শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
হত্যা মামলার আসামি শাসক দলীয় নেতার নেতৃত্বে পুলিশ ফাঁড়িতেই দু’ সাংবাদিকের ওপর হামলা ও প্রাণনাশের চেষ্টা!

হত্যা মামলার আসামি শাসক দলীয় নেতার নেতৃত্বে পুলিশ ফাঁড়িতেই দু’ সাংবাদিকের ওপর হামলা ও প্রাণনাশের চেষ্টা!

স্টাফ রিপোর্টার (সুনামগঞ্জ): শাসক দলীয় হত্যা মামলার এক আসামীর নেতৃত্বে পুলিশ ফাঁড়িতে দু’ সাংবাদিকের ওপর হামলা ও প্রাণনাশের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে এমন ঘটনা ঘটলেও রহস্যজনক কারণে ফাঁড়ির ইনচার্জ অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকাই পালন করে গেছেন বলেও জানা গেছে। হত্যা মামলার আসামী ও তার সাথে লালিত সন্ত্রাসীদের হামলা, প্রাণনাশের চেষ্টা ও লাঞ্চিতের অপচেষ্টার ঘটনা থেকে রেহাই পেতে ভোক্তভোগী সাংবাদিকরা ফাঁড়ির ইনচার্জের নিকট সহযোগিতা চাইলেও ওই ইনচার্জ হত্যা মামলার আসামীর সাথে অতি সখ্যতার কারণে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।
জানা গেছে, তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে বিনা অভিযোগে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তপন চন্দ্র দাস উত্তর বাদাঘাট ইউনিয়নের পুরান লাউড়েরগড় গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে পাথর ব্যবসায়ী আক্তার হোসেনকে সোমবার সকালে জাদুকঁটা নদী থেকে আটকে করে নিয়ে এসে ফাঁড়ির হাজত খানায় আটকে রাখেন। একই রাতে একটি ছিনিয়ে নেয়া মোটরসাইকেলও উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসার পর দুটি ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে পেশাগত কারণে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফাঁড়িতে যান সিএন বাংলাদেশ ডট কমের তাহিরপুর উপজেলার প্রতিনিধি মাহফুজুর রহমান পরশ ও সময়ের সংবাদ ডটকমের প্রতিনিধি আলম শেখ। এরপরই পুলিশ ফাঁড়িতে বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের বহুল আলোচিত পান দোকানদার মানিক হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী পৈলনপুর গ্রামের মৃত রহিছ মিয়ার ছেলে মাসুক মিয়া ফাঁড়ি ইনচার্জের কক্ষে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর বেড়িয়ে এসে ফাঁড়ির আশেপাশে অপেক্ষমাণ তার সাথে ১৫ থেকে ২০ দৃর্বৃক্তদের ডেকে এনে ফাঁড়ির ভেতর ওই দু’ সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও এলাকায় ঘোরাফেরা করলে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলা ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। এ সময় ফাঁড়ির ভেতর কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও ফা^ড়ির ইনচার্জ মাসুকের ধৃষ্টতাপুর্ণ আচরণ লক্ষ্য করলেও বিষয়টি এড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে দু’ সাংবাদিককে ফাঁড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলে ফের মাসুক সাংবাদিক আলম শেখ ও পরশকে ডেকে এনে ঠেলাধাক্কা দিয়ে লাঞ্চিত করে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেয়।
শুধু এখানেই শেষ নয় পুলিশ ফাঁড়ির আশে পাশের সড়কে কমপক্ষ্যে মাসুক তার সাথে ১৫ থেকে ২০ জনকে অবস্থান করিয়ে রাখে সুযোগ বুঝে সাংবাদিকেদের ওপর ফের হামলা ও প্রাণনাশের ঘটনা ঘটনানোর জন্য।
ভোক্তভোগী সাংবাদিক আলম শেখ ও মাহফুজুর রহমান পরশ জানান, মাসুক ও তার লোকজন সোমবার রাতে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরই আমাদেরকে গালিগালাজ, প্রাণনাশের হুমকি দেয় পরবর্তীতে ও লাঞ্চিত করে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেয়। তারা আরো বলেন, এসব ঘটনায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে রাতেই ফাঁড়ির ইনচার্জ ও থানার ওসিকে অবহিত করেছি কিন্তু ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুকের পক্ষ্য নিয়ে উল্টো মাসুকের পক্ষেই সাফাই গাইতে থাকেন এখন আমরা রীতিমত আতংকে রয়েছি এমনকি পেশাগত দায়িত্ব পালনেও মাসুক ও তার লোকজন দ্বারা বাধাগ্রস্থ্য হচ্ছি।
সাংবাদিকদের লাঞ্চিত, হুমকি প্রদান করা ও রাতে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের নিকট যাবার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মানিক হত্যাকান্ডের আসামী মাসুক মিয়া বলেন, আমি ব্যক্তিগত কাজে পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়েছিলাম, বেশ কয়েকমাস ধরেই আলম ও পরশ আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি করায় তাদেরকে ভবিষ্যতে লেখালেখি না করার জন্য বলে দিয়েছি।
তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তপন চন্দ্র দাসের নিকট সোমবার রাতের ঘটনা ও হত্যা মামলার আসামী মাসুক এবং তার লালিত সন্ত্রাসীদের ওই রাতের তৎপরতা ও মাসুকের সাথে তার সখ্যতা এমনকি রাতে কী কারণে মাসুক রাতে ফাঁড়িতে গিয়েছিলো সে বিষয়য়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বললেন, মাসুক ভাই বড়দল উওর ইউনিয়নের প্রাক্তন ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের সাথে একটি ঘাট নিয়ে বিরোধ থাকায় তার নিষ্পক্তি করে দিতে আমার নিকট গিয়েছিলেন, সাংবাদিকদের সাথে কী ঘটনা ঘটেছে তা আমি পরে জানতে পেরেছি।
তাহিরপুর থানার ওসি শ্রী নন্দন কান্তি ধর জানান, সোমবার রাতেই দু’সাংবাদিক ফোন করে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন, আমি সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখব কি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহর খাঁনকে বিস্তারিত অবহিত করে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বললেন, ঘটনার ব্যাপারে আমি জেনেছি। কেউ অভিযোগ করলে এ ব্যাপারে যথাযত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: