সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হলেন তেরেসা মে। লৌহমানবী খ্যাত মার্গারেট থ্যাচারের পর তিনি প্রথম নারী, যিনি ব্রিটেনে সরকার প্রধানের দায়িত্ব নিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠক করেন ছয় বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা ক্যামেরন। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ জোটের অন্যতম নেতারা আশা করছেন, তেরেসা মে’র নেতৃত্বে নতুন সরকার দ্রুতই ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। খবর বিবিসি, এএফপি ও এনডিটিভির। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্যামেরনের শেষ দিন ছিল গত মঙ্গলবার। ক্যামেরনের সভাপতিত্বে তার শেষ মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান ভাবী প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ও বিদায়ী অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেন, ছয় বছরে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের অর্জনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে মন্ত্রিসভা। দেশের প্রতি তার অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছি আমরা। মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠককে আবেগপূর্ণ ও দুঃখের বলে মন্তব্য করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী জন হোয়াইটিংডেল। এর আগে ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে এক বিবৃতিতে ক্যামেরন বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় আমরা একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছি। ক্যামেরন জানান, বুধবারই পার্লামেন্টে প্রশ্নোত্তর পর্বের পর রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করবেন তিনি। গত ২৩ জুন অনুষ্ঠিত গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় যাওয়ার পরপরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। অক্টোবরে তার বিদায় নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন নেতা নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন হওয়ায় ক্যামেরন বিদায় নিচ্ছেন আজই। ডেভিড ক্যামেরনের উত্তরসূরি হওয়ার দৌড় থেকে সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রে লিডসম সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পরই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ক্যামেরনের পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেসা মে-ই হলেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। গতকালই ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে বসেছেন দেশের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯০ সালের ২২ নভেম্বর পদত্যাগ করেছিলেন দেশের একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার। তার পর দু’দশক পেরিয়ে গেছে। আর কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী পায়নি ব্রিটেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তেরেসা মে একটি উন্নততর যুক্তরাজ্য গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তেরেসা মে ইইউতে থাকার পক্ষে প্রচারণা চালালেও অভিবাসী প্রশ্নে কঠোর ৫৯ বছর বয়সী তেরেসা। পড়াশোনা করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৯৭ সাল থেকে এমপি ও ছয় বছর ধরে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। শপথ নেওয়ার পরেই ইইউ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করবেন তেরেসা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বলছে, নতুন প্রধানমন্ত্রীর সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। ওয়েস্টমিনস্টার থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, কাজটা ততটা কঠিন হবে না। কারণ, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেল বা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়াঁ ওলাঁদের মতো ইইউ নেতার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তেরেসার। যদিও মারকেল আশা প্রকাশ করেছেন, তেরেসা মে’র নতুন সরকার দ্রুতই ইইউর সঙ্গে সম্পর্ক স্পষ্ট করে নেবে।