শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১০:২৬ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩

পাস হলো নির্বাচন কমিশন গঠনের বিল

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম:

বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিরোধী দলীয় কয়েকজন এমপি বিলটি জনমত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব তুললে তা নাকচ হয়ে যায়।
এদিন সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। সংসদে উত্থাপিত এ বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটি উত্থাপিত বিলে দুটি সংশোধনী এনে পাসের সুপারিশ করলে ধারা দুটি সংশোধন করে বিলটি পাস হয়।
সংসদে উত্থাপিত বিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও কমিশনারদের যোগ্যতা সংক্রান্ত ৫(গ) ধারায় বলা আছে, সিইসি ও কমিশনার হতে গেলে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদে অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
এ ধারায় সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি পদের পাশাপাশি ‘স্বায়ত্তশাসিত ও অন্যান্য পেশা’ যুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
আর অযোগ্যতার ক্ষেত্রে ৬(ঘ) ধারায় বলা আছে, নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সিইসি ও কমিশনার হওয়া যাবে না।
এখানে দুই বছরের কারাদণ্ড উঠিয়ে শুধু কারাদণ্ডের সুপারিশ করেছে কমিটি। অর্থাৎ নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে যে কোনো মেয়াদের সাজা হলেই সিইসি বা কমিশনার হওয়ার ক্ষেত্রে ‘অযোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি বিলটি সংসদে উত্থাপিত হয়। খসড়া বিলে সার্চ কমিটির কাজ সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা-অযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’-এর সার্চ কমিটির মাধ্যমে এর আগে গঠিত সব নির্বাচন কমিশনের বৈধতাও দেওয়া হবে।
এ সার্চ কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুজন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটি গঠনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে দেবে বলে খসড়া বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যদের অনুসন্ধানের জন্য রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করতে পারবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন, যার সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। সংবিধানের ১১৮ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য বিলটি আনা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের শূন্যপদে নিয়োগদানের জন্য এ আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার উদ্দেশ্যে ছয়জন সদস্য সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন।
কমিটিতে থাকবেন- প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক, যিনি এর সভাপতিও হবেন। প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক। বিলে বলা হয়, অনুসন্ধান কমিটি তাদের সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবে। অন্যূন তিন সদস্যের উপস্থিতিতে অনুসন্ধান কমিটির সভার কোরাম গঠিত হবে। কমিটির সভায় উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভায় সভাপতিত্বকারী সদস্যের দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকবে। অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে এর সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করবে।
অনুসন্ধান কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতায় বলা হয়েছে- তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে; বয়স ন্যূনতম ৫০ বছর হতে হবে; কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা-সরকারি বা বেসরকারি পদে অন্যূন ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
অযোগ্যতায় বলা হয়েছে- প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগদানের জন্য কোনো ব্যক্তিকে সুপারিশ করা যাবে না, যদি তিনি কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত হন বা দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি লাভ না করে থাকেন বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন অথবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন।
এছাড়া প্রস্তাবিত বিলে অনুসন্ধান কমিটি কর্তৃক রাষ্ট্রপতির নিকট প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের নাম সুপারিশ করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করার বিধান রাখা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: