শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
লন্ডনে নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় : দেশের মানুষ শান্তির জন্য পরিবর্তন চায় : খালেদা জিয়া

লন্ডনে নেতাকর্মীদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় : দেশের মানুষ শান্তির জন্য পরিবর্তন চায় : খালেদা জিয়া

file (93)আমার সুরমা ডটকম : বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন বর্তমান অবৈধ সরকারের দমন-পীড়ন আর অত্যাচারে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। মানুষ ঠিক মত ঘুমাতে পারে না। দেশে সেই বাকশালের মতো অবস্থা চলছে। পুরো দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। দেশের মানুষ এসবের পরিবর্তন চায়। শান্তি, উন্নয়ন ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি চায়। তাই বিএনপির পেছনে জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ। সামনে সুদিন আসবেই। পবিত্র ঈদ উল আজহা উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এক্সেসের ইলফোর্ডে ফেয়ারলপ ওয়াটারস কাউন্টি পার্কের দি লেকভিউ হলে অনুষ্ঠিত হাজার হাজার প্রবাসীর উপস্থিতে স্মরণকালের এই বৃহত্তম সমাবেশে বিশেষ অতিথির শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শুভেচ্ছা বিনিময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান। অনুষ্ঠান হলের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বিপুল লোক সমাগমের কারণে নিরাপত্তারক্ষী ও স্বেচ্ছাসেবকদের বেশ বেগ পেতে দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে লাইনে থেকেও অনেকে তাদের প্রিয় নেত্রীর কাছাকাছি পৌঁছেতে পারেননি বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে মানুষের কোনো মৌলিক অধিকার নেই, মানবাধিকার নেই, আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই। বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীদের ওপর বিশ থেকে একশটির মতো মামলা রয়েছে। এই হল বাংলাদেশ। যেখানে মানুষ ঠিক মত ঘুমাতে পারে না। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে।বর্তমান সরকারকে অবৈধ ও অনির্বাচিত উল্লেখ করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিতে কেন্দ্রে যায়নি, ভোট কেন্দ্রগুলো ছিলো ফাঁকা। নির্বাচনের আগেই ১৫৪ জনকে বিনা ভোটে এমপি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বিনা ভোটের এই সরকারকে জনগণ বৈধ বলে মেনে নেয়নি। তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে। সাবেক এই প্রধনমন্ত্রী বলেন, উপজেলা নির্বাচন, মেয়র নির্বাচনে বিএনপির জয়লাভই প্রমাণ করে জনগণ বিএনপির পেছনে ঐক্যবদ্ধ। তাই তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে চায় না। নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়লে সরকার পার পাবে না।খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী দল ও মতের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশের মাধ্যমে এ সরকারকে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কাউকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশে সেই বাকশালের মতো অবস্থা চলছে।তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একদিন রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে। দেশে সংবাদপত্রের কোনো স্বাধীনতা নেই উল্লেখ বেগম জিয়া বলেন, সাংবাদিকরা সত্যি কথা লিখতে পারে না। সত্যি কথা লিখলে তাদের নামে মামলা হয়, জেল হয়। যারা টকশো-তে সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের সমালোচনা করে তাদেরকে টকশো-তে আসতে দেয়া হয় না। সংবাদপত্রে বা টেলিভিশনে বিরোধী দলের কিছু প্রচার করতে দেয়া হয় না। তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এতে তাদের গায়ে জ্বালা ধরে যায়।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় আতংক হল খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। কিছু হলেই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম। একদলীয় পার্লামেন্টে বসে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও জিয়াউর রহমানকে গালিগালাজ করা ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই।বেগম জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে। প্রতি মুহূর্তে দেশের মানুষ খুন ও গুম হচ্ছে। চলছে অত্যাচার, অনাচার আর গুমনীতি। কোনো উন্নয়ন নেই। দেশের মানুষ এসবের পরিবর্তন চায়। চায় শান্তি, উন্নয়ন ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি।এই সরকারের পক্ষে পদ্মা সেতু করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বাংলাদেশের জনগণ বিএনপিকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে। আর বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ইনশা আল্লাহ পদ্মা সেতু তৈরি করবে।বাংলাদেশকে বাঁচাতে সকলের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে উল্লেখ বেগম জিয়া বলেন, বিএনপি শান্তি উন্নয়ন গণতন্ত্র ও জনগণের কল্যাণে বিশ্বাস করে। তাই আমরা জাতিকে বিভক্ত করে নয়, বরং ঐক্যবদ্ধ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করতে চাই। যাতে ব্রিটেনের মতো নিরপেক্ষ ভোট হবে। আর এই ভোটে জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে সেইও হবে জনগণের প্রতিনিধি। ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে জয়ের মধ্যে কোনো শান্তি নেই, কোনো আনন্দ নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যেও ভালো ও দেশপ্রেমিক লোক আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাদের সঙ্গে নিয়েই তিনি দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, গণতন্ত্র না থাকলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও শিক্ষার ওপর ভ্যাটের সমালোচনা করে বেগম জিয়া বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে সরকার ভ্যাট প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে।দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বেগম জিয়া বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একসময় দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। বাংলাদেশের মানুষ দেশে পরিবর্তন দেখতে চায়, গণতন্ত্র দেখতে চায়, মানবাধিকার মৌলিক অধিকার ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চায়।অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, মিন্টুর পুত্র তাবিথ আউয়াল, মুশফিকুল ফজল আনসারী প্রমুখ।এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও কয়ছর এম আহমেদের পরিচালনায় বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টা শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সহ- সভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, আক্তার হোসেন, মঞ্জুরু সামাদ চৌধুরী মামুন, প্রফেসর ফরিদ আহমেদ, লুৎফুর রহমান, শামিম আহমেদ, মুজিবুর রহমান মজিব, সাবেক ছাত্র নেতা পারভেজ মল্লিক, নসরুল্লাহ খান জোনায়েদ, যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা কামাল আহমেদ, তাজউদ্দিন, ব্যরিস্টার মওদুদ আহমেদ খান, আব্দুস সাত্তার, ব্যরিস্টার এম এ সায়েম, শরীফুজ্জামান চৌধুরী তপন, নাসিম আহমেদ চৌধুরী, নাসির আহমেদ শাহিন, দেওয়ান মোকাদ্দিম চৌধুরী নিয়াজ, আবুল হোসেন, আব্দুস সালাম প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: