শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

দিরাইয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ

আমার সুরমা ডটকম: সরকারের দেয়া হতদরিদ্র গোষ্ঠীকে বিভিন্ন ভাতাদির কার্ড ও নগদ টাকা দেয়ার ব্যাপারে বিস্তর অভিযোগ ও স্বজনপ্রীতির লিখিত অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগের বিরুদ্ধে। অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে জগদল ইউপির বড়নগদীপুর গ্রামের বাসিন্দা আক্কাছ মিয়া ও ফরিদ মিয়া জনস্বার্থে লিখিতভাবে এই অভিযোগটি করেন। এছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) বিভিন্ন দফতরে এই অভিযোগের অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দিরাই উপজেলার ৭নং জগদল ইউপি চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একের পর এক লাগামহীনভাবে নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেই চলছেন। বিগত নভেম্বর মাসের ভিজিএফ এর চাল ও টাকা বিতরণকালে ইউনিয়নের ২ হাজার ৩০ জন সুবিধাভোগি কার্ডধারীদের মাঝে মাথাপিছু ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ২০/২২ কেজি করে বিতরণ করেন এবং নগদ ৫০০ টাকার পরিবর্তে কিছু সংখ্যক কার্ডধারীকে ৩০০ টাকা করে প্রদান করেন, তাছাড়া অনেককে কোন টাকাই দেননি। ভিজিএফ বিতরণের শুরু থেকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে চাল ওজনে কম দিয়ে আসছেন। গত এপ্রিলের শেষ দিকে অকাল বন্যায় হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার পর সরকার ভিজিএফের কার্ডের মাধ্যমে ৩০ কেজি চাল ও মাথাপিছু নগদ ৫০০ টাকা ঘোষণা দেয়। সরকারের মহৎ উদ্যোগ হাওরপাড়ের অসহায় কৃষকের ভিজিএফের চাল ও টাকা বিতরণের শুরু থেকে চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ অনিয়ম ও দুর্নীতি শুরু করেন। ইউনিয়নের তালিকাভূক্ত ১৮০টি ভিজিডি কার্ডের মধ্যে ১০১টি কার্ড এবং ভিজিএফের ১৬৫টি কার্ড নিজের কাছে রেখে চেয়ারম্যানের স্বজনদের ভুয়া নামের তালিকা দিয়ে আত্মসাত করে আসছেন। প্রতি মাসের ভিজিএফের চাল ২০/২২ কেজি করে বিতরণ করেন। প্রতি কিস্তি ভিজিএফ বরাদ্ধ থেকে কমপক্ষ ১৫/১৬ মেট্টিকটন চাল কালোবাজারে বিক্রি করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের বোরো মৌসুমে সরকার কর্তৃক বিনামূল্যের সার ও বীজ বিতরণে তালিকা ভূক্তদের নিকট হতে নগদ ২০০-২৫০ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। ইতিপূর্বে ভিজিএফের চাল ও নগদ টাকা চেয়ারম্যানের সুবিধাজনক জায়গায় জনগণকে কষ্ট দিয়ে ইউনিয়নের উত্তর প্রান্তে বিতরণে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করেন দক্ষিণ প্রান্তের বাসিন্দাগণ। তাছাড়া ইউনিয়নের অতিদরিদ্র কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫টি প্রকল্পের মাঝে ২টি প্রকল্পের বরাদ্ধকৃত সমুদয় টাকা কোন কাজ না করে ভুয়া শ্রমিক তালিকা তৈরী করে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক দিরাই শাখা থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান শিবলী বেগ।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডে নীতিমালা অমান্য করে তথ্য গোপন করে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে চেয়ারম্যানের আপন ভাই, চাচাতো ও ফুফাতো ভাইয়ের নামে একাধিক পিআইসি করে সরকারের টাকা আত্মসাতের পায়তারা করছেন। চেয়ারম্যানের ফুফুতো ভাই শফিকুল একজন দিন মজুর, হাওরে কোন জমি না থাকলেও তাকে একটি পিআইসির সেক্রেটারী করা হয়েছে। অভিযোগ উল্লেখ্য করা হয়, জগদল ইউপি চেয়ারম্যান শিবলী বেগ একের পর এক লাগামহীনভাবে নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেই চলছেন। সরকার মোটা অংকের টাকা খরচ করে ইউনিয়নের মাঝামাঝি জায়গায় পরিষদের কার্যালয় তৈরি করলেও চেয়ারম্যান সেখানে অফিস না করে দিরাই পৌরসদরে অফিস করেন। এতে জনসাধারণকে মারাত্মকভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অভিযোগে বলা হয়, চেয়ারম্যান শিবলী বেগ একজন প্রভাবশালী, লাঠিয়াল ও দুর্নীতিবাজ লোক হওয়ায় তার ভয়ে ইউনিয়নের নিরীহ ও সাধারণ লোকজন কেউ মুখ খুলে কথা বলার সাহস পায়না।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ বলেন, আমি কোন অনিয়ম বা দুর্নীতির সাথে জড়িত নেই, নীতিমালা অনুযায়ী পাউবোর পিআইসি দেয়া হয়েছে। একটি পক্ষ ব্যক্তিগত আক্রোশে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ সাবিরুল ইসলাম বলেন, সকল অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: