ধারার অন্তর্গত ছিল। সর্বশেষ কাউন্সিলে সংশোধনীর মাধ্যমে এটি ৩৯ ধারায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। যে, দু/একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য এখন ৩৯ ধারা নিয়ে বিতর্ক করছেন তারাও কিন্তু এই ৩৯ ধারা মোতাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। বলা প্রয়োজন যে, অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং প্রথম মহাসচিব বাদে সকল-মহাসচিবই কোনো না কোনো সময়ে এই ধারা বলে দায়িত্ব লাভ করেছেন। তখন কিন্তু এই প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো প্রশ্ন আসেনি।
আপনি আমাদের সাংগঠনিক কাঠামো সম্পর্কে অবগত আছেন যে, সংসদীয় কমিটি দলীয় নীতি-নির্ধারণের কোনো শাখা নয়। একমাত্র প্রেসিডিয়ামেরই পার্টির নীতি-নির্ধারণের এবং কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা অনুমোদনের এখতিয়ার রয়েছে। সুতরাং দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রেসিডিয়াম বাদে অন্য কোনো শাখার মতামত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নেই।
আপনি পার্টির একজন শীর্ষ নেতা এবং সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে পার্টির চেয়ারম্যানের কাছে কোনো বিষয়ে আবেদন, নিবেদন কিংবা বিবেচনার আহ্বান জানাতেই পারেন। সেটা আপনার সাংগঠনিক অধিকার। তবে পার্টির স্বার্থে বিবৃতিতে উল্লেখিত আপনার প্রস্তাবটি বিবেচনা করতে পারলাম না বলে দুঃখিত। আশা করি আপনিও পার্টির সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করবেন।
আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, পার্টির মধ্যে কোনো বিভেদ বা অনৈক্য থাকবেনা। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পার্টিকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবো। আপনি সংসদীয় দলের নেতৃত্বে আছেন, আমি পার্টির নেতৃত্বে আছি। আমাদের উভয়ের মিলিত প্রচেষ্টায় জাতীয়পার্টি আগামী দিনে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।”

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: