শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:২১ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বহুল আলোচিত ও ব্যয়বহুল পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ আবারও দুর্ঘটনায় পড়েছে। প্রতি বছর বিপুল অর্থে উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন এ যুদ্ধবিমান তৈরির পরও একের পর এক দুর্ঘটনা এই প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এবার ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে ঘটে গেল আরও একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
বুধবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। প্রশিক্ষণের সময় লেমোর মেরিন কর্পস বিমানঘাঁটির কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। যুদ্ধবিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের ‘রাফ রেইডারস’ নামে পরিচিত স্ট্রাইক ফাইটার স্কোয়াড্রন ১২৫-এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটি মূলত একটি প্রশিক্ষণ ইউনিট, এবং বিমানে থাকা পাইলট নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন বলে জানায় মার্কিন নৌবাহিনী।
এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের প্রতি ইউনিটের দাম প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এত দামি, উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন এই বিমানের বারবার দুর্ঘটনায় পড়া মার্কিন প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। লকহিড মার্টিনের তৈরি এই স্টেলথ ফাইটারটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্তত ১৭টি দেশের সামরিক বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র।
এই বছর এটি দ্বিতীয় এফ-৩৫ দুর্ঘটনা। এর আগে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আলাসকার আইয়েলসন বিমানঘাঁটিতে একটি এফ-৩৫এ মডেল বিধ্বস্ত হয়। সেখানেও পাইলট প্রাণে বেঁচে যান, তবে বিমানের সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতি হয়। বারবার এমন দুর্ঘটনা যুদ্ধবিমানটির প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা, রক্ষণাবেক্ষণের জটিলতা এবং পরিচালন-ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যতটা না যুদ্ধক্ষেত্রে দক্ষতা দেখাচ্ছে এফ-৩৫, তার চেয়ে বেশি আলোচনায় থাকছে এর বারবার ভেঙে পড়ার খবরে। এই অবস্থাকে তারা শুধু একটি প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন না—বরং সামরিক দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য রক্ষার সক্ষমতার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া এত ব্যয়বহুল একটি বিমানের রক্ষণাবেক্ষণে যে পরিমাণ খরচ পড়ে, তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাজেটের ওপরও ভার তৈরি করছে। ফলে এফ-৩৫ প্রকল্পে বিনিয়োগের যৌক্তিকতা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তথ্যসূত্র : শাফাক নিউজ