মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০১:৩৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

দিরাই-শাল্লায় বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকছে

amarsurma.com

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নদী ভরে গিয়ে অবশেষে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের একটি হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। হাওরের ফসল রক্ষায় এলাকাবাসি প্রাণান্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত বাঁধটি মেরামত করতে না পারলে প্রায় ৩শত হেক্টর বোরো জমি তলিয়ে যাবে বলে এলাকার কৃষকরা জানান। এছাড়া মঙ্গলবার বিকেলে শাল্লা উপজেলার কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে দুই হাওরে ৪০ হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিরাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ৩১নং পিআইসিটি জারলিয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন। ০.৪৭১ কিলোমিটার এ বাঁধে বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে ৬ লাখ ১৫ হাজার ৭১৬ টাকা ৯২ পয়সা। গতকাল বাঁধটি ভেঙ্গে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, বাঁধে মাটি কাটার পর ভালো করে দুর্মুম ও ড্রেসিং না করায় বাঁধের মাটি সঠিকভাবে বসেনি। ফলে নিচ দিয়ে পানি ছুঁইয়ে ভেতরে প্রবেশ করছে।
তাপারাশা গ্রামের কৃষক আব্দুস সহিদ, সাদিকুর রহমান ও হবিব মিয়া জানান, হাওরের গুরুত্বপূর্ণ এ বাঁধগুলোতে ঠিকমতো কাজ না হওয়ায় তা সামান্য পানির ধাক্কায়ই ভেঙ্গে গেছে। আমাদের সোনার ফসল তলিয়ে গেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চালানো কঠিন হবে বলেও জানান তারা। বাঁধে মাটি ঠিকমতো না কাটার জন্য দুর্নীতিবাজ পিআইসিদের কঠিন শাস্তি চান এলাকার কৃষকরা।
পিআইসি কমিটির সভাপতি সৈয়দ আলী হোসেনকে একাধিকবার মোবাইলে কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিরাই অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শাখা কর্মকর্তা (এসও) এ.টি.এম. মোনায়েম হোসেন জানান, আজকে (গতকাল) বুধবার জারলিয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন বাঁধের নিচ দিয়ে গর্ত হয়ে পানি প্রবেশ করছে শুনে বাঁধে অবস্থান করছি। আসলে এটি গত বছরের কাজ ছিল। এ বছর ৬ ইঞ্চি মাটি দিয়ে লেভেল করা হয়েছে। মূলত নদীর গভীরতার কারণে ভেতর দিয়ে গর্ত হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবেশ করছে। এই মুহূর্তে এলাকাবাসিকে নিয়ে বাঁধের কাজ করছি, যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে দুই হাওরে ৪০ হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে গেছে। তবে এই বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতার বাইরে বলে জানিয়েছেন শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
জানা যায়, শাল্লা উপজেলার ঘুঙ্গিয়ারগাঁও ও ডুমরা গ্রামের লোকজন এই হাওরেই বোরো ধানের চাষ করেন। কিন্তু তিনদিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বাড়ায় কৃষকরা দিন-রাত মাটি কেটে বাঁধটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
স্থানীয় কৃষক রুকন উদ্দিন বলেন, শাল্লা ব্রিজের পাশে হাওর রক্ষা বাঁধের একটি প্রকল্প নিলে অকাল বন্যায় চোখের সামনে বোরো ধান তলিয়ে যেত না। অন্য বছর এই জায়গায় প্রকল্প দেওয়া হলেও এবছর কোনো প্রকল্প না দেওয়ায় অকাল পানিতে ফসলি জমি ভেসে গেলো। স্থানীয় কৃষক আদনান মিয়া বলেন, কষ্টের ফলানো ধান তলিয়ে যাওয়া দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ছে, নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এই বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতার বাইরে। এরপরও আমরা চেষ্টা করেছি ফসলি জমি রক্ষা করার। কিন্তু উজানের পাহাড়ি ঢল ও নদীর পানি বাড়ায় আর রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

 

amarsurma.com

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: