সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : আইনশৃঙ্খলার অবনতিশীল পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে অভিযোগ করে তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে আইনও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। গত কয়েকদিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন নিহত হওয়ার পর বুধবার এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগের কথা জানান মানবাধিকার সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল। গত এক সপ্তাগে র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত তিনজন নিহত হন এবং এই তিনজনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী। এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বুধবারই বলেছেন, “কয়েকটা বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। সে বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন মারা গেছে। আমরা কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেব না।”
আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, “সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কথায় এবং আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কাজে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। “অপরাধী দলের হলেও কোনো ছাড় না দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু সে কঠোরতা যদি অপরাধীদের আটকের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শাস্তি প্রদান না করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়, তাহলে তা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখবে না।” গত সোমবার রাতে মাগুরায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন গর্ভের শিশুকে গুলির মামলার আসামি যুবলীগ সমর্থক আজিবর শেখ।
মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন জাতীয় শোক দিবসে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার মামলার আসামি জাকির হোসেন। তার আগে সোমবার রাতে ঢাকায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার আসামি হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়া। হাজারীবাগের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, বন্দুকযুদ্ধের নামে আরজুকে হত্যা করেছে র্যাব। র্যাব ও পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনাগুলোকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দাবি করে তার বিরুদ্ধে বরাবরই সরব দেশি ও বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের বিবৃতিতে বলা হয়, “বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের পদক্ষেপ সন্ত্রাসীদের মদদদানকারী ক্ষমতাবানদের রক্ষার প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হয়। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে সেই ব্যবস্থা আইনানুগভাবে করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাগুলোর তদন্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়ী সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়ে আসছে।বিজ্ঞপ্তি