শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
শপথ নেয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য

শপথ নেয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম:

একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী বিএনপির নির্বাচিত ৫ জনপ্রতিনিধি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন। বাকি আছেন শুধু মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি শপথ নেবেন কিনা সেটি নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন দলটির লাখ লাখ নেতাকর্মী।

মির্জা ফখরুল কি শেষ পর্যন্ত শপথ নিচ্ছেন-এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিলেও গতকাল শপথ না নেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত এ জনপ্রতিনিধি।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব জানান, দলীয় সিদ্ধান্তেই তিনি শপথ নেননি।

আওয়াজ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন আয়োজিত ‘উন্নয়নের মৃত্যুকূপে জনজীবন/নুসরাত একটি প্রতিবাদ’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি শপথ নেইনি। এটিও দলীয় সিদ্ধান্ত ও আমাদের কৌশল।’

সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার জন্য সময় বাড়াতে সংসদে কোনো আবেদন করেননি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে আমি নাকি সময় চেয়ে আবেদন করেছি। আসলে আমি কোনো চিঠিই দিইনি। সময়ও চাইনি। এটিও আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। এটি আমাদের কৌশল।

বিভিন্ন মিডিয়ার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম বলেছেন- আমি নাকি আজকে শপথ নেব। তারা এখন কী লিখবেন।’

সাংবাদিকদের একটি চিরকুট দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে একটি চিরকুট এসেছে। এতে লেখা আছে- এত অস্থির কেন আপনারা? আমরা গতবার আমাদের সংবাদ বিবরণী সম্মেলনে স্পষ্ট করে যা বলেছি, আমি ধন্যবাদ জানাই ঠিক যা বলেছি আপনারা তা উপস্থাপন করেছেন আপনাদের পত্রিকায়, আপনাদের চ্যানেলে। একই সঙ্গে আমি খুব অবাক হয়েছি, বিস্মিত হয়েছি। কিছু কিছু পত্রিকা, কিছু কিছু চ্যানেল সেটাকে আবার একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন, যেটা আমরা বলিনি, যেটা আমরা করিনি।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘খুব জোরেশোরে চ্যানেল থেকে বলা হচ্ছে, আমি (মির্জা ফখরুল) ব্যক্তিগতভাবে বগুড়া থেকে নির্বাচিত হয়েছিলাম, আমি শপথ নেয়ার জন্য সময় চেয়েছি, আবেদন করেছি, যা একটি ভয়াবহ মিথ্যা। সোজাসাপ্টা ও সরল কথা হচ্ছে- আমি কোনো চিঠি দিইনি, কোনো সময় চাইনি। আমি বোঝাতে পেরেছি?’

তিনি বলেন, ‘এখন আপনারা অনেকে প্রশ্ন করেন যে, আপনার দলের সিদ্ধান্ত হলো আপনি শপথ নিলেন না কেন? এটিও আমার দলের সিদ্ধান্ত।’

সাংবাদিকতার নীতি বজায় রেখে সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, একটি পত্রিকা লিখেছে- মির্জা ফখরুলের সংসদে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমি যদি শপথ না নিই সে ক্ষেত্রে কী হবে? আপনার সাংবাদিকতা কোথায় যাবে? তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ- রিপোর্ট করার আগে জার্নালিস্ট ইথিকস বজায় রাখবেন। সঠিক সংবাদ প্রকাশ করবেন।

শপথ নেয়ার বিষয়ে বিদেশিদের চাপ নেই জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদেশিদের সঙ্গে কথা বলে নয়, বিশ্ব রাজনীতি দেখে আমরা সংসদে গিয়েছি। কথা বলার ন্যূনতম যে সুযোগ এটা কাজে লাগাতে দানবকে পরাজিত করার জন্য শপথ নিয়েছি।

‘আমাদের সুযোগ ন্যূনতম কাজে লাগাতে চাই। সময়ের প্রয়োজনে অনেক কিছু হয়। সময় ঠিক করে দেবে আমাদের সিদ্ধান্ত ভুল না ঠিক’-যোগ করেন তিনি।

সরকারের সঙ্গে কোনো আপস হয়নি জানিয়ে মির্জা ফখরুল জানান, সমঝোতা করলে অনেক আগেই করতেন। খালেদা জিয়া সমঝোতা করলে এখন প্রধানমন্ত্রী থাকতেন। তিনি কখনই নীতির প্রশ্নে আপস করেননি।

তিনি বলেন, সরকারের সঙ্গে কোনো আপস কিংবা সমঝোতার যে কথা বলা হচ্ছে, সেটির প্রশ্নেই ওঠে না। সেটি যদি হতো, তবে কিছুদিন আগেও আমার নামে নতুন করে যে মামলা দেয়া হয়েছে সেটি নিশ্চয়ই হতো না। আমাদের কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাদের বিনাবিচারে জেলে থাকতে হতো না।

তিনি বলেন, গতকাল থেকে রাজনীতি গরম হয়ে গেছে। এটা নিঃসন্দেহে চমকের মতো সংবাদ। ইউটার্ন মনে করতে পারেন। আমাদের সিদ্ধান্ত অন্যরকম ছিল। ৩০ ডিসেম্বর কোনো নির্বাচন হয়নি প্রহসন হয়েছে। খুব খারাপ সিদ্ধান্ত বলে মনে করি না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে, আমরা মনে করি যে সেটা কোনো নির্বাচনই ছিল না। ২৯ ডিসেম্বর রাতেই নির্বাচনের ভোট চুরি হয়ে গেছে। পুরোপুরিভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে, জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে শাসক দল যারা অর্থাৎ যারা রাষ্ট্রক্ষমতা ধরেছিল তা তাদের দিকে নিয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত তারা সবাই এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে জনগণকে বঞ্চিত করেছে। তখন জনগণের যে ক্ষোভ ছিল সেই ক্ষোভের ধারাবাহিকতায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমরা সংসদে শপথগ্রহণ করব না।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহিদা রফিক, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: