বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

এবার আওয়াজ উঠুক দিরাই-মদনপুর পয়েন্টকে ‘শায়খে গাজিনগরী রহ. চত্ত্বর’ ঘোষণা হোক

amarsurma.com

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার

সুনামগঞ্জের দিরাই-মদনপুর পয়েন্টকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ‘চত্ত্বর’ ঘোষণার দাবি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে এখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কারো নামে সেই চত্ত্বরের নামকরণ করেনি। যে সব ব্যক্তির নাম ইতিমধ্যে শোনা গেছে, নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার করলে কোনভাবেই তাদের নামে এই চত্ত্বরের নামকরণ হওয়ার কথা নয়। এবার দাবি উঠুক সেই চত্ত্বরের নাম ‘শায়খে গাজিনগরী রহ. চত্ত্বর’ হিসেবে দিরাই-মদনপুর পয়েন্টকে। কেন তাঁর নামে নামকরণ হবে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ নি¤েœ তুলে ধরা হল।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ, আওলাদে রাসূল সা., শায়খুল আরব ওয়াল আযম, বৃটিশ খেঁদাও আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার, আল্লামা হুসাইন আহমদ মাদানী রহ.-এর অন্যতম ছাত্র ও খলিফা মাওলানা আব্দুল হক শায়খে গাজিনগরী মদফুনে মাক্কী রহ. সুনামগঞ্জ জেলার অন্যতম ব্যক্তিত্ব। তাঁর বর্ণাঢ্য শিক্ষা ও কর্মজীবন সকল শ্রেণির মানুষের জন্য আদর্শ বটে। জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের কাছে তিনি ছিলেন অনকরণীয় ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁর জীবনের কোন একটি দিক নেই, যা তাঁকে কোনভাবেই খাটো করবে। মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা. প্রদর্শিত রাস্তাই তিনি মানুষকে ডেকেছেন, বরং তাঁর দেখানো পথই সমাজে সঠিক মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকতে অনুপ্রেরণা জোগায়।
বর্তমান সময়ের সাথে সামাজিক অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, ব্যক্তি থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সমস্যার অন্ত নেই। তার কারণ কি তা আজ পর্যন্ত কেউই সঠিক কারণ বলতে পারে না। কিন্তু কেন? কোন বিবেকবান লোকই এ কথা বলতে পারবেন না যে, আমরা বারো মাসই অসুস্থ থাকতে চাই? কেউই তা চায় না।
প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব একটি দর্শন রয়েছে। সেই দর্শন পরিবার-সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কতটুকু ফলপ্রসু, সে কথাও আমাদের ভাবতে হবে। অন্য কারো নাম উল্লেখ না করে শুধুই শায়খে গাজিনগরী রহ.-এর দর্শনটি বলতে চাই।
আমরা মানুষ; সমাজ ও রাষ্ট্রে সেই পরিচয় নিয়েই বসবাস করতে চাই। আর সেজন্য প্রয়োজন টেকসই কিছু নীতিমালা। মানুষ পৃথিবীতে ক্ষণস্থায়ী হিসেবে বাস করে। একজন নাস্তিকও মনে করে মৃত্যু অবধারিত। মরণের পর কী হবে, সে সেটা নিয়ে ভাবে না। আর যারা ভাবেন, তারা প্রত্যেক মানুষের ইহ-পরকালীন বিষয় নিয়েই চিন্তা-ভাবনা করেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন খলিফায়ে মাদানী আল্লামা আব্দুল হক শায়খে গাজিনগরী মদফুনে মাক্কী রহ.। তাঁর জীবন দর্শনের এমন একটি দিক নেই, যেখানে তিনি সকল শ্রেণির মানুষের কল্যাণে কাজ করেন নি। সুতরাং, যারা মানুষের সার্বিক ক্যলাণের কাজে ব্রত ছিলেন, আমরা তাদের মূল্যায়ন করতে জানি না। তার বিপরীত যারা সমাজের এক শ্রেণির মানুষের পক্ষে কাজ করেন, আমরা তাদেরকে আসমানে তুলতেও ভুলিনা। আফসোস আমাদের শ্রেণি বিভেদের জন্য!
অপরাপর সমাজের যত জ্ঞানী-গুণি আছেন, তারা কয়জন এমন আছেন যে, যাদের চিন্তা-চেতনা সর্বোপরি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে? কিন্তু তাদেরকে সমাজ থেকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা পর্যন্ত দেয়া হয়। যদিও এদেশের প্রকৃত জ্ঞানী-গুণিরা দেশ ও সরকারের কাছ থেকে কোন কিছু পাওয়ার আশায় কাজ করেন না; তদুপরি মনুষ্য বিবেক থেকেও তাদের মূল্যায়ন করা উচিত।
মাওলানা আব্দুল হক শায়খে গাজিনগরী রহ. তেমনি একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক; যিনি না দুনিয়ার লোভে কোন কিছু করেছেন, না কাউকে ব্যক্তিগতভাবে খুশি করতে কোন কাজ করেছেন। বরং তাঁর প্রত্যেকটি কাজ বা ভূমিকা ছিল মানুষের কল্যাণে এবং জনস্বার্থে। এতে করে অনেক ব্যক্তির রোষানলে পড়েছেন। সুতরাং, শুধুমাত্র বিবেকের তাড়নায় নয়, বাস্তবতার আলোকে নিরপেক্ষভাবে চিন্তা করলে একজন আল্লাহ ওয়ালা ব্যক্তিকে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে।
প্রশ্ন আসতে পারে, একজন আল্লাহর ওলির নামে রাস্তায় ‘চত্ত্বর’ ঘোষণা দিলেই কি তাঁর মূল্যায়ন হয়ে যায়? উদ্দেশ্য কিন্তু সেটা নয়; বরং বর্তমান সময়ের অবস্থা অবলোকন করে একটি রাস্তায় যদি কোন বুযুর্গ ব্যক্তির নাম থাকে, তবে মানুষের মধ্যে অন্য চেতনা কাজ করবে। আর তা হবে দুনিয়ায় বসবাস করে আখিরাতের চিন্তা করা।
তাই আসুন! সকল ধরণের বিতর্ক এড়িয়ে একবাক্যে শ্লোগান তুলি, দিরাই-মদনপুর পয়েন্টকে ‘শায়খে গাজিনগরী রহ. চত্ত্বর’ অনতিবিলম্বে ঘোষণা দেয়া হোক।
লেখক ঃ প্রাক্তন ছাত্র-দারুল উলূম দরগাহপুর
১৯-০২-২০১৯ খ্রিস্টাব্দ

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com