শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে নিরপেক্ষতা অক্ষুন্ন ও স্বচ্ছ সমুন্নত রাখতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। এছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল ও নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। শনিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-সচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত নির্দেশনা ২৩৬টি পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। আর নির্দেশনার অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিজিবি, র্যাব ও আনসারের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তা হচ্ছে, ‘বিশেষ কোনো মহলের কোনো প্রকার প্রভাব বা হস্তক্ষেপ নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাতে ক্ষুণœ করতে না পারে তা আইন বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালার আলোকে নিশ্চিত করতে হবে।’ ‘নির্বাচনের ন্যায় একটি সংবেদনশীল, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকান্ডের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এমন কোনো কাজ করবেন না, যার দ্বারা তাদের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় জনগণের নিকট হেয় প্রতিপন্ন হতে হয় এবং তারা যে পক্ষপাতদুষ্ট নন এমন ধারণা সৃষ্টির নিশ্চয়তা বিধানকল্পে প্রতিটি কাজে আইন ও বিধির যথার্থ প্রয়োগ ও অনুসরণ করতে হবে।’
এছাড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এলাকার জনগণের যৌথসভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকলকে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে বলা হয়।
‘ভোটদানের জন্য ভোটারগণ যাতে নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, সে উদ্দেশ্যে নিশ্চয়তামূলক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ভ্রাম্যমাণ ইউনিটের নিবিড় টহলদানের ব্যবস্থা করতে হবে।’ ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যে কোনো প্রকার অশুভ কার্যকলাপ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সদা সতর্ক থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নির্দেশ প্রদান করতে হবে এবং ভোটকেন্দ্রের অবস্থান সম্পর্কে ভোটারদের অবহিত করার জন্য নির্বাচনের আগে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’
এছাড়া, নির্বাচন অনুষ্ঠান যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং উক্ত নিরপেক্ষতা যাতে জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয়,তা নিশ্চিত করতে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। এ টিমে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটদেরও অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া সহকারী রিটার্নিং অফিসার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
টিমে বেসরকারি পর্যায়ের দলনিরপেক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকেও অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। এ টিম সংশ্লিষ্ট পৌরসভা এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হচ্ছে কি-না অথবা ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি-না তা সরেজমিন পরিদর্শন করবে। আচরণ বিধিমালা ভঙ্গের কোনো বিষয় নজরে আসামাত্রই বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ছাড়া তারা নির্বাচনী বিধিনিষেধ ভঙ্গের ক্ষেত্রে মামলার ব্যবস্থা এবং উপযুক্ত ফৌরদারি আদালতেও অভিযোগ দায়ের করবে।
আর নির্বাচনী এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংস্থাসমূহের কর্মকান্ডের সমন্বয় সাধন ও সুসংহতকরণের লক্ষ্যে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন করতে হবে। এ সেলে অন্যান্য সদস্যগণ হবেন পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধি এবং সহযোগী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোনীত কর্মকর্তা। এ সেলের কাজ হবে- নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা সংরক্ষণকল্পে সকল প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সার্বিক পরি¯ি’তি সম্পর্কে গৃহীত ব্যবস্থাদি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে অবহিত করা।
এছাড়া, রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে প্রার্থীদের প্রতিনিধি বা নির্বাচনী এজেন্টের সমন্বয়ে নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে। এ টিমে সহকারী রিটার্নিং অফিসার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন মনিটরিং টিম নির্বাচন সংক্রান্ত আইন, বিধি, নির্বাচনী আচরণবিধি এবং নির্বাচনের সার্বিক বিষয়াদি যথাযথ ও সঠিকভাবে পালন হচ্ছে, কি-না তা তদারক করবে ও প্রতিপালনের প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ টিম বিশেষ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক এবং অন্যক্ষেত্রে প্রতি সাত দিন পর উল্লিখিত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবে। আগামী ৩০ডিসেম্বর ২৩৬টি পৌরসভায় একযোগে ভোট হবে। গত ২৪ নভেম্বর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তফসীল অনুযায়ী মনোয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩ ডিসেম্বর, যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর। ১৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।