বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

দিরাইয়ে তলিয়ে গেল সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমি

amarsurma.com

মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
‘সম্মানিত গ্রামবাসি, বৈশাখির বাঁধ ভেঙ্গে চাপতির হাওরে পানি ঢুকে গেছে; তাই যার যার উরা-কুদাল নিয়ে কলাগাছিয়া বাঁধে মাটি কাটতে চলে আসুন’-বুধবার রাত সাড়ে ১২টায় এমন মাইকিং শুনে সবাই ঘুম থেকে উঠে দৌঁড়ায় বাঁধের দিকে। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের সাকিতপুর, মাটিয়াপুর, শ্রীনারায়ণপুর ও করিমপুর গ্রামের মসজিদের মাইকে একযোগে আহ্বান জানানো হয় যে, চাপতির হাওরের বৈশাখীর বাঁধ ভেঙ্গে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। আতঙ্কিত লোকজন তাই পার্শ্ববর্তী কলাগাছিয়া বাঁধে মাটি ফেলতে দ্রুত ছুটে যান।
দিরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বৈশাখীর বাঁধ ভেঙ্গে চাপতির হাওরে পানি প্রবেশ করায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর বোরো ধান তলিয়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি অর্থের পরিমাণ নিরুপণ করা যায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দিরাই উপজেলাধীন চাপতির হাওরের ১৬নং পিআইসির উপ-প্রকল্পের ০.৫৪০ কিলোমিটার বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধকরণ ও মেরামতের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে ২০ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা ১৮ পয়সা।
উপজেলার সর্বোচ্চ পর্যায়ের বরাদ্ধে অন্যতম এ বাঁধে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করেন হাওরপাড়ের কৃষক। তাদের দাবি, বাঁধে মাটি কাটার সাথে সাথে ভালোভাবে দুর্মুজ করা হলে এ বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করতো না। পিআইসি কমিটির সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী জানান, বাঁধের নিচ দিয়ে গর্ত হয়ে হঠাৎ পানি প্রবেশ করায় আটকানো যায় নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুরু থেকেই ভালো করে দুর্মুজ করেছি, যার প্রমাণ আমি ভিডিও করেও রেখেছি। কিন্তু তারপরও কেন নিচ দিয়ে গর্ত হয়ে পানি প্রবেশ করলো, সে প্রশ্নের তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
হাওরপাড়ের সাধারণ কৃষকরা জানান, গত কয়েক বছর হাওর পানিতে না ডুবায় এ বছর সংশ্লিষ্ট বাঁধের পিআইসিরা তাদের মনগড়া মতো কাজ করেছেন। আর সরকারের দেয়া টাকার বিপুল পরিমাণ আত্মসাৎ করতেই তারা নিম্নমানের কাজ করেছেন। কিন্তু তাদের ধারণাকে অতীত করে বাঁধ ভেঙ্গে হাওরে পানি প্রবেশ করায় সাধারণ কৃষকদের জীনব-জীবিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। কৃষকদের দাবি, পুরো পরিবার এক ফসলী বোরোর উপরই নির্ভরশীল। পরিবারের জীবন-জীবিকার একমাত্র সম্বল ধান হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিরাই অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শাখা কর্মকর্তা (এসও) এ.টি.এম. মোনায়েম হোসেন জানান, কোন ধরণের পূর্বাভাস ছাড়াই আকস্মিক বাঁধের ভেতরে গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এটি ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, এর পূর্বপাশে গভীর একটি কুরুঙ্গ (গর্ত) রয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত আর কোন বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ নেই বলেও তিনি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com