মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন
এমএম ইলিয়াছ আলী, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ: দক্ষিণ সুনামগঞ্জে কুখ্যাত রাজাকারের ছেলের নেতৃত্বে সশস্র বাহিনী নিয়ে মৎস্যজীবিদের ওপর হামলা জের ধরে রাজাকার পুত্রসহ ২ জনকে এলাকাবাসী আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার ঘটনায় এলাকায় দিনভর উত্তেজনা বিরাজ করে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১২টায় দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের উজানীগাঁও গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার মৃত ছত্তার মিয়ার ছেলে বদর উদ্দিন বাবুলের নির্দেশে তার ছোট ভাই জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে সুনামগঞ্জ শহরের আরপিন নগর এলাকার জসিম উদ্দিন দিলীপের ছেলে আরমানুল সিদ্দিকী মান্না (৩২) ও মৃত সুরুজ বখতের ছেলে সুহেল বখত ওরফে কালা সুহেল (৩০), উজানীগাঁও গ্রামের আব্দুল হেকিমের ছেলে আছকির আলী (৩৮) ও দিলীপ মিয়া (২৮), মৃত তরমুজ আলীর ছেলে সুহেল মিয়া (২৯), মৃত আব্দুল বারীর ছেলে জিয়াউল হক ওরফে বলাইসহ (৩৫) অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জন সশস্র বাহিনী ১৫টি মোটর সাইকেল নিয়ে উপজেলার জয়কলস মৌজার দেখার হাওরের তেডালা হুগলিয়া চাতল বিলে গিয়ে বিলের মৎস্যজীবি সমিতির লোকজনকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে তাদের কাছে বিলের অংশ ও চাঁদা দাবি করে।
সমিতির লোকজন চাঁদা ও অংশ দিতে রাজি না হলে লোকজনের উপর হামলা চালায় জহির বাহিনীর লোকজন। এ সময় জয়কলস উজানীগাঁও তেডালা হুগলিয়া চাতল বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ-এর অন্য সদস্যরা বিলে হামলার খবর পেয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্র নিয়ে জহির বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলাকালে এলাকার লোকজন উজানীগাঁও গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার ছাত্তার মিয়ার ছেলে জহির উদ্দিন (৪২) ও সুনামগঞ্জ শহরের আরপিননগর এলাকার মৃত সুরুজ বখতের ছেলে সুহেল বখত ওরফে কালা সুহেলকে (৩০) আটক করে গণধোলাই দেন। এ সময় জহির বাহিনীর ব্যবহৃত কয়েকটি মোটর সাইকেলও ভাংচুর করেন এলাকাবাসি।
তাৎক্ষনিক দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই ওয়াসিম আল বারীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় এলাকাবাসি আটককৃত ২ জনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। সংঘর্ষে আহত জয়কলস উজানীগাঁও তেডালা হুগলিয়া চাতল বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ-এর মতিউর রহমান (৪৪), নূর মিয়া (৩০), আব্দুছ ছালাম (৩৫), জমসেদ আলীকে (৫৫) তাদেরকে কৈতক ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিলে রাজাকারের ছেলের নেতৃত্বে তার বাহিনীর হামলার ঘটনায় সারাদিন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আল-আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২ জনকে আটক করা হয়েছে, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।