বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২১ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
গত এক মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কার জলসীমায় চীন দুটি গবেষণা জাহাজ নিয়োগ করেছে বলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে। লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে চীনের এই দুই জাহাজ মোতায়েনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ভারত।
শ্রীলঙ্কার জলসীমায় চীনের দুটি গবেষণা জাহাজের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারতীয় নৌবাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে যে, নৌ অভিযান পরিচালনার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কাজে ওই জাহাজগুলো নিয়োগ করা হয়েছে। বিশেষ করে সাবমেরিনের বিচরণের জন্য এসব তথ্য কাজে লাগে। তবে এই প্রথম নয়, গত এক দশক ধরেই চীনের জরিপ ও গবেষণা জাহাজগুলো নিয়মিত শ্রীলঙ্কা ও আশাপাশের সমুদ্রে বিচরণ করছে। ২০১২ সালের দিকে চীনের গবেষণা জাহাজগুলোর তৎপরতা বাড়তে শুরু করে। তখন থেকে শ্রীলঙ্কায় এ ধরনের জাহাজের অবস্থান নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই দুই জাহাজ আপাত দৃষ্টিতে চীনের রাজকীয় নৌবহরের এডমিরাল ঝেং হি’র অধীনে থাকা রত্নভর্তি জাহাজ অনুসন্ধানের কাজ করছে। জাহাজটি ১৫ শতকে শ্রীলঙ্কা উপকূলে ডুবে গিয়েছিলো। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরের সময় জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধানের জন্য সমুদ্রে জরিপ চালাতে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংস্থার প্রস্তুত করা এক নোটে বলা হয়েছে, চীনা জরিপ ও গবেষণা জাহাজগুলোর উপস্থিতি এই প্রশ্ন তৈরি করেছে যে সেগুলো শুধু ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধানের কাজ করছে কিনা।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১২টি ঘোষিত সফরের পাশাপাশি চীনা জাহাজগুলো আরো অনেক অঘোষিত সফর করেছে, যা শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষের মনযোগ আকর্ষণ করেনি। সূত্র বলে, এসব জাহাজ কেন সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষের জায়গা উপকূলের কাছাকাছি থেকে অনুসন্ধান না করে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান করছে? নোটে আরো উল্লেখ করা হয়, শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও এসব জাহাজ শ্রীলঙ্কার এক্সক্লুসিভ ইকনমিক জোনে তাদের তৎপরতা ও গতিবিধি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি। নোটে উল্লেখ করা হয়, গবেষণা জাহাজগুলো মূলত নৌ অভিযান পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহ করছে। শ্রীলঙ্কার পানিসীমায় তৎপরতা চললেও অন্যান্য দেশের জন্যও জাহাজগুলো উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নাজুক সামুদ্রিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
বলা হচ্ছে যে ধ্বংসাবশেষ অনুষন্ধান প্রকল্পের প্রধান হলেন প্রফেসর হু চাঙ্গিং। তিনি চায়না একাডেমি অব সাইন্সের একটি গবেষণাগারের পরিচালক। তবে তিনি চীনের সামরিক প্রকল্পগুলোর সঙ্গেও গভীরভাবে জড়িত বলে নোটে উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে সাবমেরিন সোনার সিস্টেম তৈরির প্রকল্পে তিনি জড়িত। সূত্র: দ্য প্রিন্ট।