বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
ক্যালেন্ডার থেকে আরেকটি বছর চলে গেলো; ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ। আগমন হয়েছে নতুন বছরের; স্বাগত ২০২৪। চলে যাওয়া বছরটি ছিল নানা কারণে আলোচিত। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও অনেক আলোচনায় ছিল বছর ব্যাপি। নানা প্রাপ্তি, প্রত্যাশার মধ্য দিয়েই চলে যাওয়া ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের সালটি ইতিহাসে অনন্য হিসেবেও বিবেচিত হবে।
যুদ্ধ-বিগ্রহ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন, হত্যা-খুন, গুম, আইনের সুশাসন লঙ্ঘনসহ নানা বিষয়েই বিশ্বব্যাপি তোলপাড় করার জন্ম হয়েছে ২০২৩ সালে। এসব নানা সমীকরণের মধ্যে বাংলাদেশে ঘোষিত হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। এ তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে আসছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠন-সংস্থাগুলোও।
বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না দাবি করে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ নিবন্ধিত অনেক দল আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার মধ্যেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের ওপর এসেছে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা। দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলছে জ্বালাও-পোড়াও, হামলা-মামলাসহ অনাকাক্সিক্ষত অনেক ঘটনা। এতে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে দেশ ও দেশের জান-মাল। ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ২০২৩ সাল ছিল বিভিন্ন কারণে আলোচিত। বিশেষ করে ফিলিস্তিন ও ইসরাঈল যুদ্ধ বিশ্ব বিবেককে প্রচণ্ড নাড়া দিয়েছে। এ কারণে উভয় দেশেরই বহু হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। আন্তর্জাতিকভাবে চাপে রয়েছে ইসরাঈল ও তার মিত্র শক্তি আমেরিকা। ফিলিস্তিনের ওপর যুগ যুগ ধরে চলে আসা মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে বিশ্বব্যাপি সমালোচনা মুখে পড়ে আমেরিকা ও তার মদদপুষ্ট হানাদার ইসরাঈল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় খোদ ইসরাঈলেও যুদ্ধ বন্ধের জন্য হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। তারপরও হানাদার ও রক্তখেকো যুদ্ধবাজ ইসরাঈল সরকার কারো কথাই শুনছে না। সঙ্গত কারণেই দেশটি মিত্র শক্তি হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
২০২৪ সালের শুরুতেই সকল শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ, নানা পেশার মানুষ এ সালটিতে বিশ্বব্যাপি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা, যুদ্ধ-বিগ্রহ বন্ধের পক্ষে। সুতরাং, পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রের একক পরিচালনা পরিষদ জাতিসংঘকে বিশ্বের মানুষের প্রকৃত কথা শুনতে হবে এবং কঠোর হস্তে সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ট ভূমিকা রাখতে হবে। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ও সংগঠনকে তাদের অপরাধ বন্ধে কঠোর আইনী প্রক্রিয়ায় গিয়ে জাতিসংঘকে বিশ্বে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রকৃত সংগঠন হিসেবে প্রমাণ করাই হবে ২০২৪ সালের আশা জাগানিয়া ফলাফল। বিশ্বের সকল মানুষ ও মানবতা সঠিক পথে পরিচালিত হোক-মহান আল্লাহর দরবারে এই প্রত্যাশা কামনা করছি।