রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস

amarsurma.com

আমার সুরমা ডটকম:

আজ ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। জীববৈচিত্র রক্ষার মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হচ্ছে এবারের পরিবেশ দিবস। বাংলাদেশে জীববৈচিত্রের অমূল্য আধার সুন্দরবন। এই সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। তাই বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন তথা সার্বিকভাবে প্রাণ, প্রকৃতি, জীববৈচিত্র ও পরিবেশ সুরক্ষার্থে সাংবিধানিক এবং আইনগত বাধ্যবাধকতা, বিশেষ করে পরিবেশ আইনসম‚হের কার্যকর প্রয়োগের আহŸান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি এই আহŸান জানায়।

এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স (ইপিআই) ২০১৮ অনুযায়ি, ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৯তম হওয়ার কারণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে পরিবেশ রক্ষায় বিদ্যমান আইনি কাঠামোর যথাযথ প্রয়োগে ঘাটতির কারণে জীববৈচিত্র যেমন লোপ পাচ্ছে, তেমনি পরিবেশ দ‚ষণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি, বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দেশি-বিদেশি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীদের প্রভাব-নির্ভর সিদ্ধান্ত, দুর্বল তদারকি, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বাংলাদেশে জীববৈচিত্র ব্যাপক ঝুঁকির কবলে পড়েছে। বন ও জলাশয় দখল বেড়েছে, প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর ক্রমাগত চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাটি, পানি ও বায়ু দ‚ষিত হচ্ছে।

টিআইবি বলে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী ১৯৮৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে মোট ৪ লাখ ১৬ হাজার ২৫৬ একর বনভ‚মি ধ্বংস করা হয়েছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৫৮ হাজার ০৩১ হেক্টর বনভ‚মি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ২ লাখ ৬৮ হাজার ২৫৬ একর বনভ‚মি জবরদখলের শিকার হয়েছে। ক্রমবর্ধমান এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে বনভ‚মি ধ্বংসের কারণে ইতিমধ্যে বন্যপ্রাণীর ৩৯টি প্রজাতি বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ আরও প্রায় ৩০টি প্রজাতির অস্তিত্ব মারাত্মক সংকটে রয়েছে। যা বনকেন্দ্রিক জীবনচক্র ও বাস্তুসংস্থানের জন্য অশনিসংকেত।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরামর্শ ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের সন্নিকটে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে জীববৈচিত্র সংরক্ষণে অন্যতম নিয়ামক এ প্রাকৃতিক রক্ষাকবচকে স্থায়ীভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে। অথচ সুন্দরবন যেমন সমৃদ্ধ জীবজগতকে ধারণ করে প্রাণ ও প্রকৃতির রসদ যোগাচ্ছে তেমনি সা¤প্রতিককালে ঘ‚র্ণিঝড় রোয়ানু, ফণীসহ সর্বশেষ আম্পানের তাÐব হতে উপক‚লের অজ¯্র মানুষের জীবন ও জীবিকাকে সুরক্ষা প্রদান করেছে।

আমাদের একটাই সুন্দরবন, এই সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে, উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র, জলাভ‚মি, বন ও বন্য প্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধানের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকলেও পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকাÐ বিশেষ করে সুন্দরবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলার কারণে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। সুন্দরবনসহ অন্যান্য পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত ও নির্মাণাধীনসহ সকল শিল্প ও কারখানা বন্ধ করে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকাকে সুরক্ষা প্রদানকারী বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন এবং জীববৈচিত্র সংরক্ষণে পরিবেশ আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com