শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৬ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক (সুনামগঞ্জ): রক্ষক যখন ভক্ষকে পরিণত হয়েছে জামালগঞ্জের ভিজিএফ কার্ড বিতরণ নিয়ে। জামালগঞ্জে ভিজিএফ কার্ড নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জামালগঞ্জ উপজেলার নবগঠিত উত্তর ইউনিয়নে ভিজিএফের ১৫টি কার্ড নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন তদারকি কমিটির সদস্য লম্বাবাক গ্রামের কৃষক সবর আলী তালুকদার। জানা যায়, নবগঠিত জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নে ভিজিএফের প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ৯৪৭টি কার্ড বরাদ্দ হয়েছিলো। ভিজিএফের কার্ডগুলো নবগঠিত উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সদস্যরাসহ বিগত পরিষদের সদস্য সদস্যাদের সমন্বয়ে বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণের পর থেকেই একটি পক্ষ ভিজিএফ কার্ড বণ্ঠন নিয়ে অভিযোগ উঠলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্তের মাধ্যমে ১৫টি কার্ড বিতরণ অনিয়ম পান। পরবর্তীতে ১৫টি কার্ড বণ্ঠনের দায়িত্ব নেন তদারকি কমিটির সদস্য ইউসুফ আল আজাদ, শফিকুল ইসলাম কলমদর, সবর আলী, আব্দুল বারিকসহ কয়েকজন। কিন্তু তদারকি কমিটির দুজন সদস্য বাকিদের না জানিয়ে পূর্ব লম্বাবাক গ্রামের আব্দুল মালেকের এক ছেলে, দুই ছেলের পুত্র বধু, তার আপন ভাই, চাচাতো ভাইসহ একই পরিবারের ৫ জন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই, ভাতিজা, চাচীসহ নিকটাত্মীয়দের নামে ভিজিএফ কার্ড বণ্ঠন করেছেন বলে জানিয়েছেন তদারকি কমিটির সদস্য সবর আলী। আর এই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় হাট-বাজারসহ হাওরপাড়ের গ্রামগুলির মধ্যে আলোচনার ঝড় বইছে সকলেরই মুখে মুখে এই কথা রক্ষক যখন ভক্ষক।
তদারকি কমিটির সদস্য লম্বাবেক সবর আলী তালুকদার বলেন, আমরা ইউএনও সাবের কাছে অভিযোগ জানালো একই পরিবারের দেওয়া ১৫ জনের কার্ড বাতিল করে আমাদেরকে স্ষ্ঠুুভাবে দিতে বলেন, কিন্তু সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও কলমদর মিয়া, লম্বাবেক মালেক মিয়ার ছেলে দুই ছেলের বউ আর তার আপন ভাইসহ চাচাতো ভাইকে কার্ড দেয় বাকিগুলো সাবেক চেয়ারম্যান উনার নিজেদের মধ্যে বণ্ঠন করেন কাউকে না জানিয়ে।
এ ব্যাপারে তদারকি কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম কলমদর জানান, আমি একা দেয় নি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইউসুফ আল আজাদও ছিলো, আমি সঠিকভাবে দেওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কি করে যেন এক পরিবারে ৫ জন হলো তা আমার জানা নেই।
জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রজব আলী বলেন, আমরা নতুন অবস্থায় এসে ১৯শত কার্ড বিতরণ করেছি, এরমধ্যে ১৫টি কার্ডে সমস্যা ছিলো, কিন্তু সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইউসুফ আল আজাদসহ কলমদর মিয়াকে ১৫টি কার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো, তারমধ্যে ১৫টিতেই অনিয়ম করেছেন, এক পরিবারে ৫টি দিয়েছেন।
জামালগঞ্জ উপজেলা একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সমন্বয়কারী ও তদারকী কর্মকর্তা সারোয়ার জাহান বলেন, আমি এই বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি, যারা তালিকা দিয়েছে তাদেরকেও বলেছি সংশোধন করতে, অন্যথায় আমি নিজে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসূন কুমার চক্রবর্তী বলেন, জামালগঞ্জের উত্তর ইউনিয়নের ১৫টি ভিজিএফ কার্ডের বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।