শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
সুনামগঞ্জ-৩: ড.কামালের ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিতে পারেন সামাদ আজাদ ছেলে আজিজুস সামাদ ডন!

সুনামগঞ্জ-৩: ড.কামালের ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিতে পারেন সামাদ আজাদ ছেলে আজিজুস সামাদ ডন!

আমার সুরমা ডটকম:

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলে নির্বাচন করবেনই প্রয়াত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের পুত্র আজিজুস সামাদ ডন। শেষ পর্যন্ত তরী ভেড়াতে পারেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে। হবিগঞ্জের প্রয়াত অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া পুত্র ড. রেজা কিবরিয়ার পথই ধরতে পারেন তিনি।
ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিলে তিনি কী শেষ পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়েই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিন সুনামগঞ্জ) আসনে আ.লীগ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন এমন জল্পনা-কল্পনায় ভাবিয়ে তুলেছে গোটা সিলেট বিভাগের রাজনৈতিক মহলকে।
এমন গুঞ্জনে সরব এখন সুনামগঞ্জ ও সিলেটের ভোটের মাঠ। কোন বলয় থেকে নির্বাচন করবেন এ ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট কিছু না বললেও ডন ইঙ্গিত দিয়ে বলছেন ‘সময়ই বলে দেবে। তবে সামনে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই বলেও মন্তব্য করেন সাবেক মন্ত্রী পুত্র ডন।
এদিকে আগামী দুই দিনের মধ্যে সিদ্বান্ত নেবেন ডন। তার অগ্রজ নজরুল ইসলাম ইতিমধ্যে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন। নজরুলের কাছ থেকেও আমন্ত্রণ আছে ডনের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রেজা কিবরিয়ার মতো সামাদ আজাদ পুত্র ডন ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হলে সিলেটের রাজনীতিতে আবারো অবাক হতে হবে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এমনকি সাধারণ ভোটারদের। এমনকি এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়তে পারে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে।
সুনামগঞ্জ-৩ আসন (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসন থেকে এবার আ.লীগের দলীয় প্রার্থী হিসাবে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন আজিজুস সামাদ ডন। তিনি আওয়ামী লীগের কাছেও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছেন আ.লীগ থেকে তিনি আর দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না। আজিজুস সামাদ ডন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আ.লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ জাতীর জনকের বিশ্বস্থ সহচর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জননেতা আব্দুস সামাদ আজাদের বড় ছেলে।
৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলের হাল ধরেন আবদুস সামাদ আজাদ। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন আবদুস সামাদ আজাদ। ২০০৫ সালে মারা যান বর্ষিয়াণ জননেতা আবদুস সামাদ আজাদ। বাবার মৃত্যুর পর আজিজুস সামাদ আজাদ ডন উপনির্বাচন করতে চাইলেও দলীয় অনুমতি না পাওয়ায় নির্বাচন করেন নি তিনি।
২০০৮ সালের এ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক যুগ্ম-সচিব আবদুল মান্নানকে। এমএ মান্নান সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। আজিজুস সামাদ আজাদ ডনকে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। ২০১৪ সালেও এমএ মান্নানকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী করা হয় এমএ মান্নানকে।
অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রী হওয়ার পর নেতাকর্মীদের কাছ থেকে দুরত্ব হওয়ার কারণে এলাকায় গ্রহণ যোগ্যতায় ভাটা পড়ে। বিএনপি-জামায়াত বেষ্টিত হওয়ার কারনে আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ সরে যায়।
এদিকে মাঠ গোছাতে থাকেন আজিজুস সামাদ ডন। দলীয় হাইকমান্ড থেকে আশ্বস্থ করা হয় এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে। কিন্তু এবারো মনোনয়ন বঞ্চিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা। অনেকেই বলেন, সকল জাতীয় নেতার সন্তানদের পদ পদবী দিলেও সামাদ আজাদের পরিবারকে বার বার অবজ্ঞা করা হচ্ছে। ১৪ বছর ধরে এলাকায় মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছেন আাজিজুস সামাদ ডন।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য সৈয়দ সাবির মিয়া বলেন, ‘সব জরিপে আজিজুস সামাদ ডন এগিয়ে থাকলেও মনোনয়ন না দেয়া কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। গ্রামের পর গ্রাম হেটে ডন সামাদ সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন জনবিচ্ছিন্ন কেউ এসে ফল ভোগ করুক আমরা চাই না।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আজিজুস সামাদ আজাদ ডনকে নিয়ে আমরা মানুষের দুয়ারে-দুয়ারে গিয়েছি। নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। দল মনোনয়ন না দিলেও নির্বাচন আমাদের করতে হবে। আজিজুস সামাদ ডন মনোনয়ন না পাওয়ায় অনেকেই আওয়ামী লীগ থেকে মুখ সরিয়ে নেবে।
জগন্নাথপুর পৌরসভার কাউন্সিলর আবাব মিয়া বলেন, ‘স্বতন্ত্র হোক আর ঐক্যফ্রন্ট হোক নির্বাচন ছাড়া আমাদের আর কোনো গতি নেই। দক্ষিণ সুনামঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, আজিজুস সামাদ ডনকে ভোট দেয়ার জন্য মানুষ মুখিয়ে আছে। নির্বাচন ভিন্ন অন্য কোনো পথ খোলা নেই।’
এ ব্যাপারে আজিজুস সামাদ ডন বলেন, ‘মনোনয়ন ডিক্লারেশনের পর থেকে নির্বাচনী এলাকার সাধারন ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে আমার প্রতি চাপ বাড়ছে। সবার চাপে ইলেকশন হয়ত শেষ পর্য্যন্ত করতে হতে পারে।
আ,লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হলে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়ে ধানের শীষে নির্বাচন করবেন কী না? এমন প্রশ্নের উওরে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, সময়ই বলে দিবে কোন পথে হাটতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: