মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনভিপ্রেত ও রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা রুচিহীন ও কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছুই নয়। সংসদ নেতা তার মনগড়া কল্পকাহিনীর মধ্য দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী এবং জনগণের আস্থাভাজন প্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন। এই ধরনের বক্তব্য সংসদ নেতার কাছ থেকে জাতি আশা করে না। এটা সমস্ত জাতিকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। এই ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংসদ নেতার এই ধরনের মন্তব্য খারাপ নজির স্থাপন করেছে। গতকাল রোববার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংসদে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সংসদে দেশনেত্রী বিদেশে চিকিতসা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর ঔদ্বত্যপূর্ণ শালীনতা বিবর্জিত বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়। সভা মনে করে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে সাংবিধানিক এবং প্রচলিত আইনের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের আপোষহীন সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তার পাপ্য জামিন পর্যন্ত তাকে দেয়া হয়নি। অথচ একই ধরনের মামলায় অন্যান্য প্রায় সকল অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দেশনেত্রীর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বাসভবনে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা প্রশাসনিক নির্দেশ। আইনের কোথাও একথা বলা হয়নি যে, সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারবেন না।
যেখানে খুনের মামলায়, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামী অথবা আজীবন মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মুক্তি নিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারে সেখানে এদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রেরর জন্য যিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন, জনগণের ভোটে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত তিন বার প্রধানমন্ত্রী ও দুইবার বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন তাকে মানবিক কারনে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া যাবে না-এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের যে নির্দেশ এবং যে আইনের বলে তারা নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশে আবার তাকে নতুন নির্দেশে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকার পারেন। আসলে তারা (সরকার) নিজেদের ক্ষমতা নিজেরাই খর্ব করছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্যে যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটা বৈরী মনোভাব প্রদর্শন করা এবং দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলকভাবে এই ব্যবস্থাটা তারা করেছেন।
স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে যে, সরকার নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও আজীবন সংগ্রামী বাংলাদেশের জনগনে প্রিয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিতসা কেন্দ্রে সকল ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহন করবেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য এই অযোগ্য সরকারের অযোগ্যতা, দুর্নীতি এবং উদাসীনতা দায়ী। প্রায় ১৫ মাস সময় নিয়েও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।
মির্জা ফখরুল বলেন, ক্রমাগত বর্ষণের ফলে এবং ভারতের উজানে সকল বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে প্রায় ১০টি জেলাঢ আকস্মিক ভাবে বন্যা পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অপরিকল্পিত ও দুর্বল নির্মাণ কাজের কারণে সড়ক ও বাঁধগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাপক ফসলহানী হওয়ায় কৃষকের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় অবিলম্বে সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং বীজতলা ধবংস হয়ে যাওয়ায় নতুন বীজ সরবারহের দাবি জানাচ্ছি। দলের নেতা-কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপদ্রুত এলাকায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহবানও জানাচ্ছি।