সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৬ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম :
সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজার সৈকতে সমুদ্রস্নান খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। একদিকে উত্তাল ঢেউ অপরদিকে প্রবল ঘুর্ণিস্রোত এর ফলে কক্সবাজার সৈকতে অস্যংখ্য গুপ্ত খাল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সাগরে গোসল করতে নামলেই ঘটে যাচ্ছে বিপদ। গত কয়েকদিনে সৈকতে গুপ্ত খালে পড়ে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। এদের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের স্থানীয় দুই রাখাইন তরুণ। ১৭ জুলাই শুক্রবার সৈকতে বর্ষা উৎসব পালন করতে গিয়ে সৈকতে পানিতে গোসল করতে নামলে তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরো তিন যুবক নিখোঁজ থাকলেও পরে তাদের মধ্যে দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হচ্ছে, ইমন চৌধুরী (২৪) ও মনসেন (২৩) রোববার (১৯ জুলাই) বেলা তিনটার দিকে কঙবাজারের পেঁচারদ্বীপ এলাকার মারমেড ইকো রিসোর্ট-সংলগ্ন সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে নাট্যকার ফারুক হোসেন নিখোঁজ রয়েছেন।তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছিল বলে জানান পুলিশের উখিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন। ফারুকের বন্ধু কবি নির্মলেন্দু গুণের মেয়ে মৃত্তিকা গুণ সাংবাদিকদের জানান, ‘সমুদ্র সৈকতে আমরা অনেকেই গোসল করতে নেমেছিলাম। এর মধ্যে ফারুক হঠাৎ হারিয়ে যায়। রোববার দুপুরে উখিয়ার ইনানী সমুদ্র সৈকতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে মোহাম্মদ রুবেল (১৬) নামে এক কিশোর গুপ্ত খালে পড়ে মারা গেছে। এসময় স্রাতের টানে ভেসে যাওয়ার সময় ৩ জনকে উদ্ধার করা হয়। কিছুক্ষণ পর রুবেলের মৃতদেহ ভেসে উঠলে লাশ কূলে নিয়ে আসা হয়। গত কয়েক দিনে অন্তত ১৫ জন বিপদাপন্ন পর্যটককে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছে ডুবুরীরা। এসব ঘটনায় পর্যটকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। সৈকতে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রবি লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মোহাম্মদ সৈয়দ নুর জানান, এবারের বর্ষায় সাগর খুব উত্তাল রয়েছে। সেই সাথে ঝড়ো হাওয়ার সাথে সৈকতের খুব কাছাকাছি এলাকায় সাগরে ঘুর্ণিস্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণে সাগরে অসংখ্য গুপ্ত খাল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পানির নিচে এসব গুপ্ত খালের পরিচয় পাওয়া যায় না। কেবলমাত্র জীবন দিয়েই এসব গুপ্ত খালের অস্তিত্ব বুঝা সম্ভব। তিনি আরও জানান,অনেক পর্যটক সৈকতে পানি দেখলেই এতই উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়েন যে তাদের কিছুতেই বারণ করা যায় না। সমুদ্রস্নান করতে করতেই তারা স্রোতের টানে গুপ্ত খালে পড়ে হারিয়ে যান। সময় উদ্ধারকর্মীদের নজরে আসলে সাথে সাথে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। গত কয়েকদিনে এরকম অনেককে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। উদ্ধারকারী দল ‘সী সেভ’ এর সুপারভাইজার মোহাম্মদ রাশেদ জানান, কঙবাজার সী বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির পক্ষ থেকে কঙবাজার সৈকতের লাবণি পয়েন্ট থেকে সী ইন পয়েন্ট পযর্ন্ত পর্যটকদের নিরাপদ গোসলের জন্য ‘সুইমিং জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। এই জোনে উদ্ধারকারি দলের সদস্যরা সার্বক্ষণিকভাবে দৃষ্টি রাখছে সমুদ্রস্নানরত পর্যটকদের দিকে। কিন্তু অনেক পর্যটক কোনো সতর্কবাণী শুনতে বা মানতে আগ্রহী নন।লাইফ জ্যাকেট বয়া ইত্যাদি ছাড়াই সাগরে নেমে পড়েন। ফলে তাদের বিপদ ঘটে যাচ্ছে।