শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : নানা ঘটনায় বেশিরভাগ সময়ে আলোচনায় ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মো. আফজাল। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে নারীর সঙ্গে হাত মিলানোয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। সম্প্রতি একজন কর্মকর্তার বদলির আদেশে ‘দাড়ি’ নিয়ে কটূক্তি করার ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। দেশের আলেম সমাজ ও ইসলামী দলগুলো তার পদত্যাগের দাবি তোলেন।
আর এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান কর্মকর্তারা কিছু তথ্য পেয়েছে জানালেও যাচাই-বাছাইয়ের আগে তা এখনি প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। দুদকের উপপরিচালক জুলফিকার আলী আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে একটি অভিযোগ আসার পর তারা অনুসন্ধান শুরু করেছেন।
অভিযোগ কী-জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিষয়টি যেহেতু অনুসন্ধানাধীন, তাই এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। আমাদের হাতে যেসব তথ্য আছে তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে, প্রয়োজনে আরও তথ্য তলব করা হবে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দুদক কর্মকর্তা বলেন, সামীম আফজালের বিরুদ্ধে মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পের ফিল্ড অফিসার পদে অতিরিক্ত নিয়োগ, প্রকল্পের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের অর্থ আত্মসাৎ এবং ভুয়া বিলের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়েছেন তারা।
মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পে ১২ জন ফিল্ড অফিসার, ২৩ জন ফিল্ড সুপারভাইজার এবং ৩ জন ট্রেইনার ২০১১ সাল থেকে নিয়োগপত্র ছাড়াই কাজ করছেন। মূল বেতন ও ভাতাসহ মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা প্রকল্পের একজন ফিল্ড অফিসারের মাসিক বেতন ২৫ হাজার টাকা এবং একজন ফিল্ড কর্মকর্তা ও ট্রেইনারের বেতন ২০ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ভাতা ও ভুয়া কেন্দ্র দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের তথ্যও এসেছে দুদকে। ওই কর্মকর্তা বলেন, “যে তথ্যগুলো আছে, তা প্রাথমিক পর্যায়ের। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করি, মন্ত্রণালয় থেকে শিগগিরই জবাব পাওয়া যাবে।”
এ বিষয়ে সামীম মো. আফজালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ আমি কোনো মন্তব্য করব না। আমার পিআর-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।”
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিল্লাল বিন কাসেমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, দুদক থেকে চিঠি এসেছে- এরকম কোনো তথ্যও আমার জানা নেই।”
শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৯২ সাল থেকে সারা দেশে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার ৪৩ হাজার মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন এবং ১২ লাখ শিশু এই প্রকল্পের অধীনে আছেন।