শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী জেলার পর্যটন এলাকা কুয়াকাটা শেখ রাসেল সেতুসহ দেশের ৫ বিভাগে ৯টি সেতুর উদ্বোধন করেছেন। বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত সেতুগুলোর উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের কার্যালয়ে নেতৃবৃন্দ ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নির্মিত সেতুগুলোর মধ্যে ৬টি বড় ও ৩টি ছোট। বড় সেতুগুলো হচ্ছে, মাদারীপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের মাদারীপুর আচমত আলী খান সেতু, সিলেটের গোলাপগঞ্জ-বিয়ানিবাজার সড়কে কুশিয়ারা নদীর ওপর চান্দেরপুর সেতু, পটুয়াখালীর পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে শেখ রাসেল সেতু, কক্সবাজারে চকোরিয়া-বদরখালী-মহেশখালী সড়কে বেতাখালী সেতু, সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর ওপর আবদুজ জহুর সেতু এবং গাইবান্ধার গাইবান্দা-নকাইহাট-গোবিন্দগঞ্জ সড়কে করতোয়া নদীর ওপর বরদহ সেতু ।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করতে এসব জেলার বড় বড় সড়কে সেতুগুলো নির্মিত হয়েছে। ইস্টার্ন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় মোট ১৮টি বড় সেতু এবং ওয়েস্টার্ন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় ৬১টি সেতু নির্মিত হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই গুরত্বপূর্ণ। এ জন্য আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার জনগণের মৌলিক প্রয়োজন নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অনুষ্ঠানে সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বক্তৃতা করেন। এ সময় সিলেট থেকে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, মাদারীপুর থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সুনামগঞ্জ থেকে অর্থ-প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট শাজাহান মিয়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সড়ক যোগাযোগ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিকী। এতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া ও চিফ হুইপ এ এস এম ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন।
যমুনা নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণে তাঁর সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, এই টানেল দিয়ে ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে যাতায়াতের আরেকটি রুট নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে। যা ব্যবসা ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি ও স্থানীয় পণ্যের বাজার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে।
প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুর ও পটুয়াখালী জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপকালে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চল দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে, যদিও এই এলাকার মানুষ সবসময় আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে।
কুয়াকাটায় শেখ রাসেল সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুয়াকাটা হচ্ছে বাংলাদেশে খুবই আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
সিলেটে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক যোগাযোগ আরো সহজতর ও স্বস্তিদায়ক করতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চার-লেনে রূপান্তর করা হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর সরকার সবসময় সিলেটের উন্নয়নে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ জেলা গ্যাস ও পর্যটনসহ বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ।
সুনামগঞ্জের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, উন্নত যোগাযোগ, উন্নত জীবনযাত্রা ও হাওর এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এ জেলায় আরো ১৩টি সেতু নির্মিত হচ্ছে।
তিনি গাইবান্ধার জনগণকে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উত্তরাঞ্চলের মানুষ আর কখনো মঙ্গার দেখা পাবে না।
প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার অঞ্চলের ব্যাপক সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আহরণ করার মতো বাংলাদেশে বিপুল সামুদ্রিক সম্পদ রয়েছে।