মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
এমএম ইলিয়াছ আলী, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ৫টি হাওরই বৃষ্টির পানি ও বাঁধ ভেঙ্গে ফসল তলিয়ে গেছে। শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দেখার হাওর, কাই হাওর, জামকলা হাওর, কাচিভাঙ্গা হাওরসহ সাংহাইর হাওরও পানিতে তলিয়ে গেল। কৃষকদের আর্তনাদ-আমরা এখন কার কাছে যাব? এ বছর উপজেলার ১৩ হাজার হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এই জমির ধান পাওয়া গেলে বাজার মূল্য হত প্রায় ৯০ কোটি। সব হারিয়ে কৃষকরা এখন পাগল হওয়ার মত অবস্থা। তারা বলছেন কে আমাদেরকে সাহায্য করবে। ঠিকাদারতো বাঁধের টাকা মেরে খেয়ে এখন বিল্ডিংয়ে ঘুমাচ্ছে। আমাদের কেউ দেখার নাই। কার কাছে যাব আমরা। ধান হারিয়ে কৃষকরা হতবাক হয়ে পড়েছেন। দেখার হাওরে ধান চাষ করা কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, আমি এ বছর ২০ কেদার জমিতে ধান চাষ করেছি। কিন্তু পানি এসে আমার সব ধান নিয়ে গেছে। ধান যখন চারা বের হবে তখনই বাঁধ ভেঙ্গে পানি আসে। এ বছর একটি ধানও পাবনা। চাল কিনে খেতে হবে। আগামি এক বছর কিভাবে যে সংসার চালাব তা নিয়ে দুশচিন্তার মধ্যে আছি। সব কৃষককেরই তো এক ধরণের অবস্থা। সাংহাই হাওরে জমি চাষ করা বর্গাচাষী সঞ্জব আলী, আমিরুল ইসলামসহ অনেক কৃষকই বলেন, ধান যাওয়ার কথা কি আর বলব। নিজের চোখেই তো সব দেখতে পাচ্ছ, আমার সব শেষ। আমরা অন্যের জমি চাষ করি। এ বছর অনেক আশা নিয়ে মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বীজ ও সার ক্রয় করে জমি করেছি। কে জানে যে এই চৈত্র মাসে বৃষ্টি হবে আর বাঁধ ভেঙ্গে আমাদের এতো বড় সর্বনাশ হবে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে একটি কথা বলব, সরকার যেন আমাদরেকে সাহায্য করে, না হলে আমরা কৃষকরা না খেয়ে মারা যাব এবং যারা বাঁধের কাজে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।
এদিকে পিআইসি ও ঠিকাদারদের শাস্তি ও ক্ষতি পূরণের দাবিতে কৃষক নেতারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা যায়। এ কারণে গত সোমবার (৩ এপ্রিল) ও ৫ এপ্রিল) সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাধারণ কৃষকরা। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আর যেগুলো জমিতে বৃষ্টির পানির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, সেই জমির ধান গাছের গোড়ায় পচন ধরে সেগুলোও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি ও বাঁধ ভাঙ্গার কারণে কৃষক এ বছর ধান পাবেনা বললেই চলে।