ঐতিহাসিক ৫ই আগষ্ট মঙ্গলবার লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে জুলাই বিপ্লবের বছরপূর্তি উপলক্ষে আলেম-উলামা ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সহ সর্বস্তরের জনতার বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আলতাব আলী পার্কে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের উদ্যোগে জুলাইয়ের চেতনা বাস্তবায়নের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা সভা ও দেশের জন্য শাহাদাত বরণকারীদের রূহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ইউকে জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট মিডিয়া ভাষ্যকার মুফতি আবদুল মুনতাকিমের সভাপতিত্বে এবং ইউকে জমিয়তের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ তাৎক্ষণিক আবেগপূর্ণ দোয়া ও শুকরিয়া সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য পেশ করেন হেফাজতে ইসলাম ইউকের সহ-সভাপতি শায়েখ মাওলানা ইমদাদুর রহমান আল মাদানী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ-সভাপতি হাফিজ মাওলানা সৈয়দ তামিম আহমদ, বিশিষ্ট আলেম মুফতি শাহীদুর রহমান মাহমুদাবাদী, ইউকে জমিয়তের জয়েন্ট সেক্রেটারি মাওলানা আখতারুজ্জামান, ইউকে জমিয়তের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, ইউকে জমিয়তের সহ-প্রচার সম্পাদক হাফিজ মাওলানা আব্দুল হাই।
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বৃটেনের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিশেষভাবে অংশগ্রহণ করেন খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাদির সালেহ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর হাসানাত হোসাইন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পিকার কাউন্সিলার সাইফুদ্দিন খালেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ইউকের সহ-সভাপতি হাফিজ হোসাইন আহমদ বিশ্বনাথী, খেলাফত মজলিস যুক্তরাজ্য শাখার অন্যতম নেতা মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, মাওলানা আব্দুল আহাদ, লন্ডন মহানগর জমিয়তের সেক্রেটারি মুফতি সৈয়দ রিয়াজ আহমদ, ইউকে জমিয়তের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা খালেদ আহমদ এবং মাওলানা সালেহ আহমদ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মুফতি আবদুল মুনতাকিম বলেন, জুলাইয়ের লাল বিপ্লবের মূলীভূত শ্লোগান হচ্ছে দেশের সর্বস্তরে ন্যায় ইনসাফ ও বৈষম্যহীনতা প্রতিষ্ঠা। এ উদ্দেশ্য সর্বপ্রকার ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা ও ইসলামের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া সম্ভব নয়। জুলাই বিপ্লবের বছরপূর্তি উপলক্ষে সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ মহান প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে পারি, তবেই দেশের জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের আত্মা শান্তি পেতে পারে, অন্যথায় শহীদানের রক্তের সাথে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম বেঈমানি ও গাদ্দারির গোনাহে আমাদেরকে পতিত হতে হবে। মুফতি আবদুল মুনতাকিম তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, আজকের দিনে আলোচ্য অঙ্গীকার নবায়ন হোক আমাদের জন্য আগামী দিনের দৃঢ় প্রত্যয়।
সভায় বক্তাগন তাঁদের আলোচনায় বলেন, জুলাই বিপ্লবের বছরপূর্তির এ ঐতিহাসিক দিনে আমারা যেনো শাপলা চত্বরে হেফাজতের মহাসমাবেশের মজলুম শহীদ আলেম উলামার আত্মদানের কথা ভুলে না যাই, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শহীদরাও অবর্ণনীয় জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ভাষ্কর্যের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর উপর পৌত্তলিক সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদ করায় যাদেরকে শহীদ করা হয়েছে, তাঁরাও আমাদের জন্য অভুলনীয়। জুলাই বিপ্লবের শহীদানরাতো ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে নতুন স্বাধীনতার সূর্য উদিত করেছেন। এসব শহীদদের রক্তের বিচার জুলাইয়ের লাল বিপ্লবের সবচেয়ে বড় দাবি। বক্তাগণ বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যে এত সব বিভীষিকাময় হত্যাকান্ডের বিচার কার্য এখনো দৃশ্যমান নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিভীষিকাময় হত্যাকান্ড সমুহের বদলা নেয়া হবেনা, জুলাই বিপ্লব অসমাপ্তই রয়ে যাবে, ন্যায় বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জুলাই বিপ্লবকে চলমান থাকতে হবে। এটাই এ গণ অভ্যুত্থানের অপরিহার্য দাবি। সভা শেষে সভাপতি মুফতি আবদুল মুনতাকিম উপস্থিত সবাইকে নিয়ে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও পরিবার পরিজনের সবর-ধৈর্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।