সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙে আবারও প্লাবিত হয়েছে। এতে এ হাওরের প্রায় এক হাজার ৫০ হেক্টর বোরো জমি তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, উপজেলার জগদল ইউনিয়নের সাতবিলা রেগুলেটর সংলগ্ন হুরামন্দিরা হাওরের ৪২নং পিআইসির বাঁধ ভেঙে রোববার দিবাগত রাত ১০টার দিকে পানি প্রবেশ করে হাওর প্লাবিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হুরামন্দিরা হাওরের ১.৩৪৭ কিলোমিটার অংশের বাঁধ ভাঙা বন্ধ করণ ও মেরামতের জন্য সরকার ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ২১৭ টাকা ৭৭ পয়সা বরাদ্দ দিয়েছে। উপজেলার সীমান্ত দিয়ে বহমান কামারখালী নদীর পাড়ের ওই হাওর রক্ষা বাঁধটি ভেঙে হাওরে পানি ঢোকার খবর পেয়ে এলাকাবাসী সর্বাত্মক চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করা যায়নি।
কৃষক আনিছুর রহমান লিটন বলেন, হুরামন্দিরায় আমার ২০ একর জমি ছিল, এরমধ্যে ২ একরের মতো কাটা হয়েছে, বাকি সবটুকু তলিয়ে গেছে। এর আগে প্রথম দফায় দলের পানিতে উপজেলার চাপতির হাওরের বাঁধ ভেঙে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে যায়।
দিরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দিরাইয়ের হাওরে প্রায় ১১০টি হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। এ পর্যন্ত হাওরের ২৭ শতাংশ ধান কর্তন করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ জানান, হুরামন্দিরায় প্রায় এক হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছিল। তবে স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, হাওরটিতে অন্তত আড়াই হাজার হেক্টর বোরো জমি রয়েছে। যার অন্তত ৭০ শতাংশ কাটা হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দিরাই অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী শাখা কর্মকর্তা (এসও) এ.টি.এম. মোনায়েম হোসেন জানান, গত রাতে দিরাইয়ের আরও একটি হাওর রক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে দিরাইয়ের নদীগুলোতে বিপদ সীমার উপর ৫.০৭ মিটারে অবস্থান করছে। তবে নদীতে এখনও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে রোববার রাত দেড়টায় উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের সাকিতপুর হাওরের বাঁধ রক্ষায় আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মসজিদ থেকে মাইকিং করে মাটিয়াপুর বাঁধে উরা-কুদাল নিয়ে যাওয়ার আহ্বানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন ঘুম থেকে উঠে হাওরের ধান রক্ষার জন্য বাঁধে গিয়ে মাটি কেটে আসেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাঁধটি ভালো রয়েছে।