শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

উইঘুর মুসলিদের পক্ষে ভোট দিল না পাকিস্তান, কাতারসহ ৯ মুসলিম দেশ

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:

চীনে উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ভোট দিয়েছে ১৯টি দেশ। এর মধ্যে বেশির ভাগই মুসলিমপ্রধান দেশ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, মৌরিতানিয়া, পাকিস্তান, কাতার, সেনেগাল, সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান। আর ভোটদানে বিরতদের মধ্যে অন্যতম মালয়েশিয়া। উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিতর্কের প্রস্তাবে ভোট দেয়া থেকে বৃহস্পতিবার বিরত থাকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশটি। বলা হচ্ছে, এক্ষেত্রে কড়া লবিং করেছে চীন। আর তাদের এই লবিংয়ের ফলে যে ঘটনা ঘটলো তাকে দেখা হচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য বড় রকম এক আঘাত হিসেবে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা চীনকে টার্গেট করে জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব আনে। এতে ন্যূনতমপক্ষে সিনজিয়াংয়ের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করে তারা। এই সিনজিয়াং প্রদেশেই বসবাস উইঘুর মুসলিমদের। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

জাতিসংঘের অধিকার বিষয়ক সাবেক প্রধান মিশেল ব্যাচেলে সিনজিয়াং পরিস্থিতি নিয়ে তার বিলম্বিত রিপোর্ট প্রকাশের পর তা আলোচনার উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা। ওই রিপোর্টে চীনের সর্বপশ্চিমাঞ্চল সিনজিয়াংয়ে বসবাসকারী উইঘুর ও অন্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকারের বিরুদ্ধে অপরাধ হয়ে থাকতে পারে এমনটা দাবি করা হয়। পশ্চিমা দেশগুলো মনে করেছিল তারা জাতিসংঘের ওই রিপোর্ট নিয়ে সাদামাটাভাবে শুধু আলোচনা করবে। ফলে অন্য দেশগুলো এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না।

কিন্তু ৪৭ সদস্যের জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে এ প্রস্তাব নিয়ে যেন ক্ষুরধার এক নাটকীয়তা জমে ওঠে। সিনজিয়াং ইস্যুতে বিতর্ক আটকে দেয়ার জন্য প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ১৯-১৭ ভোট পড়ে। এতে ভোটদানে বিরত ছিল ১১টি দেশ। এরপরই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং টুইটে বলেছেন, এই বিজয় উন্নয়নশীল দেশগুলোর। এই বিজয় সত্য ও ন্যায়বিচারের।

এই ভোটকে একপেশে, প্রতারণার বলে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অন্যদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, এর মধ্য দিয়ে নির্যাতিত মুসলিমদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিশেলে টেইলর টুইটে বলেছেন, সিনজিয়াং নিয়ে আলোচনা প্রতিরোধ করার জন্য যে ভোটে যা হলো তার নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে কিছু দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে।

ওদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, ওয়াশিংটন এবং কিছু পশ্চিমা দেশ সিনজিয়াংকে ব্যবহার করছে গুজব ছড়াতে এবং সমস্যা সৃষ্টি করতে। মানবাধিকারের ছদ্মাবরণে তারা রাজনৈতিক ইস্যুতে যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে চীনের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু পশ্চিমা দেশের ষড়যন্ত্র আরও একবার ব্যর্থ হয়েছে। সিনজিয়াং সংশ্লিষ্ট ইস্যু মৌলিক অর্থেই মানবাধিকার বিষয়ক ইস্যু নয়। এ ইস্যু সন্ত্রাস বিরোধী, উগ্রপন্থাবিরোধী এবং বিচ্ছিন্নতাবিরোধী।

যুক্তরাষ্ট্র যাদেরকে সঙ্গে নিয়ে এই প্রস্তাবের খসড়া করেছিল তারা হলো অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, নরওয়ে, সুইডেন, তুরস্ক ও অন্যান্য দেশ।

মিশেল ব্যাচেলের রিপোর্ট প্রকাশ হয় তার ক্ষমতার মেয়াদের একেবারে শেষপ্রান্তে ৩১শে আগস্ট। এতে তুলে ধরা হয় সিনজিয়াংয়ে বসবাসকারী উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ নির্যাতন, খেয়ালখুশিমতো আটকে রাখা, ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন এবং সন্তান জন্মদানের অধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট। দীর্ঘদিন চীনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আছে। ফলে জাতিসংঘ এই অভিযোগ আমলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে জোর দিয়ে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং। তারা বলেছে, ওই অঞ্চলে সন্ত্রাস মোকাবিলায় তারা ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ সেন্টার পরিচালনা করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: