শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার : ‘চেয়ারম্যানের কথা শুনে মোহভঙ্গ হলো ঠিকই, বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, আসলে এই ছোট্ট ছেলেটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো করে ভাষণ দেবে। কিন্তু অবাক করা কাণ্ড করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে প্রায় ৯ মিনিট অনর্গল বক্তব্য দিলো; তাও আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ।’ গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদে নয়ন মিয়া (১১) নামের এই ছেলেটি তার মুখস্থ করা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে ৭ই মার্চের এতিহাসিক ভাষণটি হুবহু শুনে উপস্থিত সবাই এক বাক্যে তা স্বীকার করলেন। ইউনিয়নের ধাপকাই গ্রামের দরিদ্র স্বপন মিয়া ও নাছিমা বেগমের দ্বিতীয় সন্তান নয়ন মিয়ার এই ভাষণ শুনে তাৎক্ষণিকভাবে অনেকেই সাহায্যও করেছেন সাধ্যমতো। নয়ন মিয়া জানায়, তারা ২ ভাই ও ২ বোন, কিন্তু অভাবের সংসার। নয়ন এ বছর ইউনিয়ন রাজানগর কৃষ্ণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। কোথায় শিখলে এই ভাষণ-এমন প্রশ্নের উত্তরে নয়ন জানায়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক শিক্ষক তাকে তা শিখিয়েছেন। সে দিরাই উপজেলায় ভাষণ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। আগামিতে নয়ন মিয়া জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে বলেও জানান এ প্রতিবেদকের কাছে।
তার এই ভাষণ শুনে পরিষদের চেয়ারম্যান আকিক আহমদ মধু রাজানগর উচচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে মোবাইলে তাকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার অনুরোধ করলে প্রধান শিক্ষক সাথে সাথেই তার বেতন মওকুফ করে দেয়ার আশ্বাস দেন। তাছাড়া তাকে সার্বিক সহযোগিতা করারও আশ্বাস দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এ ব্যাপারে রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকিক আহমদ মধু বলেন, ১১ বছর বয়সের এই ছোট্ট ছেলেটি যেভাবে সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি শুনালো, সত্যিই তার প্রশংসা না করে পারলাম না। কারণ, অনেক শিক্ষিক ও বিজ্ঞ ব্যক্তিরাও এভাবে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি বলতে পারবেন না। আমি তার সুন্দর জীবন কামনা করি ও তাকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিচ্ছি। এ রকম মেধাবীদেরকে সমাজে লালন করতে পারলে একদিন আমরা পৃথিবীর বুকে একটি আদর্শ জাতি হিসেবে পরিচয় হতো পারবো।