বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
সাইফ উল্লাহ (সুনামগঞ্জ):
বর্তমান করোনা ভাইরাসের সংকট মুহূর্তে সরকার অসহায় দিনমজুর, অসচ্ছল পরিবারে ত্রান সহায়তার হাত বাড়ালেও দেশের বিভিন্ন এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বারাগন ত্রান সহায়তা ও নামের তালিকায় একের পর এক অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করছে। অসহায় পরিবারের পরিবর্তে ত্রানে নামের তালিকায় মেম্বারের নিজে, মা, শাশুড়ী, শ্যালক, মেয়ের জামাইয়ের নাম যুক্ত করেছন। এর প্রতিবাদ করায় সাংবাদিককে দেখে নেবার হুমকি দিয়েছে মেম্বার।
আর এমনি ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ৫নং বাদাঘাট ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড সরকারী ত্রান সহায়তার অগ্রাধিকার তালিকায়। এই তালিকা প্রকাশিত হলে এলাকায় তুলপাড় শুরু হয়েছে।
এই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড জাংগাল হাটি, লামাশ্রম, রাজারগাও, ডালারপাড়, লাউড়েরগড় গ্রাম সমুহ নিয়ে গঠিত। আর ওয়ার্ড মেম্বার আঃ হক তার পিতার নাম সাদত আলী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কায্যালয়ের তালিকা সূত্রে জানা যায়, সরকারি ত্রান সহায়তা জন্য আব্দুল হকের দস্তখতও শিলমোহর কৃত নামের তালিকায় ৪৮টি নাম রয়েছে, এরমধ্যে মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগমের জন্য বরাদ্দ ১০টি নাম। অবশিষ্ট ২৮টি নামের মধ্যে ১০ জন তার নিজ পরিবারের।
তালিকায় উল্লেখিত ক্রমিক নং(৪) জরিনা খাতুন স্বামী মৃত সাদত আলী (তিনি মেম্বারের মা)ক্রমিক নং (৩৫) আঃ হক পিতা সাদত আলী(মেম্বারের নিজের নাম মোবাইল নম্বর সহজ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
একই পরিবারের ৩ জনের নাম ক্রমিক ২৯, তার শ্বাশুড়ি ক্রমিক নং-৩০ শ্যালিকা, ক্রমিক নং-২৪ শ্যালক ও ৩৭ নম্বর ক্রমিকে ওয়ার্ড নং-৯ এর বাসিন্দা অপর এক শ্যালকের স্ত্রী নাম ও ক্রমিক নং-১৬ মেম্বারের মেয়ের জামাই ৯নং ওয়ার্ড বাসিন্দা। ক্রমিক নং-৩১ আপন মামা শ্বশুর। এছাড়া কিছু নামের সাথে পিতা কিংবা স্বামীর নামের মিল নেই।
অসহায় লোকজন কর্মহীন লোকজন ক্ষোব সাথে বলেন, যেখানে অসহায় লোকজন কর্মহীন হয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে আরও সেকি না তাদের ন্যায্যতা নিয়ে ধোঁকাবাজি করছে সেই সাথে সরকারী সহায়তা আত্মসাৎ করার ফন্দি করতে নিজ পরিবারের সদস্যদের নাম তালিকায় রেখে। এর পূর্বেও ভিজিএফ, ঘরসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়ার কথা বলে টাকা অত্তস্বাধ করেছে বলেন অভিযোগ রয়েছে।
তালিকায় প্রকাশের পর সাংবাদিক আলম সাব্বির জানান, লাউড়েরগড় বাজারে শুক্রবার সন্ধায় একটি ফার্মেসীতে টেবলেট নিতে গিয়ে আঃ হক মেম্বারকে পেয়ে বলি নিজের নাম বাদ দিয়ে অসহায় লোকজনের চিন্তা করা উচিত। বর্তমান সময়ে সবাই বিপদে এক ঘরে ৩ জনের নাম না দিয়ে দেখে শুনে দিলে কি হয়। এই কথা বলার পর মেম্বার আব্দুল হক অসদাচরন করেন। তখন উপস্থিত জনতা মেম্বারের অসদাচরনের প্রতিবাদ জানায়।
এ বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ইউ এনও মহোদয়কে উক্ত মেম্বারের সম্মুখেই তার কর্মকান্ড সম্পর্কে অবহিত করি। তিনি অবাক হলেন এবং বিষয়টি ভালোভাবে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরক্ষনেই আমাকে বাড়ি যাওয়ার পথে দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার আঃ হক বলেন, আমি আমার নিজের ও মার নাম দিয়ে ভুল করেছি। ইউএনও স্যার বলেছেন নাম কেটে দিতে আমি কেটে দিয়েছি। আর বাকীদের যাচাই করেন তারা পাওয়ার যোগ্য কি না।
সাংবাদিককে হুমকির বিষয়ে বলেন, আমি কাউকে হুমকি দেইনি। ভুল বোঝা বুঝি হয়েছে। তাছাড়া আমি ইউএনও তাহিরপুর এর চাকরি করি না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যনার্জি বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।