বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)’র বিরুদ্ধে অমর্যাদাকর এবং তীব্র আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ জানালো ভারতের বিহার রাজ্যের মুসলিমরা। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিহারের পূর্ণিয়া জেলার বায়সিতে এক প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষোভকারীদের একাংশ বায়সি থানায় ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তাদের রোষের মুখে পড়ে থানার মধ্যে থাকা ফার্নিচার, কম্পিউটার, বিভিন্ন জিনিষপত্র এবং থানা চত্বরে থাকা যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। থানার মধ্যে উপস্থিত থাকা পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশ্যে পাথর ছোঁড়া হলে তারা পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। পরে জেলা সদর দফতর থেকে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ কুমার পাল এবং বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে হিন্দু মহাসভা নেতা কমলেশ তিওয়ারি প্রিয় নবী (সা.)’র বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তিকর মন্তব্য করে। এর প্রতিবাদে (বৃহস্পতিবার) ইসলামিক কাউন্সিল নামে এক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। এতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে। বিক্ষোভকারীরা হিন্দু মহাসভা নেতা কমলেশ তিওয়ারির ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেয়। মিছিল শেষে তারা প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেন।
এদিন দারুল উলুম মুফতি আজম মাদ্রাসা হরেরামপুর থেকে প্রতিবাদ মিছিল বেরোয়। মিছিলের অন্যতম সহযোগী ছিল খাজা নওয়াজ ওয়েলফেয়ার কমিটি। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন, ইসলামিক কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ ইসমাইল, সচিব মাসুদ রাজা এবং সাবেক বিধায়ক মুহাম্মদ রুকুনুদ্দিন।
একটি সূত্রে প্রকাশ, মিছিলটি হরেরামপুর থেকে বেরিয়ে ভায়া পশ্চিমচক হয়ে পূর্ব চকে গিয়ে শেষ হয়। কিন্তু ফেরার সময় মিছিলের মধ্যে কয়েকজন অসামাজিক লোকজন থানায় হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন।
প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজক সংস্থা অল ইন্ডিয়া ইসলামিক কাউন্সিল’র পক্ষ থেকে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ভাঙচুরে জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক পঙ্কজ কুমার পাল জানান, ‘যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। মিছিলটি শান্তিপূর্ণভাবে বের হয়ে তা শেষ হয়। এরমধ্যে থাকা কিছু অসামাজিক ব্যক্তি এসে থানায় মারাত্মকভাবে আক্রমণ করে এবং ভাঙচুর চালায়। এজন্য দোষীদের চিহ্নিত করে কড়া পদক্ষেপ করার চেষ্টা চলছে। মিছিলের আয়োজকদের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার কালিয়াচকে হিন্দু মহাসভা নেতা কমলেশ তিওয়ারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কালিয়াচক থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশগাড়ি এবং অন্যান্য যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। আগামী ১৮ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং মালদার ওই এলাকা সফর করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। এরইমধ্যে বিহারের পুর্ণিয়ায় প্রতিবাদ মিছিলকে কেন্দ্র করে সহিংসতার খবর প্রকাশ্যে এল। সূত্র: রেডিও তেহরান