বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
সিলেটে এক প্রকল্পে কর্মসংস্থান হবে ৫০ হাজার মানুষের!

সিলেটে এক প্রকল্পে কর্মসংস্থান হবে ৫০ হাজার মানুষের!

আমার সুরমা ডটকম:

বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে দেশের প্রথম ইলেকট্রনিক্স সিটি গড়ে ওঠছে সিলেটে। প্রকৃতিকন্যা সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকায় নির্মিত হচ্ছে এই ইলেকট্রনিক্স সিটি (হাইটেক পার্ক)। এই ইলেকট্রনিক্স সিটির যাত্রার মধ্য দিয়ে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এক নতুন বিপ্লবের সূচনা হবে। এখানে অর্ধ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সাথে সাথে উদ্ভাবিত হবে নিত্যনতুন সব সফটওয়্যার। সেসব সফটওয়্যার দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি করা হবে বিদেশে। ফলে একদিকে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ ও দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নেয়া এবং অন্যদিকে বিদেশে সফটওয়্যার রফতানি-এ দুইয়ের মধ্য দিয়ে সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটি ডিজিটাল বাংলাদেশের এক নতুন সম্ভাবনার সারথি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জে নির্মিত হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স সিটি। ১৬২.৮৩ একর জমির ওপর এই সিটি গড়ে তুলতে ব্যয় হচ্ছে ৩৭৮ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মেগা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর শুরু হয় ভূমি উন্নয়নের কাজ। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী পরিচালিত ডক-ইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে।

সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে এই ইলেকট্রনিক্স সিটিতে ইতিমধ্যেই ভূমি উন্নয়ন, সেতু, ৪ হাজার স্কয়ার ফুটের আইসিটি ইনফরমেশন সেন্টার, ৩৩ কেভিএ বৈদ্যুতিক সংযোগ, গভীর নলকূপ, অভ্যন্তরীণ সড়ক, গ্যাস লাইন স্থাপন, সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ প্রভৃতি কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে আইটি বিজনেস সেন্টার, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ভবন নির্মাণ প্রভৃতি কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। প্রায় ৬শ’ শ্রমিক এই প্রকল্পে কাজ করছেন। সংশ্লিষ্টরা ২০১৯ সালের শুরুর দিকে এই ইলেকট্রনিক্স সিটি পুরোদমে চালুর আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ইলেকট্রনিক্স সিটি দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন বিপ্লবের সূচনা করবে। এখানে দুটি অংশ থাকছে। একটি অংশে আইটি ইন্ডাস্ট্রি এবং অন্য অংশে থাকবে আবাসন, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, শপিং কমপ্লেক্স প্রভৃতি। আইটি ইন্ডাস্ট্রি অংশে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার উৎপাদন, বিমানের যন্ত্রাংশ তৈরী, বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন, শেখ কামার আইটি ট্রেনিং সেন্টার প্রভৃতি থাকবে। এখানে উৎপাদিন সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার দিয়ে দেশের চাহিদা পুরোপুরি মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা হবে। যাত্রা শুরুর পর বছর কয়েক কোটি ডলারের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার রফতানিতে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

এই ইলেকট্রনিক্স সিটির দুটি ট্রেনিং সেন্টারে গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অপারেশন, জাভা এসই-৮ প্রোগ্রামিং, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সার্ভার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, বিপিও, ই-কমার্স, এস কিউ, কোর হার্ডওয়ার্ক অ্যান্ড অপারেটিং সিস্টেম, এল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ওরাকল প্রভৃতি বিষয়ে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এই ইলেকট্রনিক্স সিটি পুরোদমে যাত্রা শুরু করলে এখানে প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে আইটি খাতে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী তরুণ-তরুণীদের জন্য এই সিটি হবে বৃহৎ এক কর্ম এলাকা।

সম্প্রতি এই ইলেকট্রনিক্স সিটি পরিদর্শনে এসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এই সিটিতে অর্ধ লাখ মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এই সিটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এখান থেকে উদ্ভাবিত সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার বিদেশেও রফতানি করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে হাইটেক শিল্পের বিকাশ, মৌলিক অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স সিটি তথা-হার্ডওয়্যার শিল্প প্রতিষ্ঠা করা, আইটি ও আইটিইএস শিল্প প্রতিষ্ঠা এবং সংশ্লিষ্ট কার্য পরিচালনার জন্য বিদেশি কোম্পানিকে আকৃষ্ট করতে সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্যই হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ বলেন, ‘সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটিতে বিপুল পরিমাণ লোকের কর্মসংস্থান হবে। এখান থেকে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার রফতানি করে রফতানি আয় বৃদ্ধি ও তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার ঘটবে। এখানে সিলেটের উদ্যোক্তা ছাড়াও প্রবাসীরা শিল্পায়নে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে ওঠবেন। ইলেকট্রনিক্স সিটি ঘিরে সিলেটে আরও নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে ওঠবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: