শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক, অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৬২৫-৬২৭৬৪৩
বছরে ৯৫ হাজার উদ্বাস্তুকে জায়গা দেয়া হবে, বিভাজন সরিয়ে আমেরিকাকে এক সুতোয় বাঁধার অঙ্গীকার বাইডেনের

বছরে ৯৫ হাজার উদ্বাস্তুকে জায়গা দেয়া হবে, বিভাজন সরিয়ে আমেরিকাকে এক সুতোয় বাঁধার অঙ্গীকার বাইডেনের

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিভাজনের রাজনীতিকে সরিয়ে আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করার অঙ্গীকার করলেন জো বাইডেন। আমেরিকায় প্রতিবছর অন্তত ৯৫ হাজার উদ্বাস্তুকে জায়গা দেয়া হবে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশী ও ভারতীয়, যারা এবার স্থায়ীভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পেতে পারেন।

করোনা পরিস্থিতির ফলে দেশের বেহাল অর্থনীতির উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক বিভাজন সরিয়ে দেশকে একজোট করাই তার লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন বাইডেন। সেই সঙ্গে বিশ্বের দরবারে ফের আমেরিকাকে সম্মানজনক স্থানে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর বলেও জানিয়েছেন তিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর পর সমর্থকদের উদ্দেশে বিজয়ীর ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট বাইডেন। বাংলাদেশ সময় রোববার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ তার সেই ভাষণের আগে মঞ্চে ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত কমলা হ্যারিস। ৪৬তম প্রেসিডেন্ট পদ দখল করার পর বাইডেন মনে করিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকাকে এক দেশ হিসাবেই দেখেন তিনি। ডেমোক্র্যাটদের দলীয় নীল রঙের প্রাধান্য বা রিপাবলিকানদের লাল রং— কোনওটাকেই গুরুত্ব দিতে নারাজ বাইডেন। বরং আমেরিকাকে এক রাষ্ট্র হিসাবে দেখার কথা বলেছেন তিনি। বাইডেনের কথায়, ‘লাল বা নীল রাজ্য নয়, আমার নজরে রয়েছে শুধুমাত্র আমেরিকা।’

যুক্তরাষ্ট্রে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার পাশাপাশি মহামারির আবহে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে টেনে তোলাই যে প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার লক্ষ্য, সে কথাও শোনা গিয়েছে বাইডেনের মুখে। সেই সঙ্গে বর্ণবৈষম্য, রাজনৈতিক মতপার্থক্যের ফলে বিভাজনের সরিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজের অঙ্গীকারও করেছেন তিনি। সমর্থকদের উল্লাসের মাঝে সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বাইডেন বলেন, ‘যুদ্ধবদ্ধ হওয়ার এটাই সময়। এবং আমেরিকার ক্ষত সারানোরও পালা এসেছে। বিদ্বেষকে পিছনে ফেলে ফের এক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে।’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই আমেরিকায় ঘটে গিয়েছে জর্জ ফ্লয়েড খুনের মতো ঘটনা। ওই ঘটনাকে ঘিরে আমেরিকাসহ গোটা বিশ্বেই বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দেখা গিয়েছিল। নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা হতে দেখা গিয়েছে, দেশের বহু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট পেয়েছেন বাইডেন। এ দিন নিজের ভাষণে তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। বাইডেন বলেছেন, ‘দেশের অ্যাফ্রো-আমেরিকানদের ধন্যবাদ। আপনারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ বার আমি আপনাদের পাশে থাকব।’

এ দিন বাইডেনের আগে ভাষণ দেন কমলা। মহিলা হিসাবে প্রথম হলেও তিনি যে শেষতম নন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি। কমলার কথায়, ‘এই অফিসে প্রথম হলেও আমি হয়তো শেষ মহিলা নই।’ এ প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, ‘আমেরিকা একটা বার্তা দিয়েছে। আজ প্রত্যেকটি ছোট মেয়ে জানে, এ দেশে তা করে দেখানো সম্ভব।’ দেশ গড়ার কাজে অ্যাফ্রো-আমেরিকান নারীর অবদান যে প্রায়শই এড়িয়ে যাওয়া হয়, সে কথাও কমলার ভাষণে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ‘আজ তাদের সংগ্রাম এবং দৃঢ়সংকল্পের প্রতিফলন ঘটিয়ে দেখতে চাই কী কী ভার কমানো যায়। এবং আমি তাদের গড়ে তোলা পথেই এগিয়ে চলেছি।’ গণতান্ত্রিক পথে যাতে আরও মানুষের যোগদান থাকে, সে উদ্দেশ্যেও তাঁর সমর্থকেরা কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন কমলা। তার মন্তব্য, ‘আমেরিকা প্রস্তুত। সেই সঙ্গে জো বাইডেন এবং আমিও।’

এ দিন বাইডেন শিবিরের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি পলিসি ডকুমেন্ট প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ক্ষমতা হস্তান্তরের পরই মার্কিন কংগ্রেসে নতুন অভিবাসী সংশোধনী আইন পাশ করানোর কাজ শুরু করে দেবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। যার লক্ষ্য হবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির আধুনিকিকরণ এবং পরিবার ভিত্তিক নাগরিকত্ব প্রদান। একই পরিবারের সদস্যদের একত্রিত রাখার লক্ষ্যে আমরা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে মার্কিন নাগরিকত্ব দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি। এর মধ্যে ৫ লাখেরও বেশি ভারতীয়। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক লাখ প্রবাসী ভারতীয়র বাস। এদের অনেকেই মার্কিন নাগরিকত্ব পেয়েছেন এবং কয়েক পুরুষ আমেরিকায় বসবাস করছেন। বাইডেনের এই নতুন সংশোধনী পাশ হলে এবার এই প্রবাসী ভারতীয়দের আত্মীয়রাও সহজেই মার্কিন নাগরিকত্ব পাবেন। প্রসঙ্গত, মার্কিন নির্বাচনে বাইডেনের রানিং মেট তথা হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নিজেও ভারতীয় বংশোদ্ভূত। আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের একটা বড় অংশের সমর্থন গিয়েছে ডেমোক্র্যাট শিবিরেই। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতায় এসে আমেরিকায় প্রবাসী ভারতীয়দের বড় উপহার দিতে চাইছেন বাইডেন।

ট্রাম্পকে হারানোর পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে নানা নজির গড়েছেন ৭৭ বছরের জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র। আমেরিকার সবচেয়ে বেশি বয়সি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন তিনি। সেই সঙ্গে ১৯৯২ সালের পর তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি এক বার পদে থাকা কোনও প্রেসিডেন্টকে হারালেন। শেষ বার এমনটা করেছিলেন বিল ক্লিনটন। ১৯৯২ তে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশকে পরাস্ত করেছিলেন তিনি। বাইডেনের পাশাপাশি কমলার জয়ও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রথম অ্যাফ্রো-আমেরিকান-এশীয় হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম মহিলা ভাইস-প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি।

সূত্র: রয়টার্স, এপি

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: