বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৫ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স: সিরিল বোমায় নওয়াজ শরীফ সরকারের প্রাণ যায় যায় অবস্থা। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সরকারকে পাঁচ দিনের সময় দিয়েছে কীভাবে গোপন কক্ষের খবর ডনে প্রকাশিত হল তা বের করতে। এদিকে তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খান আগামী ৩০ অক্টোবর ইসলামাবাদ দখল করার ঘোষণা দিয়েছেন। খবর জিনিউজ, ডন, এনডিটিভি।
পাকিস্তানে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় আলোচিত বিষয় প্রখ্যাত ইংরেজি দৈনিক ডনের এক প্রতিবেদন নিয়ে। ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল হয় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নাও অথবা আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাও, সেনাবাহিনীকে এই বার্তা সরকারের। ডনের প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা এই খবরে পাকিস্তান জুড়ে তীব্র প্রতিবাদ হয়। সরকার ও সেনাবাহিনী এই খবর অস্বীকার করে। কিন্তু যারা পত্রিকায় এই খবর ছাপে তারা একে মিথ্যা বলছেন না। তাদের দাবি তারা সত্য খবর লিখেছেন। ডন পত্রিকার সম্পাদক জাফর আব্বাস বলেন পুরো খবর সত্য। এই খবর ভালো করে যাচাই বাছাই করে পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। এখানে প্রতিবেদক সিরিল আলমেইদা ও ডন কর্তৃপক্ষের কোনো দায়িত্ব পালনে অবহেলা নেই।
তবে ডনের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। গত ১৩ অক্টোবর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেলদের একটি সভা হয়। সেখানে ৩ অক্টোবরের গোপন কক্ষের কথা কীভাবে পত্রিকায় গেছে তা তদন্ত করে দেখার জন্য সরকারকে ৫ দিন সময় দেয়া হয়। সেনাবাহিনী বিষয়টিকে জাতীয় নিরাপত্তার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে। তারা প্রকাশিত প্রতিবেদনকে সাজানো ও মিথ্যা বলেছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ডনের প্রতিবেদক সিরিল আলমেইদাকে দেশের বাইরে যেতে বাধা দেয়ায়। সিরিলের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করেনি। তবে কেন তাকে বিদেশ যেতে বাধা দেয়া হল তা নিয়ে হয় প্রতিবাদ। পরে জানা যায় সেনাবাহিনী সিরিলের বিরুদ্ধে কোনো নির্দেশ জারি করেনি। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী খান আগ বাড়িয়ে সিরিলের নাম ইসিএনের (একজিট কন্ট্রোল লিস্টে) পাঠিয়েছিল। আর সে কারণে তাকে দেশের বাইরে যেতে বাধা দেয়া হয়েছিল। এক সংবাদ সম্মেলনে চৌধুরী নিসার আলী খান এসব কথা বলেন। তার সাফাই ছিল সিরিলের প্রতিবেদন নিয়ে একটি অনুসন্ধান চলছিল। সেই কারণে তাকে বিদেশ যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। সিরিলকে তারা কয়েকবার ডেকেছিল প্রতিবেদনের সূত্র সম্পর্ক তথ্য দিতে। কিন্তু তিনি সরকারের এসব শুনতে বাধ্য নন বলে জানান। পরে পাকিস্তান সাংবাদিকদের সব সংগঠন সিরিলের নাম ইসিএন থেকে হটানোর দাবি জানালে সরকার বাধ্য হয় তা করতে।
সিরিলের ওই প্রতিবেদন নওয়াজ সরকার অস্বীকার করে তাকে বলির পাঠা বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সাংবাদিকদের সংগঠন সিরিলকে সমর্থন দিলে নওয়াজ সরকার তাকে নিয়ে বেকায়দায় পড়ে। বাস্তবতা হল, সিরিল আলমেইদাকে নওয়াজ সরকারের তিন লোকই তথ্য দিয়েছিল। যাদের একজন নওয়াজ শরীফের ঘনিষ্ঠ। বাকী দুজন সরকারি আমলা। এখন সেনাবাহিনী সরকারের মুখ দিয়ে এসব লোকের নাম জানতে চাচ্ছে। এখন সরকার থেকে যদি এদের পরিচয় ফাঁস হয় তবে এদের ও সরকারের কি অবস্থা দাড়ায় তা তো আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পরিষ্কার হবে।
ডনের ওই প্রতিবেদন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী হজম করতে পারছে না। পারবেই বা কীভাবে। যেখানে বলা হয়েছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলোকে মদদ দেয় পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। এদের কারণে সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারছেনা। পাকিস্তান সরকারের মতে এসব কথা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের। তারা এ ধরনের কোনো বার্তা সেনাবাহিনীকে দেয়নি।